বৃহস্পতিবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৫, ১২:০০ এএম

আ.লীগ নিষিদ্ধে এনসিপির বড় কর্মসূচি

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: এপ্রিল ২৪, ২০২৫, ১২:০০ এএম

আ.লীগ নিষিদ্ধে এনসিপির বড় কর্মসূচি

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে ৫ আগস্ট গণভবন থেকে ভারতে চলে যান আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা। তারপর থেকে সময় পেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে রাজনীতিতে আবারও সক্রিয় হতে নানা কর্মসূচি দেয় আওয়ামী লীগ। দলটি গেল ৯ দিনে রাজধানীর বিভিন্ন পয়েন্টে অর্ধশত ঝটিকা মিছিল করে।

এ ছাড়া জেলা, থানা ও ওয়ার্ড পর্যায়ে দলীয় নেতাকর্মীরা মিছিল বের করে ফটোসেশনও করছেন, যা ছড়িয়েছে সামাজিক যোগযোগমাধ্যমে। আওয়ামী লীগের চলমান কর্মকাণ্ডে চরম উদ্বেগ প্রকাশ করেছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও জাতীয় নাগরিক কমিটির সমন্বয়ে গঠিত নতুন রাজনৈতিক দল জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। এসসিপি দাবি করছে, বিভিন্ন সময়ে আওয়ামী লীগের কর্মকাণ্ড আশঙ্কার। আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে সব রাজনৈতিক দলের ওপর তার প্রভাব পড়বে।
 
গত ১৬ বছর দেখেছে দেশবাসী। সব রাজনৈতক দলকে সঙ্গে নিয়ে দলটি নিষিদ্ধ করে বিচারের আওতায় আনতে বৃহৎ কর্মসূচির নিয়ে শিগগিরই মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে এনসিপি। তবে, বৃহৎ রাজনৈতিক দলগুলো আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের বিষয়ে সরাসরি মন্তব্য না করলেও জুলাই অভুত্থানসহ গেল ১৬ বছরের জুলুম-নির্যাতনের সঙ্গে জড়িত দোষীদের বিচারের বিষয়ে একমত রয়েছে।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের গুরুত্ব যত দ্রুত সব রাজনৈতিক দল বুঝবে, তত দ্রুতই মঙ্গল বলে মনে করেন এসসিপির নেতারা। এরই মধ্যে রাজধানীতে আওয়ামী লীগের বিচার ও রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ, সংস্কার ও গণপরিষদ নির্বাচনের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছে জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) নগর জোন। কর্মসূচি থেকে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগকে বাংলাদেশের রাজনীতিতে ফিরতে দেওয়া হবে না। এটি রাজনৈতিক দল নয়, সন্ত্রাসী সংগঠন। অবিলম্বে আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে। একই সঙ্গে ১৫ দিনের মধ্যে আইন তৈরি করে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধের দাবি জানানো হয়েছে।

জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক সামান্তা শারমিন রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, জুলাই অভুত্থানের পর থেকে বলে আসছি বিচার ও সংস্কার আমাদের প্রাধান্যের বিষয়। আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিলের জন্য রাজনৈতিক যে লড়াইটা প্রয়োজন, তা আমরা করে যাচ্ছি। দুঃখজনক হচ্ছে, নির্বাচনই একমাত্র গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এটি উপস্থাপন করা হচ্ছে। এতে করে আওয়ামী লীগ মনে করছে, দেশের রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে বিভেদ রয়েছে, যেই সুযোগটা তারা কাজে লাগানোর চেষ্টা করছে, যার বহিঃপ্রকাশ নানা সময়ে তাদের মিছিল ও সামাজিক মাধ্যমে উসকানি পোস্ট থেকে বোঝা যায়। তবে মোটাদাগে বললে, রাজনিতীতে কিছুটা বিভক্তি, সংস্কার ও প্রস্তাবের বিষয়ে দ্বিমত থাকতেই পারে, এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া। এগুলোর সুযোগ নিয়ে আওয়ামী লীগ মিছিল করার সুযোগ পায় সেটি দুঃখজনক এবং এনসিপির জন্য শুধু নয়, বিএনপিসহ সব দলের জন্য আশঙ্কারও। আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় ছিল, তখন বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বিএনপি। ভবিষ্যতেও সেই আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না। বিচার যদি না হয় বা নিষিদ্ধ না হলে সব দলের ওপর এর প্রভাব পড়বে।

আওয়ামী লীগ নিধিদ্ধে বৃহৎ কর্মসূচির বিষয়ে তিনি বলেন, খুব শিগগিরই আওয়ামী লীগ নিধিদ্ধের বৃহৎ কর্মসূচি আসছে। সব রাজনৈতিক দলকে সঙ্গে নিয়েই আগমীতে মাঠে নামবে এনসিপি। সব রাজনৈতিক দলকে সমন্বয় করার কাজটি করবে এনসিপি।

আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধের বিষয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, ‘আমরা এমন সিদ্ধান্তের পক্ষে নই, যা জাতীয় স্থিতিশীলতা ও সংহতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। রাজনীতি রাজনীতিবিদদের হাতেই থাকা উচিত এবং সেটা অবশ্যই জাতীয় স্বার্থের ভিত্তিতে পরিচালিত হতে হবে। বিএনপি বিশ্বাস করে, আওয়ামী লীগকে গণহত্যা ও মানবতাবিরোধী অপরাধের জন্য সংবিধানের ৪৭ অনুচ্ছেদের অধীনে বিচারের সম্মুখীন করা উচিত। কিন্তু আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে কি না, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চালিয়ে যেতে পারবে কি না, সেই সিদ্ধান্ত আদালত নেবেন। বিএনপি বহুদলীয় গণতন্ত্র ও অন্তর্ভুক্তিমূলক রাজনীতির প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাই, কোনো দল নিষিদ্ধ করার উদ্যোগে সমর্থন দেওয়া আমাদের নীতির পরিপন্থি। প্রাথমিকভাবে আওয়ামী লীগকে বিচারের আওতায় আনার জন্য আইনি সংশোধনের পরিকল্পনা করা হলেও পরে সরকার তা থেকে সরে এসেছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশের জনগণ জুলাই গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে আওয়ামী লীগের ‘ফ্যাসিবাদী রাজনীতি’কে প্রত্যাখ্যান করেছে। আওয়ামী লীগ তাদের অপরাধের জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করেনি বা ক্ষমা চায়নি।

জনগণের কাছে আওয়ামী লীগ ‘নিষিদ্ধ হয়ে গেছে’ জানিয়ে, জামায়াতে ইসলামীর আমির শফিকুর রহমান বলেছেন, বিচার হলো তাদের (আ.লীগের) পাওনা। নিষিদ্ধ আল্লাহই ওদের (আওয়ামী লীগ) করে ফেলেছেন এবং জনগণের মনে তারা নিষিদ্ধ হয়েই গেছে। ‘বিচার হলো তাদের পাওনা। বিচার হলো ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের একদম জেনুইন পাওনা। এটা পেতেই হবে তাদের। আওয়ামী লীগকে ভোটে আনা নিয়ে চলমান আলোচনা প্রসঙ্গে নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, রাজনীতিতে ফেরার জন্য আওয়ামী লীগ নিজে কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। যারা খুব গুরুত্বপূর্ণ লোকজন, ঝগড়ার মাধ্যমে ফোকাস করে তাদের সবার সামনে নিয়ে আসছি।  দেশে গণতান্ত্রিক পথ থাকতে হবে এবং একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিচার হতে হবে।

এদিকে, আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনগুলো নিষিদ্ধ এবং বিচারের মুখোমুখি করার দাবিতে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আসিফ নজরুলকে স্মারকলিপি দিয়েছেন কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা আওয়ামী লীগসহ দলটির অঙ্গসংগঠনগুলোকে নিষিদ্ধ এবং পিলখানা হত্যাকাণ্ড, শাপলা চত্বরে গণহত্যা, জুলাই গণহত্যাসহ সব অপকর্মের অভিযোগে বিচারের মুখোমুখি করার দাবি জানান তারা। ‘গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধকরণ আন্দোলন’ প্ল্যাটফর্ম থেকে শিক্ষার্থীরা এই কর্মসূচি পালন করেন। স্মারকলিপিতে নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগকে নিষিদ্ধ করা এবং দলটির নিবন্ধন বাতিল করা, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সংসদ সদস্যদের অবৈধ সম্পদ বাজেয়াপ্ত, গুম থাকা ব্যক্তিদের সন্ধান, গত ১৫ বছরের রাজনৈতিক সব মামলা প্রত্যাহার, জুলাই আন্দোলনে ভুক্তভোগী পরিবারগুলোর ক্ষতিপূরণ, পুনর্বাসন ও নিরাপত্তা নিশ্চিতসহ ৯টি দাবি জানান তারা। তারা দাবি করেছেন, দ্রুততম সময়ের মধ্যে নির্বাহী আদেশে আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ চান তারা। ৫ আগস্ট জনগণ রায় দিয়ে দিয়েছে, এ দেশের মাটিতে আওয়ামী লীগের রাজনীতি করার কোনো অধিকার নেই। তাই কালবিলম্ব না করে আওয়ামী লীগের নিবন্ধন বাতিল করে তাদের নিষিদ্ধ করতে হবে।
 
উল্লেখ্য, এনসিপির নেতারা বিভিন্ন সময়ে অভিযোগ করেছেন, ইনিয়ে-বিনিয়ে বড় রাজনৈতিক দলটি আওয়ামী লীগের পক্ষ নেওয়ার চেষ্টা করছে। এমন হলে এনসিপি সেই সব দলের বিপক্ষেও রাস্তায় নামার হুঁশিয়ারি দিয়েছে। এ ছাড়া চলমান সংস্কারের পক্ষেও বাধা হয়ে দাঁড়ালে সে বিষয়ে তারা আপস না করার কথা বলেন বিভিন্ন সময়।

Link copied!