সোমবার, ২১ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মো. মনিরুজ্জামান, মালয়েশিয়া

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ১২:১২ এএম

 ইএসকেএলের খপ্পর থেকে বাঁচলেন ২০০ বাংলাদেশি কর্মী

মো. মনিরুজ্জামান, মালয়েশিয়া

প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৫, ১২:১২ এএম

 ইএসকেএলের খপ্পর থেকে বাঁচলেন ২০০ বাংলাদেশি কর্মী

ছবি: সংগৃহীত

মালয়েশিয়ায় গলার কাঁটা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ইএসকেএলের জিম্মিদশা থেকে সাধারণ প্রবাসীদের মুক্তি দিতে দূতাবাসের মহতি উদ্যোগে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন দেশটিতে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিরা। কুয়ালালামপুর শহর থেকে প্রায় ২৫০ কিলোমিটার দূরে পেরাক রাজ্যে দুই শতাধিক প্রবাসীকে পাসপোর্ট-সেবা দিয়েছে দূতাবাস। 

মালয়েশিয়ার পেরাকে অবস্থিত  YTY কোম্পানিতে বাংলাদেশি কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন মালয়েশিয়ায় নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার। গত শনিবার হাইকমিশনার মো. শামীম আহসান  YTY আচেহ নামে একটি বিখ্যাত গ্লাভস কোম্পানির সিতিয়াওয়ান, পেরাক শাখা পরিদর্শন করে দুই শতাধিক প্রবাসীকে পাসপোর্ট সেবা দেন। এর আগে  YTY  গ্রুপ স্ট্র্যাটেজিক পার্টনারশিপের ভাইস প্রেসিডেন্ট সৈয়দ আলী আল জেফরি এবং ঊর্ধ্বতন ব্যবস্থাপনার অন্য সদস্যরা এ সময় তাকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। পরিদর্শনকালে হাইকমিশনার কোম্পানির ব্যবস্থাপনা এবং বাংলাদেশি কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। হাইকমিশনার হোস্টেল এবং বাংলাদেশি কর্মীদের দ্বারা প্রদত্ত অন্যান্য সাধারণ সুযোগ-সুবিধাও পরিদর্শন করেছেন। বিদেশি কর্মীদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যসহ তাদের কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য কোম্পানি কর্তৃক গৃহীত ব্যবস্থা দেখে অত্যন্ত মুগ্ধ হয়েছেন।

সরাসরি দূতাবাসের পাসপোর্ট-সেবা পেয়ে বরিশালের মো. আহমেদ বলেন, ‘দূতাবাসের স্যারে মোগো যে সেবা দেলে, মোরা এমন সেবা পাইয়া একছের খুশি অইছি।’ মাগুরার হাওলাদার বলেন, ‘আমরা লিকাপড়া জানিনে তাই অত কিচু বুজিনে, এম্বাসি আমাগের যে সিবা দিল, তাতে আমরা মেলা খুশি ওইচি।’ যশোরের শিক্ষিত তরুণ মিলন হাসান ২০২২ সালে কলিং ভিসায় মালয়েশিয়ায় পাড়ি জমিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘সরাসরি দূতাবাসের পাসপোর্ট-সেবা পেয়ে একদিকে যেমন অতিরিক্ত খরচ থেকে বেঁচেছি, অন্যদিকে ভোগান্তিহীন সেবা পেয়েছি। কারণ ইএসকেএলের মাধ্যমে পাসপোর্ট করলে আমাদের অতিরিক্ত খরচ হতো। এমন দূতাবাসই তো আমরা চাই, যারা প্রবাসীদের কল্যাণে কাজ করে যাবেন।’

আগে মালয়েশিয়ার যেকোনো জায়গা থেকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে আবেদন করতে পারত, তাতে করে সময় ও খরচ দুটিই বাঁচত প্রবাসীদের। এমআরপি, ই-পাসপোর্ট  করতে এখন সরাসরি কুয়ালালামপুরে আসতে হয়। প্রাইভেট কোম্পানি  ইএসকেএলকে দায়িত্ব দেওয়ার পর থেকে সেই খরচ চার-পাঁচ গুণ বেড়েছে আর ভোগান্তি তো আছেই। 
করোনার সময় থেকে পোস্ট অফিসের মাধ্যমে দূতাবাস থেকে মালয়েশিয়ার বিভিন্ন প্রান্তে পাসপোর্ট বিতরণ করার ফলে প্রবাসীদের অর্থ, সময় ও শ্রম সাশ্রয় হতো, যেটা প্রবাসীদের মধ্যে ব্যাপক সাড়া ফেলে, তাদের মাঝে আসে স্বস্তি। প্রাইভেট কোম্পানি ইএসকেএল যখন ছিল না, তখন কোনো প্রবাসীকে পাসপোর্টের আবেদন করার জন্য দূর-দূরান্ত থেকে ছুটি নিয়ে অর্থ খরচ করে কুয়ালালামপুরে আসতে হতো না। বর্তমানে মালয়েশিয়ার সব রাজ্য থেকে কুয়ালালামপুরে আসতে হয়। 

ধরা যাক, বর্তমানে পাসপোর্ট করতে কোনো একজন প্রবাসীর জোহরবারু বা পেনাং রাজ্য থেকে কুয়ালালামপুরে আসতে হয়। তাতে একজন ব্যক্তির কমপক্ষে গাড়িভাড়া, কর্মস্থল থেকে কমপক্ষে দুই দিনের ছুটি নিতে হবে, কুয়ালালামপুরে হোটেল ভাড়া করে থাকতে হবে, আর না হয় রাস্তায় রাতে ঘুমাতে হবে। পাসপোর্ট করতে সব মিলে কমপক্ষে ১২০৫ রিঙ্গিত (প্রায় ৩৩ হাজার টাকা) খরচ করতে হয় একজন প্রবাসীকে। 

ট্রাভেল পাশ, বিদেশিদের ভিসা নিতে আগে কোনো সার্ভিস চার্জ লাগত না, যে সেবা দূতাবাস আগে সরাসরি দিত। এখন এই সেবা নিতে ৩২ রিঙ্গিত অতিরিক্ত চার্জ দিতে হয় প্রাইভেট কোম্পানিকে। 

প্রবাসীদের অভিযোগ, সরকার নাগরিকের সেবা সহজ ও সাশ্রয়ী করার পরিবর্তে জটিল, ব্যয়বহুল ও দুর্লভ করে মালয়েশিয়ার ১৫ লাখ প্রবাসীর সঙ্গে তামাশা করছে। অতিরিক্ত খরচ যদি দিতেই হয়, সেটা বাংলাদেশ সরকারকে দেব, যেটা দেশের লাভ হবে, দেশের মানুষের উপকারে খরচ করতে পারবে সরকার। 

প্রবাসীদের লাশ পাঠাতে ভিক্ষা করতে হয়, প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের নাকি টাকা নাই। তাহলে পাসপোর্ট করতে অতিরিক্ত যে টাকা প্রাইভেট কোম্পানি নিচ্ছে, সেটা প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় নিয়ে পাসপোর্ট সেবা দিতে পারে না, যে টাকা দিয়ে প্রবাসীদের লাশ দেশে পাঠাতে পারে। প্রবাসীদের লাশ পাঠাতে তো আর ভিক্ষা করা লাগে না। 
উল্লেখ্য, কোম্পানিটিতে বর্তমানে বাংলাদেশ থেকে ৬০০ কর্মী নিয়োগ করা হয় এবং তারা বাংলাদেশ থেকে আরও কর্মী নিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগ এবং তাদের শ্রম পদ্ধতিতে উচ্চমান বজায় রাখার জন্য হাইকমিশনার  YTY ব্যবস্থাপনাকে আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানান। তিনি আরও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য কোম্পানির প্রস্তাবের প্রশংসা করেন এবং  YTY গ্রুপে আরও বাংলাদেশি কর্মী নিয়োগের জন্য হাইকমিশনের পক্ষ থেকে প্রয়োজনীয় সব সহায়তা ও সহযোগিতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি ব্যক্ত করেন। পরিদর্শনকালে হাইকমিশনার বাংলাদেশি কর্মীদের উদ্দেশে ভাষণ দেন, যেখানে তিনি মালয়েশিয়ায় কর্মরত বাংলাদেশি কর্মীদের পেশাগত সততা এবং স্থানীয় আইন ও বিধিবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকতে উৎসাহিত করেন। 

হাইকমিশনারের সঙ্গে ছিলেন মিনিস্টার (রাজনৈতিক) মোসাম্মৎ শাহানারা মনিকা এবং মিশনের কাউন্সিলর (পাসপোর্ট ও ভিসা) মিয়া মোহাম্মদ কেয়ামউদ্দিন এবং মিশনের অন্য কর্মকর্তারা।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!