শ্যালিকাকে ধর্ষণচেষ্টায় ব্যর্থ হয়ে বরগুনায় দুই শিশুকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় অভিযুক্ত ইলিয়াসকে ফাঁসির আদেশ দিয়েছে আদালত। শনিবার (২৬ এপ্রিল) সকালে বরগুনার অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে জবানবন্দি দেন তিনি।
রোববার (২৭ ফেব্রুয়ারি) বরগুনা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের বিচারক বেগম লায়লাতুল ফেরদৌস এই রায় প্রদান করেন।
অভিযুক্ত আসামির নাম ইলিয়াস পহলান (৩৪)। তিনি বরগুনার সদর উপজেলার আয়লা পাতাকাটা ইউনিয়নের পূর্ব কেওড়াবুনিয়া ইউনিয়নের আবুল হোসেন পহলানের ছেলে।
এ তথ্য নিশ্চিত করেন আদালতের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ট্রাইবুনালের বিশেষ পিপি রনজুয়ারা শিপু।
এর আগে ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতে ইলিয়াস নিজ শ্যালিকাকে ধর্ষণচেষ্টা করে। ধর্ষণ করতে ব্যর্থ হলে শ্যালিকাকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে সে। এ সময় ঘরে থাকা রিগানের তিন বছরের শিশুকে কুপিয়ে হত্যা করে। একই সঙ্গে ১৩ বছরের শিশু প্রতিবেশীর ছেলেকেও কুপিয়ে হত্যা করে।
মামলার সূত্র থেকে জানায়, বরগুনা সদর উপজেলার ফুলঝুড়ি ইউনিয়নের রোডপাড়া গ্রামে নিজ শ্যালিকাকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছিল তার দুলাভাই ইলিয়াস। মা বাড়িতে না থাকায় ২০২৩ সালে ৪ আগস্ট বৃহস্পতিবার রাতের খাবার খেয়ে তিন বছরের শিশুকন্যা ও প্রতিবেশী এক শিশুকে নিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন শালী রিগান। এই সুযোগে গভীর রাতে ঘরে ঢুকে ইলিয়াস তাকে ধর্ষণেরচেষ্টা করে। এতে বাধা দেন তিনি। একপর্যায়ে ঘরে থাকা দা উঁচিয়ে ইলিয়াসকে প্রতিরোধের চেষ্টা করেন।
এ সময় ইলিয়াস হাত থেকে দা কেড়ে নিয়ে তাকে কুপিয়ে জখম করে। এবং পাশে ঘুমানো প্রতিবেশী শিশু জেগে উঠে ইলিয়াসকে বাধা দিলে, তিনি তাকেও ঘটনাস্থলে কুপিয়ে হত্যা। এছাড়ার পরে শ্যালিকার শিশুকন্যাকে কুপিয়ে বাড়ি ফিরেন তিনি।
পরদিন সকালে প্রতিবেশীরা এক শিশুর মরদেহ এবং ওই নারী ও তার মেয়েকে জখম অবস্থায় দেখতে পান। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে মরদেহ উদ্ধার করে এবং মা ও শিশুকে বরগুনা সদর হাসপাতালে ভর্তি করে। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির মৃত্যু হয়।
এদিকে রাতে এ ঘটনার পর নিজ বাড়িতে ফিরে ঘুমিয়ে পড়ে ইলিয়াস। সকালে হত্যাকাণ্ডের খবর পেয়ে অন্যদের সঙ্গে সেও ঘটনাস্থলে যায়। এ সময় পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করলে হত্যার কথা স্বীকার করে তিনি।