বগুড়ার ধুনট-কাজিপুর উপজেলার সীমান্ত এলাকায় যমুনা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়েছে বিরল প্রজাতির মাছ। স্থানীয়রা এটিকে বলছেন টাইগার মাছ।
তবে মাছটির প্রকৃত নাম সাকার মাউথ ক্যাটফিশ।
মঙ্গলবার (২৯ এপ্রিল) দুপুরে যমুনা নদীতে মাছ ধরার সময় অন্য মাছের সঙ্গে স্থানীয় জেলেদের জালে আটকা পড়ে এ মাছ। নদীতে সাধারণত এমন মাছ মেলে না। তাই অদ্ভুত এ মাছ দেখতে উৎসুক জনতা ভিড় করেন।
এর আগেও যমুনা নদীর কাজিপুরের নাটুয়ারপাড়া এলাকায় জেলেদের জালে বেশ কয়েকটি সাকার মাছ ধরা পড়ে।
মাছের শরীরে বাদামি রং এবং কালো রঙের ডোরাকাটা ছাপ রয়েছে। মাছটি কাঁটাযুক্ত, তবে কোনো আঁশ নেই। মুখটা শরীরের তুলনায় বড়। এ বৈশিষ্ট্যের কারণে স্থানীয় লোকজন এর নাম দেন টাইগার মাছ।
প্রায়ই জেলেদের জালে একই প্রজাতির আরও মাছ ধরা পড়ছে এ নদীতে। জালে ধরা পড়া মাছের ওজন ৫০০ গ্রাম থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হয়ে থাকে।
যমনা নদীর চরাঞ্চলের স্কুলশিক্ষক আল-আমিন বলেন, যমুনা নদী থেকে প্রায়ই এ প্রজাতির মাছ ধরে জেলেরা। প্রতিদিন স্কুলে যাতায়াতের পথে তাদের মাছ ধরার দৃশ্য দেখা যায়। তারা মাছগুলো বিভিন্ন হাটবাজারে বিক্রির জন্য নিয়ে যায়। বিশেষ করে চর এলাকার হাট-বাজারে এ প্রজাতির মাছ বেশি পাওয়া যায়।
ধীরেন, অলক, জুড়ান ও বলরামসহ বেশ কয়েকজন জেলে বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে যমুনা নদীতে মাছ ধরে জীবিকা নির্বাহ করছি। নদীতে অন্যান্য মাছের সঙ্গে এ প্রজাতির মাছ দু’একটি করে জালে ধরা পড়ছে। এ ধরনের মাছ আগে আমরা কখনো দেখিনি। মাছটি খাওয়ার উপযোগী কি না তাও জানি না। মাছ বিক্রি করে সংসার চলে। আমরা যে ধরনের মাছ পাই সব হাটবাজারে বিক্রি করতে নিয়ে আসি।’
বগুড়া জেলা মৎস্য কর্মকর্তা কালিপদ রায় বলেন, সাকার মাছ নদী কিংবা জলাশয়ের একেবারে তলায় থাকে। এ মাছ দেশীয় প্রজাতির মাছের ডিম ও রেণু খেয়ে মাছের বংশ বিস্তারে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। এ মাছ যেকোনো পরিবেশে বাঁচতে পারে এবং দ্রুত বংশবৃদ্ধির কারণে দেশীয় প্রজাতির মাছের সঙ্গে খাদ্য ও বাসস্থান নিয়ে প্রতিযোগিতা করে।
তিনি বলেন, সর্বোপরি সাকার মাছ জলজ জীববৈচিত্র নষ্ট করে। মাছটি কেউ পেয়ে থাকলে মেরে ফেলার পরামর্শ দিচ্ছি। সাধারণ মানুষের মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য বিভিন্ন এলাকায় লিফলেট-পোস্টার বিতরণ করা হচ্ছে।