ভোলার লালমোহন উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে দুলছে কৃষকের স্বপ্নের ফসল ধান। আর ১২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে ধান কাটা সম্পন্ন করবেন তারা।
ভালো ফলন হওয়ায় লাভের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকরা। কৃষি বিভাগ বলছে, আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ উপজেলায় এবার ১৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার ধান পাওয়া যাবে।
কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে লালমোহন উপজেলায় ১০ হাজার ২৪০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে, উফশী জাতের ব্রি ধান-৬৭, ৭৪, ৮৮, ৮৯, ১০০, ১০১, ১০২ এবং ১০৪। এ ছাড়াও দুর্বার, এসএল-৮, এসিআই-১-সহ আরও কয়েকটি হাইব্রিড জাতের ধান চাষ করেছেন কৃষকরা।
এ বছর কৃষকদের আবাদকৃত জমি থেকে প্রায় ৬৬ হাজার ৫৬০ মেট্রিক টন ধান উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে বাজারদর অনুযায়ী ১৬৬ কোটি ৪০ লাখ টাকার ধান পাওয়া যাবে বলে কৃষি বিভাগের আশা। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় চাষিরা এবার আশানুরূপ ফলন পাবেন।
কালমা ইউনিয়নের ১ নম্বর ওয়ার্ডের লেজছকিনা এলাকার কৃষক মো. আসাদুজ্জামান খান বলেন, কৃষি অফিসের পরামর্শে ২৫০ শতাংশ জমিতে ব্রি ধান-১০১ চাষ করেছি। শুরুতে সেচের পানির সংকট থাকলেও পরে সমাধান হওয়ায় সুন্দরভাবে আবাদ করতে পেরেছি। বর্তমানে জমিতে আশানুরূপ ফলন হয়েছে।
একই এলাকার কৃষক মো. মাকসুদুর রহমান বলেন, কয়েক বছর ধরে নিয়মিত আমন ও বোরো ধানের চাষ করে আসছি। এবার ৬৬ শতাংশ জমিতে ব্রি ধান-৭৪ চাষ করেছি। সব মিলিয়ে প্রায় ২৫ হাজার টাকা খরচ হলেও ফলন ভালো। আশা করছি, ৫০ থেকে ৫৫ হাজার টাকার ধান বিক্রি করতে পারব।
চরভূতা ইউনিয়নের কর্তারকাচারি এলাকার কৃষক মো. ইসমাইল হোসেন বলেন, এবার ৩৩ শতাংশ জমিতে ধান চাষ করেছি। খরচ হয়েছে প্রায় ১৩ হাজার টাকা। আশা করছি, অন্তত ২৮ মণ ধান পাব, যার বাজারমূল্য প্রায় ২৮ হাজার টাকা হবে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আবু হাসনাইন বলেন, শুরুর দিকে সেচের পানির সংকট থাকলেও কৃষকরা তা দ্রুত কাটিয়ে উঠেছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ফলন ভালো হয়েছে।
তিনি বলেন, মাঝেমধ্যে ক্ষতিকর পোকা-মাকড়ের আক্রমণ হলেও আমাদের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা কৃষকদের পাশে থেকে প্রয়োজনীয় সহায়তা দিয়েছেন। কৃষকদের পাশে আছি। চেষ্টা করছি, যাতে তারা কোনোভাবেই ক্ষতির মুখে না পড়েন।