ঢাকা শনিবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফু-ওয়াং ফুডসের এমডি ও মেয়েদের নামে মামলা

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ০৪:৩০ পিএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত প্রতিষ্ঠান ফু-ওয়াং ফুডসের ৭০ কোটি ৮৪ লাখ ৭৭ হাজার ৪৩৮ টাকার হিসাবে গরমিলের অভিযোগ এনে সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই মেয়ের নামে আদালতে মামলা দায়ের হয়েছে।

জাপানি বিনিয়োগকারী ও ফু-ওয়াং ফুডসের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুন আদালতে এ মামলা দায়ের করেন। গত ১৬ এপ্রিল ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতে মিসকেসটি দায়ের করা হয়েছে।

মামলার এজহারে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের জানুয়ারি মাসে জাপান-বাংলাদেশ জয়েন ভেঞ্চার প্রতিষ্ঠান মিনোরি বাংলাদেশ বিএসইসির মধ্যস্থতায় একটি পারচেজ এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে ফু-ওয়াং ফুডসের ৮৪ লাখ ৪২ হাজার ৭২৬ স্পন্সর শেয়ার আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই মেয়ের কাছ থেকে কিনে নেন।

এরপর মিনোরি বাংলাদেশের পক্ষে ফু-ওয়াং ফুডসের পরিচালনা পর্ষদে তিনজন নমিনেডেট পরিচালক নিয়োগ করা হয়।

শেয়ার কেনার চুক্তির ৪-এর ২ ধারা অনুযায়ী, সাবেক এই তিন পরিচালক সাত কর্মদিবসের মধ্যে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের কাছে প্রতিষ্ঠানটির দায়দেনার হিসাব ও তা পরিশোধ করার কথা বলা হয়েছে। আর ৪-এর ৩ ধারা অনুযায়ী, এই দায়দেনা কোনোভাবেই মিনোরি বাংলাদেশের ওপর বর্তাবে না। অথচ দুই বছর পেরিয়ে গেলেও তৎকালীন ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও তার দুই মেয়ে চুক্তির শর্ত পরিপালন করেননি।

এ বিষয়ে ব্যাখ্যা জানতে ২০২৫ সালের ৯ জানুয়ারি একটি লিগ্যাল নোটিশও পাঠানো হয় আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই মেয়ের নামে। সেই নোটিশের কোনো আইনি জবাব দেননি তারা। এরপর ১৬ এপ্রিল আদালতে মিসকেস দায়ের করা হয়। কেস নং ১৬৩/২০২৫।

মামলায় এজাহারে মিনোরির পক্ষে বলা হয়, শেয়ার বিক্রির চুক্তি অনুযায়ী আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই মেয়ে ফু-ওয়াং ফুডস কোম্পানির ৭০ কোটি টাকার ভ্যাট ও ট্যাক্সের হিসাব গোপন করেছেন এবং শর্ত অনুযায়ী সব পক্ষকে এর হিসাব দেননি। 

আদালতে দায়ের করা মামলার বিষয়ে মিনোরি বাংলাদেশের আইনজীবী মোহাম্মদ নাসির উদ্দিন জানান, আরিফ আহমেদ চৌধুরীর আমলে তিনি ফু-ওয়াং ফুডসের প্রায় ৭০ কোটি টাকার ভ্যাট-ট্যাক্সের তথ্য গোপন করেছেন।

বিভিন্ন মাধ্যমে কী পরিমাণ অর্থ খরচ করেছেন শেয়ার বিক্রির পর, তারও যথাযথ হিসাব সব পক্ষকে বুঝিয়ে দেননি। তাই ভ্যাট-ট্যাক্স ফাঁকিসহ বিশাল অঙ্কের টাকার হিসাব সঠিকভাবে প্রদানের জন্য এই মিসকেস দায়ের করা হয়েছে।

তারা যদি আদালতের নির্দেশ অমান্য করে সঠিক হিসাব না দেন, তাহলে পরবর্তীতে ফৌজদারি মামলাসহ অন্যান্য আইননুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

জানা গেছে, আরিফ আহমেদ চৌধুরী ও তার দুই মেয়ে বর্তমানে কানাডায় অবস্থান করছেন। আরিফ আহমেদ চৌধুরী ঢাকা-১৪ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ছিলেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গতকাল শুক্রবার ফু-ওয়াং ফুডসের বর্তমান ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিয়া মামুন বলেন, ‘শেয়ার কেনার চুক্তি অনুযায়ী আরিফ আহমেদ চৌধুরী কোম্পানির ৭০ কোটি টাকার হিসাব আমাদের কাছে গোপন করেছেন।’

এই বিপুল পরিমাণ অর্থ কীভাবে কোথায় খরচ করেছেন, তা বুঝিয়ে দেওয়ার জন্য তাকে লিগ্যাল নোটিশ পাঠানো হলেও কোনো জবাব দেননি। তাই বাধ্য হয়ে আদালতের আশ্রয় নিয়েছি। বিপুল পরিমাণ অর্থ গরমিল থাকার কারণে বর্তমানে কোম্পানির উৎপাদন চালাতেও ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।’