সম্পত্তি নিয়ে বিরোধ মীমাংসার ক্ষেত্রে মামলা না করেও দ্রুত নিজের প্রাপ্য সম্পত্তি বুঝে পেয়েছেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার আবু তৈয়ব। দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে তিনি নানা সমস্যার মধ্যে পড়েছিলেন। তবে অবশেষে চট্টগ্রাম জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের মাধ্যমে তার মায়ের সম্পত্তি বুঝে পেয়েছেন তিনি।
আবু তৈয়ব বলেন, আমি মামলা করতে পারতাম না কারণ আমার আর্থিক সামর্থ্য ছিল না। কিন্তু লিগ্যাল এইডের সহায়তায় মাত্র ৯ মাসে আমি আমার প্রাপ্য সম্পত্তি ফিরে পেয়েছি।
লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে আবেদনের পর তৈয়বের সম্পত্তির মীমাংসায় ৮ দফা বৈঠক ও সার্ভেয়ারের মাধ্যমে জায়গা পরিমাপ করা হয়। এর ফলস্বরূপ, বিকল্প বিরোধ নিষ্পত্তির (এডিআর) মাধ্যমে তার মায়ের প্রাপ্য নাল জমি, ভিটেবাড়ি এবং পুকুরসহ সম্পত্তি বুঝে পান তিনি।
এ ছাড়া, এই প্রক্রিয়ায় তৈয়ব এবং তার মামাতো ভাইয়ের মধ্যে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন হয় যা আগে সম্পত্তির বিরোধে বন্ধ ছিল।
চট্টগ্রাম জেলা লিগ্যাল এইড অফিসের সিনিয়র সহকারী জজ রূপণ কুমার দাশ জানান, অনেক সময় আদালতে বছরের পর বছর চলে যায়, কিন্তু লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে অনেক দ্রুত সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান করা হয়। গত এক বছরে, চট্টগ্রাম লিগ্যাল এইডে জমি-সংক্রান্ত ২৬৪টি দেওয়ানি মামলা এসেছে যার মধ্যে ১৯৫টি মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।
তিনি বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের ক্ষেত্রে সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান করার জন্য আমাদের কাজ চলছে। জমিসংক্রান্ত সমস্যাগুলো প্রধান ফোকাসে রয়েছে যেহেতু এসব বিরোধ বেশি উঠে আসে।
এ ছাড়া, চট্টগ্রাম আদালত প্রাঙ্গণে আয়োজিত জাতীয় আইনগত সহায়তা দিবসের অনুষ্ঠানে আলোচনা হয় যেখানে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষকে আরও সচেতন করার চেষ্টা করা হয় যেন তারা সহজে লিগ্যাল এইডের সাহায্য পায়।
লিগ্যাল এইডের মাধ্যমে অনেক অসহায় মানুষ তাদের মামলা নিষ্পত্তি করে দ্রুত সঠিক অধিকার পেয়ে যাচ্ছেন। চট্টগ্রাম জেলা লিগ্যাল এইড অফিসে এখন ১০০ জন আইনজীবী আছেন যারা সরকারি খরচে হাজার হাজার মামলার দায়িত্ব পালন করছেন।
জাতীয় আইনগত সহায়তা সংস্থা ২০০১ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে দেশের প্রতিটি আদালতে লিগ্যাল এইড কার্যালয় রয়েছে। চট্টগ্রামের বাসিন্দারা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবনের ৬ তলায় অবস্থিত লিগ্যাল এইড কার্যালয়ে সরাসরি যেতে পারেন অথবা ১৬৪৩০ নম্বরে ফোন করে সাহায্য চাইতে পারেন।
এভাবেই লিগ্যাল এইড কার্যালয়ের মাধ্যমে হাজার হাজার মানুষ তাদের আইনি সমস্যা সমাধান করছেন এবং এই ব্যবস্থা মামলাজট কমাতে সহায়তা করছে।
তথ্যসূত্র: প্রথম আলো।