ঢাকা সোমবার, ২৮ এপ্রিল, ২০২৫

চন্দনাইশে মাদ্রাসার অধ্যক্ষ নিয়ে সংঘর্ষ, আহত ৮

চন্দনাইশ (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৭, ২০২৫, ১০:৪৫ পিএম
চন্দনাইশের জাফরাবাদ ফাজিল মাদ্রাসায় সংঘর্ষের একাংশ। ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চট্টগ্রামের চন্দনাইশে একটি মাদ্রাসার অধ্যক্ষকে পুনর্বহালের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে অন্তত ৮ জন আহত হয়েছেন।

রোববার (২৭ এপ্রিল) সকাল ১০টার দিকে উপজেলার বৈলতলী ইউনিয়নে জাফরাবাদ ফাজিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।

আহতরা হলেন- শিক্ষার্থী জাহেদুল ইসলাম (২২), আরমানুল হক মানিক (২১), জাহেদ (২১), শিক্ষক এনামুল হক (৩৫), অধ্যাপক মাওলানা ইউছুপ বিন নূরী (৫৫), মোহাম্মদ আরিফ (২৭), মোহাম্মদ জমির (২৫), মো. হাছান (৪৫)।

আহতরা দোহাজারী ও চন্দনাইশ হাসপাতাল এবং স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা নিয়েছেন। এরই মধ্যে জাহেদুল ইসলাম, আরমানুল হক মানিক ও জাহেদের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় তাদের উন্নত চিকিৎসার জন্য চট্রগ্রাম মেডিকেল কলেজে (চমেক)  ভর্তি করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

জানা যায়, গত ২৫ আগস্ট জাফরাবাদ ফাজিল মাদ্রাসার অধ্যক্ষ আবদুল গফুরকে ওই মাদ্রাসার শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা
অনস্থা দিলে পদত্যাগপত্র করতে বাধ্য হন। পরে বিষয়টি তিনি লিখিতভাবে ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা), চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক ও মাদ্রাসা অধিদপ্তর বরাবরে অভিযোগ করেন বলে জানা যায়।

৮ মাস পরে পদাধিকার বলে মাদ্রাসার সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল.এ) গোলাম মোরশেদ খান ওই অধ্যক্ষ আবদুল গফুরকে স্বপদে পুনর্বহালের নির্দেশ দেন। নির্দেশ পেয়ে তিনি রোববার সকাল ১০ টার দিকে মাদ্রাসায় উপস্থিত হলে কয়েক জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা অধ্যক্ষকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় স্লোগান দিলে দু’পক্ষের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। পরে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া এবং সংঘর্ষে জড়ায়। পরে থানা পুলিশ ও সেনাবাহিনী খবর পেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ব্যাপারে মাওলানা আবদুল গফুর জানান, ৫ আগস্টের পর জোরপূর্বক কিছু কতিপয় শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা তাকে মাদ্রাসা থেকে পদত্যাগপত্র নেন এবং মাদ্রাসায় যেতে না দিলে তিনি ইসলামী আরবি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষসহ সংশ্লিষ্ট দপ্তরে অভিযোগ করেন।

পরে পদাধিকার বলে মাদ্রাসার সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (এল.এ) গোলাম মোরশেদ খান এ নিয়ে মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে দু’টি মিটিং আসতে বলা হলেও তিনি যাননি। পরে চিঠি ইস্যু করলে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সংশ্লিষ্ট থানাকে জানিয়ে মাদ্রাসায় দায়িত্ব বুঝে নেওয়ার জন্য গেলে কতিপয় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক দিয়ে তাকে উদ্দেশ্য করে অকথ্য ও অশ্লীল ভাষায় স্লোগান দেন। এ নিয়ে স্থানীয়রা প্রতিবাদ করলে এ ঘটনাটি ঘটে।

মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ নুরুচ্ছফা বলেন, গত ২৪ এপ্রিল মাদ্রাসার সভাপতি অতিরিক্ত জেলা প্রশাসকের একটি চিঠি পাওয়ার পর মাদ্রাসার অন্যান্য প্রতিনিধিদের নিয়ে বৈঠক ও ওই চিঠির উত্তর দেওয়ার আগে অধ্যক্ষ আবদুল গফুর দলবল নিয়ে মাদ্রাসায় ডুকে। এ সময় মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করলে আবদুল গফুরের লোকজন অর্তকিত হামলা চালিয়ে মাদ্রাসার শিক্ষার্থীসহ ও ২ জন শিক্ষককের ওপর হামলা করে আহত করেন।

এরই মধ্যে তিনজন শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুত্বর হওয়ায় তাদেরকে চমেক হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে জানান তিনি। 

মিটিং বিষয়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বলেন, ‘অসুস্থ থাকায় মিটিং যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে লিখিতভাবে কপি প্রেরণ করা হয়েছে।’

চন্দনাইশ থানার ওসি মো. নুরুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কোনো পক্ষই লিখিত অভিযোগ দেননি।