বুধবার, ৩০ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম

যে গ্রামকে মুড়ির গ্রাম নামেই চিনে সবাই

কুমিল্লা প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ১৪, ২০২৫, ০৮:০৬ পিএম

যে গ্রামকে মুড়ির গ্রাম নামেই চিনে সবাই

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

গ্রামের নাম লক্ষ্মীপুর কিন্তু সেই নামকে ছাপিয়ে মুড়ির গ্রাম নামেই বেশী চিনেন মানুষ। কুমিল্লা জেলাজুড়ে এ গ্রামের হাতে ভাজা মুড়ির কদর আলাদা। রমজান মাস আসলেই নতুন করে আলোচনায় উঠে আসে গ্রামটি। অর্ধশত বছরেরও বহু আগ থেকেই এই গ্রামে ঘরে ঘরে হাতে ভাজা মুড়ি তৈরি হয়ে আসছে। বর্তমানে বানিজ্যিকভাবে মুড়ি ভাজা হচ্ছে।

বলছিলাম কুমিল্লা-চাঁদপুর আঞ্চলিক মহাসড়কের পাশে বরুড়া উপজেলার লক্ষ্মীপুর গ্রামের কথা। এ গ্রামের হাতে ভাজা মুড়ির সুনাম সুখ্যাতি পুরনো, চাহিদাও দিন দিন বেড়েই চলছে। চাহিদার কথা মাথায় রেখে মুড়ি ভাজার ধুম লেগে আছে রমজান শুরুর আগ থেকেই। 

কুমিল্লা ছাড়াও দেশের বিভন্ন স্থানে বিক্রির উদ্দেশ্যে যাচ্ছে এসব হাতে ভাজা মুড়ি। এক সময় গ্রামের প্রতিটি প্রতিটি পাড়ায় মুড়ি ভেজে বিক্রি করতেন বাসিন্দারা। বর্তমানে সেটি কমে ২৫ থেকে ৩০টি পরিবার এই পেশা ধরে রেখেছে।

জানা যায়,  গত কয়েক বছর ধরে চালের দাম বেশি থাকায় মুড়ি বিক্রিতে লাভ কমেছে, এ কারণে অনেকেই এ কাজ ছেড়ে দিয়েছেন।

লক্ষ্মীপুর গ্রামের দুর্গাচরণ পালের বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, সারি সারি মাটির চুলার ওপর বসানো হয়েছে বড় বড় মাটির পাত্র। একজন চুলায় লাকরির আগুন দিচ্ছেন। আরেকজন ভাজা চাল এনে আগুনে তাপ দেওয়া গরম বালির পাত্রে ঢেলে দিচ্ছেন। অন্যজন কাঠি দিয়ে সেই চাল নাড়াচাড়া করছেন, মুহুর্তের মধ্যেই চাল থেকে হয়ে যায় মুড়ি। গরম গরম অবস্থায় এই মুড়ি বস্তায় ভরে নিয়ে যাওয়া হয় পাশের একটি গোডাউনে। সেখানে ঢেলে মুড়ি ভালোভাবে পরিষ্কার করা হয়। এরপর কয়েকজন আবার সেই মুড়ি বড় বড় বস্তায় ভরেন। প্রতি বস্তায় ৪৫ কেজি করে মুড়ি ভরা হয়। সেই মুড়ি নিয়ে যান পাইকাররা।

দুর্গাচরণ পাল বলেন, গ্রামের মধ্যে সবচেয়ে বেশি মুড়ি তৈরি করেন তিনি। প্রতিবছরই রমজানের অন্তত ১৫ দিন আগ থেকে তাঁদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। এই সময়ে প্রতিদিন রাত দুইটার দিকে শুরু হয় মুড়ি ভাজার কাজ, চলে পরের দিন বেলা সাড়ে ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত। বর্তমানে গ্রামের ২৫-৩০টি পরিবার মিলে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ মণ মুড়ি ভাজে। কুমিল্লা ছাড়া এই মুড়ি যায় ফেনী, নোয়াখালী, চাঁদপুর, চট্টগ্রাম ও ঢাকায়। গ্রামের উৎপাদনকারীরা প্রতি কেজি মুড়ি পাইকারের কাছে বিক্রি করেন ১১০ থেকে ১৫০ টাকায়। বর্তমানে সব কিছুর দাম বেড়ে যাওয়ায় সব খরচ বাদ দিয়ে প্রতি কেজিতে লাভ হয় চার থেকে ছয় টাকা।

হারাধন পাল নামের আরেক মুড়ি উৎপাদনকারী জানান, পাকিস্থান আমল থেকেই আমাদের দাদারা বাণিজ্যিকভাবে মুড়ি ভাজার কাজ করতেন। এখন করছি আমরা। তবে আমাদের সন্তানেরা মনে হয় না এই ধারা ধরে রাখবে। প্রতিবছরই মুড়ি উৎপাদনকারীর সংখ্যা কমছে। তিনি আরো বলেন, তাঁরা বরিশাল থেকে মুড়ির ধান সংগ্রহ করেন। এরপর ধান থেকে মুড়ি তৈরির উপযুক্ত চাল করা হয়। প্রতি কেজি চাল ৮০ টাকা কেজি দর পড়ে।

এদিকে মুড়ির ভাজার কাজে শ্রমিক হিসেবে কাজ করছেন গ্রামের বিভিন্ন বয়সের নারীরা। তিনজন করে তারা প্রদতিদিন ১০০কেজি মুড়ি ভেজে ৩০০ টাকা করে ৯০০ টাকা হারে মুজুরী পেয়ে থাকেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বরুড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নু-এমং মারমা মং বলেন, আমি যোগদান করে গ্রামটির বিষয়ে জেনেছি। এই গ্রামের হাতে ভাজা মুড়ির ঐতিহ্য রয়েছে। স্বাদে মানেও অনন্য। এ শিল্পটি টিকিয়ে রাখা প্রয়োজন। উপজেলা প্রশাসন থেকে তাদের উৎসাহীত করা হবে।   

আরবি/জেডআর

Link copied!