বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ০২:৩১ পিএম

লালন মেলা শুরু ১৭ অক্টোবর, আসতে শুরু করেছেন ভক্তরা

কুষ্টিয়া প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ০২:৩১ পিএম

লালন মেলা শুরু ১৭ অক্টোবর, আসতে শুরু করেছেন ভক্তরা

ছবি: সংগৃহীত

আগামী ১৭ অক্টোবর (১ কার্তিক) আধ্যাত্মিক সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস। এ উপলক্ষ্যে কুষ্টিয়ার ছেঁউড়িয়া লালন আখড়াবাড়িতে তিন দিনব্যাপী লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে।

এদিকে, মেলার এক সপ্তাহ আগে থেকেই হাজারো ভক্ত-অনুসারীরা দূরদূরান্ত থেকে আসতে শুরু করেছেন। লালন মেলা উপলক্ষ্যে আখড়াবাড়িতে হাজারো ভক্ত-অনুসারীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে।

তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে কালি নদীর পাড় ঘেঁষে লালন মাঠে শতাধিক অস্থায়ী থাকার জায়গা ও কয়েকটি দোকান বসেছে। লালন শাহের মাজার প্রাঙ্গণ, মাঠ, কালি নদীর পাড়ঘেঁষে বসেছে দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীদের খণ্ডখণ্ড দল। সেখানে ভিড় জমাচ্ছেন দর্শনার্থীরা। গুরুশিষ্য, ভক্ত-অনুসারী আর দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত প্রাঙ্গণ। লালন মেলার আগেই ভক্ত-অনুসারীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে স্থানটি। মাজার প্রাঙ্গণ পরিষ্কার করে বর্ণিল পরিবেশ সৃষ্টি করছে অ্যাকাডেমি কর্তৃপক্ষ।

দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীদের খণ্ডখণ্ডভাবে দলবদ্ধ হয়ে লালন ফকিরের গান গাইছেন। দিনরাত গান ছাড়াও তারা লালন ফকিরের বাণী নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছেন। অনেকে আবার লালনের মত ও পথের দীক্ষা নিচ্ছেন। আর এ মেলা দেখতে আসছেন হাজারো মানুষ।

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় এবং লালন অ্যাকাডেমির আয়োজনে আগামী ১৭ অক্টোবর থেকে তিন দিনব্যাপী লালন মেলা শুরু হবে। এ উৎসবকে কেন্দ্র করে হাজারো লালন ভক্ত অনুসারীরা লালন আখড়াবাড়িতে আসছেন। লালন মেলায় অনুষ্ঠানে প্রতিদিনই আলোচনা সভা শেষে মঞ্চে শুরু হবে লালন সঙ্গীত। যেখানে গাইবেন লালন অ্যাকাডেমির শিল্পী ছাড়াও দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বাউল শিল্পী ও ভক্তরা।

১২৯৭ বঙ্গাব্দের পহেলা কার্তিক উপমহাদেশের প্রখ্যাত সাধক বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের মৃত্যুর পর থেকে তার স্মরণে লালন অ্যাকাডেমি ও জেলা প্রশাসন এই স্মরণোৎসব চালিয়ে আসছে। প্রতিবছর ১ কার্তিক আড়ম্বপূর্ণ অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ফকির লালন শাহের তিরোধান দিবস পালন করা হয়।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, লালন মেলা উপলক্ষ্যে ছেঁউড়িয়ার আখড়াবাড়িতে দূরদূরান্ত থেকে হাজারো লালন ভক্ত-অনুসারীরা এসেছেন। প্রতিনিয়ত লালন ভক্ত ও দর্শনার্থীদের উপস্থিতি বেড়েই চলেছে। লালন মেলা শুরুর আগেই আখড়াবাড়িতে ভক্ত অনুসারীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে। ভক্ত-অনুসারীরা খণ্ডখণ্ডভাবে দলবদ্ধ হয়ে লালন ফকিরের গান গাইছেন। লালনের বাণী ও আদর্শ নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছেন। লালনের গানে গানে মুখরিত হয়ে উঠেছে। ভক্ত অনুসারীরা লালন ফকিরের মাজার প্রাঙ্গণ, মাঠ, কালি নদীর পাড়ঘেঁষে অস্থায়ীভাবে তৈরি করেছেন আস্তানা। লালন মেলায় কালি নদীর পাড়ে মাঠে বসেছে গ্রামীণ মেলা। আশপাশের এলাকায়ও হরেকরকমের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।

লালন ভক্ত ও অনুসারীরা জানান, প্রতিবারই লালন মেলায় লাখ লাখ মানুষের পদচারণা মুখরিত হয়। এবার মেলা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই দূরদূরান্ত থেকে হাজারো ভক্তরা এসেছেন। যতই সময় পার হচ্ছে ততই ভিড় বাড়ছে। লালন ফকিরের গানে গানে এখন মুখরিত এই এলাকা। মরমী সাধক ফকির লালন শাহ কুষ্টিয়ার শহরতলি কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের ছেঁউড়িয়া গ্রামে ১৮৯০ সালের ১ কার্তিক মারা যান। এখানে পরবর্তী সময়ে লালন মেলার আয়োজন শুরু হয়। সেই থেকে প্রতি বছরই নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে তাদের কাঙ্ক্ষিত এ উৎসব পালন করা হয়। সাঁইজির স্মরণে দিবসটি ঘিরে তিন দিনের অনুষ্ঠান হয় আখড়াবাড়িতে।

লালন মেলায় আসা দর্শনার্থীরা বলেন, লালন মেলায় উপলক্ষ্যে আখড়াবাড়িতে দূরদূরান্ত থেকে ভক্ত অনুসারীরা এসেছেন। এখানে এসে খুবই ভালো লাগছে। লালন ভক্ত ও অনুসারীদের আস্তানাগুলো দেখতে খুব সুন্দর লাগছে। তাদের গাওয়া গান শুনতে ভালো লাগে। জায়গায় জায়গায় তারা গান গাচ্ছেন। লালন সাঁইজির গানে ও বাণীতে এই এলাকার মুখরিত হয়ে উঠেছে।

লালন অ্যাকাডেমির কয়েকজন সদস্য ও স্থানীয়রা বলেন, লালন ফকির দীর্ঘ সময় ধরে তার নিজস্ব আত্মদর্শনের আলোকে ভক্ত আশেকান ও শিষ্যদের নিয়ে যেসব উৎসবমুখর কর্মকাণ্ড করতেন তারই ধারাবাহিকতায় পহেলা কার্তিক সাঁইজির তিরোধান দিবস পালন করতে দেশ-বিদেশে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ভক্তশিষ্য-অনুসারীরা ছেঁউড়িয়ার আঁখড়াবাড়িতে মিলিত হন।

তারা আরও বলেন, সাধারণত লালন মেলায় লাখ লাখ ভক্ত-অনুসারী, সাধু-ফকির ও দর্শনার্থীদের ভিড় হয়। কুষ্টিয়ার আখড়াবাড়ির ভেতরে ও বাহিরে যেন পা ফেলার জায়গা থাকে না। এবারও লালন মেলা শুরুর এক সপ্তাহ আগে থেকেই দূরদূরান্ত থেকে হাজারো ভক্তরা এসেছেন। সাধু ভক্তদের এই মিলন মেলায় লালনের রেখে যাওয়া মানবমুক্তির আধ্যাত্মিক বাণী সম্বলিত গান গাওয়া হয়। লালন শাহের গান শুনতে ও এখানে ঘুরতে জড়ো হচ্ছেন অসংখ্য দর্শনার্থীরা।

এসব বিষয়ে কুষ্টিয়ার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ও লালন অ্যাকাডেমির অ্যাডহক কমিটির সভাপতি শারমিন আখতার বলেন, বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে তিনদিন ব্যাপী লালন মেলার আয়োজন করা হয়েছে। প্রতিদিনই সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে আলোচনা সভা শুরু হবে, আলোচনা শেষে শুরু হবে লালন সঙ্গীত। মেলার সার্বিক প্রস্তুতি চলছে। মাজার প্রাঙ্গণ ও তার আশপাশের এলাকায় নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। যেকোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে পর্যাপ্ত আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কাজ করবে।

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার (এসপি) মো. মিজানুর রহমানের মুঠোফোনে কল করলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

আরবি/ এইচএম

Link copied!