মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৫, ০৫:২০ পিএম

অবুঝ মানহার শরীরে গরম ছুরির অসংখ্য ছ্যাঁকা

শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ১০, ২০২৫, ০৫:২০ পিএম

অবুঝ মানহার শরীরে গরম ছুরির অসংখ্য ছ্যাঁকা

আটক শামসুজ্জামান

চার বছরের ছোট্ট শিশু মানহার শরীরজুড়ে অসংখ্য পোড়া ক্ষতচিহ্ন। প্রতিবেশী ও পুলিশের সহায়তায় তাকে উদ্ধার করে আনা হয়েছে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে। কী হয়েছে জিজ্ঞাসা করতেই মৃদু হেসে উত্তর দিল, ‘আব্বু পুইড়া দিছে।’ কীভাবে পুড়িয়ে দিয়েছে? মানহার জবাব, ‘ছুরি গরম করে ছ্যাঁকা দিছে।’

জানা যায়, গাজীপুরের শ্রীপুরে চার বছরের এক শিশুকে ছুরি গরম করে ছ্যাকা দিয়েছে সামসুজ্জামান মান্না (৩০) নামের এক যুবক। গত শুক্রবার রাতে শ্রীপুর উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা কলাবাগান এলাকায় ফজলুল হকের ভাড়া বাসায় এ ঘটনা ঘটে।

গত দু‍‍`দিন ধরে কথিত স্ত্রী ও সন্তানকে বাসায় আটকে রেখে নির্যাতন চালাচ্ছে সামসুজ্জামান মান্না। বিয়ে না করেও স্ত্রী সাজিয়ে এক মেয়েকে নিয়ে থাকছে ফ্লাটে। তার কথিত স্ত্রীকে অন্য রুমে পাঠিয়ে দিয়ে মেয়ে নিয়ে ফুর্তি করেন ওই ফ্লাটে এরকম অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে।

রবিবার রাত ৮ টার দিকে বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয়রা তাকে আটক করে পুলিশ খবর দেয়। পরে রাত ১০ টার দিকে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে ৬ মাসের সাজা প্রদান করেন।

অভিযুক্ত সামসুজ্জামান মান্নার বাড়ি নোয়াখালী জেলার বেগমগঞ্জ থানায়। সে তালুয়া চাঁদপুর গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে। মাওনা চৌরাস্তা এলাকায় ভাড়া থেকে একটি খেলনার দোকানে সেলসম্যান হিসেবে কাজ করতেন। 

গত আট মাস আগে টিকটকে পরিচয় হয় ফেনী জেলার এক মেয়ের সাথে। তার সাথে গড়ে তুলেন প্রেমের সম্পর্ক। অবশেষে ওই মেয়েকে চার বছরের শিশু বাচ্চাসহ বিয়ে করবে বলে ফেনী থেকে নিয়ে আসেন শ্রীপুরে। স্ত্রী বানিয়ে বাসা বাড়া নিয়ে বসবাস করতে থাকেন শ্রীপুরে।

গত শুক্রবার রাতে তার কথিত স্ত্রীর সাথে থাকা শিশু বাচ্চাকে দরজা আটকিয়ে ছুরি গরম করে শরীরের বিভিন্ন স্থানে ছ্যাকা দেয় সামসুজ্জামান মান্না। বিষয়টি তার পাশের ফ্লাটের ভাড়াটিয়ারা জানতে পেরে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র প্রতিনিধিদের খরব দেয়। পরে তারা পুলিশসহ ঘটনাস্থলে গিয়ে শিশুটিকে উদ্ধার করে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে নিয়ে আসেন। শ্রীপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি আতাহার শাকিল ভ্রামমাণ আদালতে তাকে ৬ মাসের কারদন্ড প্রদান করেন এবং শিশুটির চিকিৎসা নিশ্চিত করে মেয়েটিকে তার পরিবারের কাছে পাঠানোর ব্যবস্থা করেন।

ভাড়াটিয়া রায়হান জানান, ‘গত চার মাস ধরে শিশুটির ওপর নিষ্ঠুর নির্যাতন চলে...সর্বশেষ গত শুক্রবার রাতে গ্যাসের চুলায় ছুরি গরম করে শিশুর কাঁধ, হাত, ঘাড়, গলা, গাল ও কানে ছ্যাঁকা দেয় পাষণ্ড যুবক। ঘরেই আটকে রাখা হয় তাকে। রোববার সন্ধ্যায় এক ফাঁকে সে বেরিয়ে আমার বাসায় চলে আসলে বিষয়টি জানতে পারি। রাতেই পুলিশে খবর দেওয়া হয়। খবর পেয়ে পুলিশ শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।’ 

শিশুর মা জানান, সব জেনেই আমাকে ঘরে তুলেছে শামসুজ্জামান। কথা ছিল আমার প্রথম স্বামীর ঘরের মেয়েকে নিজের মেয়ের মতো দেখবে। কিন্তু মেয়েকে নিয়ে আসার পর থেকে পাল্টে যায় তার চরিত্র। আমার মেয়েকে হরহামেশাই মারপিট-নির্যাতন করত, আমাকেও মারত। ভয়ে প্রকাশ বা প্রতিবাদ করতে পারতাম না। গত শুক্রবার রাত ১১টার দিকে মেয়েকে পাশের কক্ষে দরজা বন্ধ করে ছুরি গরম করে শরীরে ছ্যাঁকা দেয়। আমাদের ঘরে আটকে রাখে। কাউকে কিছু বলতে পারিনি। পাশের ভাড়াটিয়ারা জেনে আমাদের উদ্ধার করে। আমাদের বিয়ে হয়নি। শামসুজ্জামান বলছে কাবিন করবে, তা-ও করেনি।’

এ বিষয়ে শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সজীব আহমেদ জানান, ‘রোববার রাতে বাড়ির অপর ভাড়াটিয়াদের মাধ্যমে খবর পেয়ে পুলিশের সহায়তায় শিশুটিকে উদ্ধার করে আনা হয়। আটক করে আনা হয় শামসুজ্জামানকে। বাড়ির অন্য ভাড়াটিয়া ও শিশুর বক্তব্য শুনে শামসুজ্জামানকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। শিশুটিকে মায়ের সঙ্গে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসন শিশুটির নিয়মিত খোঁজখবর রাখবে।’

আরবি/আবু

Link copied!