মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


মো. সোহেল কিরণ, নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৫, ১২:৫৪ এএম

ধর্ষণ প্রতিরোধে এককাট্টা

মো. সোহেল কিরণ, নারায়ণগঞ্জ

প্রকাশিত: মার্চ ১৬, ২০২৫, ১২:৫৪ এএম

ধর্ষণ প্রতিরোধে এককাট্টা

পৃথিবীতে যা কিছু সুন্দর চিরকল্যাণকর অর্ধেক তার করিয়াছে নারী, অর্ধেক তার নর। অথচ ওই নারীকেই ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে মানুষের মুখোশের আড়ালে কিছু অমানুষ। সারা দেশে আশঙ্কাজনক হারে বাড়ছে নারী ও শিশু নির্যাতন। মাগুরার ৮ বছরের শিশু আছিয়াকে নির্যাতনের ঘটনা সারা দেশের মানুষের বিবেককে নাড়া দিলেও ধর্ষকদের বুক যেন এতটুকুও কাঁপেনি। 

শিশু আছিয়ার আর্তনাদে ভারী হয়ে ওঠে গোটা দেশ। বুকভরা কষ্ট নিয়ে নীরবে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেছে ফুলের মতো ছোট শিশুটি। আর রেখে গেছে অভিশপ্ত কতিপয় পিশাচদের। তাদের বিচারের অপেক্ষায় গোটা দেশবাসী। নির্যাতনের শিকার আছিয়ার মৃত্যুর ক্ষত শুকানোর আগেই নারায়ণগঞ্জেও এমন নিষ্ঠুর নির্যাতনের শিকার হয়েছেন শিশু-কিশোরী-প্রতিবন্ধী যুবতীসহ বেশ কয়েকজন নারী। 

এদের মধ্যে ৫, ৭, ৮ বছরের ৩ শিশু, ১৪ বছরের এক কিশোরী, এক প্রতিবন্ধী যুবতী ও বিবাহিত ২ নারীও রয়েছে। প্রতিটি ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর টনক নড়ে প্রশাসনের। এসব ঘটনায় সুশীল সমাজ ও স্থানীয় প্রতিবাদী বিভিন্ন সংগঠন সোচ্চার হয়ে বিচারের দাবিতে সভা-সমাবেশ, বিক্ষোভ মিছিলসহ নানা কর্মসূচি পালন করে আসছে। আলোচিত ঘটনাগুলোতে প্রশাসনের কবজায় আসে আসামিরা। 

নৈতিকতার অবক্ষয় ও পারিবারিক শিক্ষার অভাবে কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সের বিপথগামীরা জড়িয়ে পড়ছে ঘৃণিত এ অপরাধে। কিন্তু ধর্ষণ নামের এই প্রথা থেকে বেরিয়ে আসতে আইন প্রশাসনকে আরও কঠোর ও বিচক্ষণতার পরিচয় দেওয়ার পরামর্শ সুশীল সমাজের। নারায়ণগঞ্জে কোনো ধর্ষকের ঠাঁই নেই দাবি করে, স্বোচ্ছার সব শ্রেণি-পেশার মানুষ। 

কলামিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশের মহাসচিব লায়ন মীর আব্দুল আলীম বলেন, নৈতিক শিক্ষার অভাব, মাদকাসক্তি ও পর্নোগ্রাফি যুবসমাজসহ গোটা সমাজকে কলুষিত করছে। তাই সবার আগে মানুষের মাঝে নৈতিক শিক্ষার চর্চা শুরু করতে হবে এবং সমাজ থেকে মাদক বিলুপ্ত করতে হবে। 

পর্নোগ্রাফি নির্মূল আইনকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে হবে। আর ধর্ষণের মতো ঘৃণিত অপরাধে যে বা যারাই জড়াবে, তাদের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অন্যথায় ভবিষ্যৎ প্রজন্ম বড় হুমকির মুখে ধাবিত হবে। গোটা জেলাবাসী কোনোভাবেই তা মেনে নেবে না। নারায়ণগঞ্জে আর কোনো ধর্ষকের ঠাঁই হবে না। 

নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া দিপু বলেন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজ, জুলুমবাজদের জায়গা এই নারায়ণগঞ্জে হবে না। আর কোনো ধর্ষণের ঘটনার নারায়ণগঞ্জবাসী মেনে নেবে না। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আমরা সব অপরাধীকে প্রতিহত করবই। 

অনুসন্ধানে জানা যায়, গেল এক মাসে নারায়ণগঞ্জ জেলাজুড়ে ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে অন্তত ৭টি। আর ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ রয়েছে ৩টি। এদের মধ্যে রয়েছে ৫, ৭, ৮ বছরের ৩ শিশু, ১৪ বছরের এক কিশোরী, এক প্রতিবন্ধী যুবতী ও বিবাহিত ২ নারী। কোনো কোনো ঘটনার আসামি গ্রেপ্তার হলেও বিচার হয়নি একটিরও। 

বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন ও সুশীল সমাজের নেতারা বলছেন, প্রতিটি ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষীদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে ফাঁসি কার্যকর করা হলে সমাজ থেকে ধর্ষণ নামক প্রথা দূর হবে। নারায়ণগঞ্জের কোনো মাটিতে ধর্ষকের ঠাঁই হবে না। এতে এককাট্টা গোটা জেলাবাসী। 

চলতি বছরের ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার তারাব পৌরসভার রূপসী বাঘবাড়ি এলাকায় চকোলেট কিনে দেওয়ার কথা বলে সাত বছরের এক শিশুকে ইব্রাহিম (৫৫) নামে এক কাঁচামাল ব্যবসায়ী ধর্ষণ করে। ইব্রাহিম সুনামগঞ্জ জেলার বিঞ্চামপুর এলাকার আব্দুল মিয়ার ছেলে। 

বর্তমানে তারাব পৌরস্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বাবেলের বড় ভাই রুবেলের বাড়ির ভাড়াটিয়া। পতিত সরকারের স্থানীয় দোসরদের প্রভাব খাটিয়ে ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে শিশুটির বাবা-মাকে হুমকি-ধমকি দিয়ে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেয় ধর্ষক ও তার সহযোগীরা।

এ ঘটনা জানাজানি হলে, বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে ধর্ষক ইব্রাহিমের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে থানা পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন ও সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে উদ্ধার করে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। 

স্থানীয় ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, শিশুটির পরিবার রূপসী বাঘবাড়ি এলাকায় তানসেন নামে এক লোকের বাড়িতে ভাড়া থাকেন। ইব্রাহিম রূপসী বাঘবাড়ি ব্রিজ এলাকায় কাঁচামালের ব্যবসা করেন। শিশুটিকে চকোলেট দেওয়ার কথা বলে ইব্রাহীম তার দোকানের ভেতরে নিয়ে ধর্ষণ করে। 

এ সময় জালালের স্ত্রী ইব্রাহিমের দোকানে শুঁটকি কিনতে গিয়ে ধর্ষণের বিষয়টি দেখে ফেলে স্থানীয়দের খবর দেন। পরে বিকেলে শিশুটি তার বাবা-মাকে বিষয়টি জানায়। শিশুটির বাড়িওয়ালা তানসেন ও তারাব পৌর স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান বাবেলের বড় ভাই রুবেল ও স্থানীয় প্রভাবশালী পলিনসহ কয়েকজন মিলে ধর্ষণের বিষয়টি ধামাচাপা দিতে শিশুটির বাবা-মাকে চাপ দেয় এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ শিশুর পরিবারকে ৫ হাজার টাকা দেবে বলে আশ্বাস দিয়ে বিচারের নামে প্রহসন করে। 

বিষয়টি জানতে পেরে রুবেলের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ করে বাড়িটি ঘিরে রাখে স্থানীয়রা। এ সময় উত্তেজনা বাড়তে দেখে রুবেল ও তানসেন কৌশলে ইব্রাহিমকে বাড়ি থেকে বের হয়ে পালাতে সহযোগিতা করে। খবর পেয়ে রূপগঞ্জ থানার ওসি লিয়াকত আলী, ইউএনও সাইফুল ইসলাম, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) তারিকুল আলম, পূর্বাচল রাজস্ব সার্কেলের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ওবায়দুর রহমান সাহেলসহ সেনাবাহিনী ঘটনাস্থলে এসে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠায়। 

শিশুটির বাবা বলেন, আমার মেয়ের বয়স ৭ বছর। আমি দিনমজুরের কাজ করি। বৃহস্পতিবার বিকেল ৫টার দিকে আমি কাজ থেকে এসে শুনতে পারি আমার ৭ বছরের মেয়েকে ইব্রাহিম ধর্ষণ করেছে। আমি এখানে ভাড়া থাকি। বাড়িওয়ালা তানসেন ও রুবেলসহ কয়েকজন মিলে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে আমাকে চাপ দেয় এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ হাজার টাকা দেওয়ার আশ্বাস দেয়। আমার মেয়ের সঙ্গে ঘটে যাওয়া এই অপরাধের আমি বিচার চাই। 

ইব্রাহিম আমার মেয়েকে এর আগেও বেশ কয়েকবার ধর্ষণ করেছে। সে সময় বারবার হুমকি দিয়ে বলেছে, এ ঘটনা জানাজানি হলে আমার মেয়েকে হত্যা করে ফেলবে। মেয়ের প্রাণের ভয়ে সে সময় ঘটনাটি জানাজানি না করা হলেও ইব্রাহীমের অত্যাচার আর সহ্য করা যাচ্ছে না। আমি এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাই। ঘটনায় জড়িতদের ফাঁসি চাই।

ঘটনার সততা নিশ্চিত করে অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করতে তৎপর রয়েছে বলে জানায় আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। 

এদিকে, ১৩ মার্চ জেলার সোনারগাঁয়ের কাঁচপুরের পুরান বাজার এলাকায় ৫ বছরের এক শিশুকন্যাকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে মনসুর আলী (৩৫) নামে এক বখাটে যুবককে আটক করে গণধোলাই দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা।

পরিবার ও স্থানীয়রা জানায়, ইছাক মুন্সির বাড়িতে স্ত্রী ও এক কন্যাশিশুকে নিয়ে ভাড়া থাকেন নুরুজ্জামান দম্পতি। স্বামী-স্ত্রী দুজনেই স্থানীয় একটি গার্মেন্টসে চাকরি করেন। একই বাড়ির আরেক ভাড়াটিয়া মনসুর আলী। বাবা-মা দুজনই গার্মেন্টসে চাকরি করার সুবাদে বাচ্চাকে পাশের বাসার এক নারীর কাছে রেখে যান তারা। 

বৃহস্পতিবার বিকেলে বাচ্চাটি বাড়ির উঠানে খেলাধুলা করার সময় তাকে একা পেয়ে খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে কৌশলে এক রুমে নিয়ে ধর্ষণের চেষ্টা করেন মনসুর আলী। 

এ সময় ওই বাড়ির অন্যান্য ভাড়াটিয়া দেখে ফেলায় বাচ্চাটি রক্ষা পায়। পরবর্তী সময় শিশুর বাবা-মা গার্মেন্টস থেকে ফিরে এ খবর জানতে পেরে এলাকাবাসীকে বিষয়টি জানালে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে রাতেই অভিযুক্ত মনসুর আলীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশ সোপর্দ করে। 

অভিযুক্ত মনসুর আলীর বাড়ি রংপুর জেলার কোতোয়ালি থানার কাটাবাড়ি এলাকায়। মনসুর আলীকে আটক করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন সোনারগাঁ থানা পুলিশ।

পুলিশ জানায়, ঘটনাটি শুনে বাচ্চাটির বাবা-মা চাকরি থেকে ফিরে অভিযুক্তকে জিজ্ঞেস করলে অভিযুক্ত মনসুর আলী বাচ্চাটিকে ধর্ষণের চেষ্টা করেছে বলে স্বীকারোক্তি দেয় এবং এবারের মতো তাকে ক্ষমা করে দিতে বলে। পরবর্তী সময়ে বাচ্চার পরিবার এ ঘটনা সম্পর্কে ওই বাড়ির মালিকসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের জানালে তারা মনসুর আলীকে গণধোলাই দিয়ে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করেন। তার বিরুদ্ধে ধর্ষণচেষ্টার মামলা করা হয়েছে।

 ১৩ মার্চ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে শিশুসন্তানকে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে আরিফ, ডালিম ও বেলাল নামে ৩ জনের নামে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এক গৃহবধূর স্বামী। পরে ডালিম নামে এক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। 

অপরদিকে একই দিনে সিদ্ধিরগঞ্জের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের নয়া আটি গ্রামে ৮ বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সেলিম উদ্দিন (৫০) নামে এক দোকানিকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয় জনতা। 

ঘটনা ২টির সত্যতা নিশ্চিত করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহিনুর আলম বলেন, এক শিশুকে জিম্মি করে গৃহবধূকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে থানায় অভিযোগ দায়েরের পর ডালিম নামে একজনকে আটক করা হয়েছে। পরে তার বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করলে ওই মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে পাঠানো হয়। 

অপরদিকে, নয়া আটি এলাকায় আট বছরের এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগে সেলিম উদ্দিন নামে একজনকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। আটককৃত সেলিমের বিরুদ্ধে থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।

  এদিকে, ৮ মার্চ রাতে নারায়ণগঞ্জ বন্দরের নবীগঞ্জে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে সৎমেয়েকে নগ্ন করে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে ১৪ বছরের এক কিশোরীকে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগে শামীম নামে সৎবাবাকে আটক করে পুলিশে দিয়েছে স্থানীয়রা। নারায়ণগঞ্জ সিটি করপোরেশনের ২৪ নম্বর ওয়ার্ডের নবীগঞ্জ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

পুলিশ জানায়, ১৪ বছর বয়সি ওই কিশোরীকে ঘুমের ওষুধ খাইয়ে মোবাইলে নগ্ন ভিডিও ধারণ করে একাধিকবার ধর্ষণের চেষ্টা চালায় কিশোরীর সৎবাবা। পরে ঘটনাটি তার মাকে জানালে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ওই রাতেই শামীমকে আটক করে পুলিশে সোপর্দ করে স্থানীয়রা। এ ঘটনায় কিশোরীর মা বাদী হয়ে থানায় নারী শিশু ও পর্র্নোগ্রাফি আইনে মামলা দায়ের করেন। পরে অভিযুক্ত শামীমকে নারায়ণগঞ্জ আদালতে পাঠায় পুলিশ।

 ১০ মার্চ নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁয়ে প্রতিবন্ধি এক তরুণীকে ধর্ষণের মামলায় হাবিুর রহমান হাবু (৪২) নামে এক লম্পটকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব-১১।আসামিকে ঝিনাইদহ জেলার সদর থানার গোয়ালপাড়া এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। 

-এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি ওই তরুণী নিজ বাড়ি থেকে পাশের গ্রামে যাওয়ার পথে আসামি হাবিবুর রহমান হাবুর বাড়ির সামনে পৌঁছলে তাকে কৌশলে বাড়িতে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে হাবিবুর রহমান হাবু। 

ঘটনাটি কাউকে জানালে ওই তরুণীকে হত্যার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয় হাবু। এ ঘটনায় বাড়ি এসে তার মাকে জানালে তরুণীর মা বাদী হয়ে সোনারগাঁ থানায় মামলা দায়ের করেন। এর পর থেকেই হাবু পলাতক ছিল বলে জানায় র‌্যাব।

গত ১৫ ফেব্রুয়ারি নায়ণগঞ্জের আড়াইহাজারে পারিবারিক কলহের জেরে চাচাতো ভাইয়ের বিরুদ্ধে আরেক চাচাতো ভাই জালালের দায়েরকৃত মামলা থেকে আসামির নাম বাদ দিতে আসামির (চাচাতো ভাইয়ের বউ) স্ত্রীকে জোরপূর্বক ধর্ষণ ও তার ভিডিও ধারণ করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়াসহ ব্ল্যাকমেইল করে ৩ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অপরাধে জালাল নামে এক লম্পটকে গ্রেপ্তার করেছে থানা পুলিশ। 

জালাল আড়াইহাজার থানার সাতগাঁও ইউনিয়নের সখেরগাঁও এলাকার মৃত. বিল্লাল হেসেনের ছেলে। বৃহস্পতিবার ১৩ মার্চ রাতে ওই লম্পট জালালকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। 

স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, পারিবারিক কলহের জেরে ২০২৪ সালে জালাল তার চাচাতো ভাইকে প্রধান আসামি করে মামলা দায়ের করে। ওই মামলা থেকে আসামির নাম বাদ দিতে আসামির স্ত্রীর সঙ্গে ফোনে কথা বলতে বলতে তাদের মাঝে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। 

চলতি বছরের ১৫ই ফেব্রুয়ারী ওই নারীকে ফাঁকা বাড়িতে ধর্ষণ করে জালাল। পরে মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল করে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে একাধিকবার ধর্ষণ করে ওই লম্পট। এতে বাঁধা দিলে ওই নারী জালালের বিরুদ্ধে মামলা করবে না বলে জোরপুর্বক স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করিয়ে নেয় জালাল। 

পরে মোবাইলে ধারণকৃত ওই ভিডিও বাকি আসামিদের মাঝে ছড়িয়ে দেয় জালাল। অন্য আসামিরা ওই ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিয়ে ব্ল্যাকমেইল করে ৩ লাখ টাকা দাবি করে। বাধ্য হয়ে ওই নারী গত বুধবার আড়াইহাজার থানায় জালালকে প্রধান আসামি করে ৩ জনের নামে মামলা দায়ের করেন।

আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এনায়েত হোসেন জানান, ভুক্তভোগী ওই নারীর দায়ের করা মামলার প্রধান আসামি জালাল নামে এক লম্পটকে গ্রেপ্তরা হয়েছে। বাকি আসামিদরও গ্রেপ্তারষ্টো চলেছে।

এসব বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার প্রত্যুষ কুমার মজুমদার বলেন, অপরাধীর পরিচয় অপরাধী। কোনো অপরাধীকেই কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। যখনই কোনো ঘটনা ঘটছে, পুলিশের পক্ষ থেকে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। তা ছাড়া সর্বসাধারণের উদ্দেশে পুলিশ সুপার আরও বলেন, কোনো ঘটনা ঘটলে সঙ্গে সঙ্গে যেন পুলিশকে জানানো হয়। কেউ যেন নিজের হাতে আইন তুলে না নিই।
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!