ঢাকা মঙ্গলবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৫

বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষে সফল মেহেদী 

রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৯, ২০২৫, ০২:৩১ পিএম
বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছের পুকুরে খাবার দিচ্ছেন উদ্যোক্তা মেহেদী। ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

অল্প জায়গায় বেশি উৎপাদনের লক্ষ্যে রাজশাহীর চারঘাটে বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষে সফলতা পেয়েছেন মেহেদী হাসান নামের এক যুবক। ইউটিউব দেখে এই পদ্ধতিতে মাছ চাষে আগ্রহী হন তিনি। এ প্রক্রিয়ায় স্বাভাবিকের চেয়ে চার গুণ বেশি মাছ উৎপাদন সম্ভব বলে জানান এ উদ্যোক্তা।

তার সফলতায় প্রতিদিন দূর-দূরান্ত থেকে বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষের পরামর্শ নিতে আসছেন নতুন উদ্যোক্তারা। 

উদ্যোক্তা মেহেদী হাসান উপজেলার ইউসুফপুর ইউনিয়নের বাদুড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা। তিনি রাজশাহী কলেজের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। পরে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ফিশারিজে মাস্টার্স করেন তিনি। উপজেলায় তিনিই প্রথম সম্পূর্ণ নিজ অর্থায়নে আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষ শুরু করেন।

 

জানা যায়, ফিশারিজ বিষয়ে মাস্টার্স শেষ করার পরে মেহেদী হাসান নিজ এলাকায় পুকুর ইজারা নিয়ে মাছ চাষ শুরু করেন। তিনি ইউটিউব দেখে বটম ক্লিন পদ্ধতিতে মাছ চাষে উদ্বুদ্ধ হন। এরপর ২০২১ সালের শুরুতে বাড়ির পাশের ৫০ শতক জমিতে ৪ হাজার বর্গফুট জায়গায় গড়ে তোলেন ‘অরগানিক ফিশ ফার্ম’ নামের মাছের খামার। মাছ ও মাছের খাবার, সর্বক্ষেত্রে জৈব পদ্ধতি অনুসরণ করেন তিনি। পানিতে অ্যামোনিয়া কমানোর জন্য রেসওয়ে পদ্ধতি অনুসরণ করেন তিনি।   

সরেজমিন দেখা যায়, প্রায় ২০ লাখ টাকা ব্যয়ে এই ফিশ ফার্ম গড়ে তুলেছেন মেহেদী। ফার্মে দুটি ট্যাংক রয়েছে, যার আয়তন ৪ হাজার বর্গফুট। মাত্র ১২০ দিনে এই ফার্মে ৮ হাজার কেজি মাছ উৎপাদন হয়। মাছের খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করছেন নিজের উৎপাদিত গমের আটা, গমের ভুসি এবং কোয়ালিটি ব্র্যান্ডের অরগানিক ফিড। তার খামারে বর্তমানে কৈ, শিং ও গুলশা মাছ চাষ করা হচ্ছে।  

খামারের মালিক মেহেদী হাসান বলেন, ছোটবেলা থেকেই ইচ্ছা ছিল গ্রামে কিছু করা। উদ্দেশ্য ছিল নিজের কর্মসংস্থানের পাশাপাশি গ্রামের মানুষের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। এই ইচ্ছা থেকেই অরগানিক ফিশ ফার্ম নামে খামার শুরু করি।

তিনি আরও বলেন, প্রাথমিক অবস্থায় ২টি ট্যাংকে প্রায় ৪ হাজার বর্গফুট জায়গায় শিং, কৈ ও গুলশা জাতের তিন প্রজাতির মাছ চাষ করেছি। গত দেড় বছরে এই মাছ চাষে খরচ হয়েছে প্রায় ৫ লাখ টাকা। তবে এ পর্যন্ত প্রায় ১১ লাখ টাকার মাছ বিক্রি করেছি। আরও কিছু মাছ খামারে আছে। মাছের পোনা নওগাঁ ও বগুড়া থেকে সংগ্রহ করি। এ জন্য মাছের উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তবে বর্তমানে নিজেই পোনা উৎপাদনের কার্যক্রম শুরু করেছি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, বটম ক্লিন রেসওয়ে পদ্ধতিতে মাছ চাষ দেশে একেবারে নতুন। আমি নতুন যোগদান করেছি। আমি খোঁজ নিয়ে দেখব।