রাণীশংকৈল (ঠাকুরগাঁও) প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ৯ মে, ২০২৪, ০৩:০৪ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

নানা সমস্যায় জর্জরিত ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

অব্যবস্থাপনায় ধুঁকছে স্বাস্থ্যখাত, নানা সমস্যায় জর্জরিত রাণীশংকৈল উপজেলার নেকমরদ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। ফলে কাক্সিক্ষত সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ইউনিয়নের সাধারণ মানুষ।
চিকিৎসকসহ অধিকাংশ স্টাফদের দায়িত্ব পালনে অনীহা থাকায় চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন মানুষ। ইচ্ছামতো অফিসে আসা-যাওয়া করেন চিকিৎসক ও স্টাফরা। ঘণ্টার পর ঘণ্টা রোগী ও তাদের স্বজনদের অপেক্ষা করতে হয় চিকিৎসকদের জন্য। দীর্ঘ তিন বছর ধরে শূন্য
রয়েছে গুরুত্বপূর্ণ পদগুলো।

চাহিদার তুলনায় কম জনবল আর অব্যবস্থাপনার কারণে চরমভাবে ধুঁকছে এখানকার ইউনিয়ন পর্যায়ের স্বাস্থ্য খাত খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১১ সালে জন-সাধারণের চিকিৎসক সেবা নিশ্চিত করতে নেকমরদ বাজারে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র। এই
ইউনিয়নে বসবাসরত প্রায় ২৭ হাজার মানুষের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন মাত্র ২ জন তাদের মধ্যে ১ উপ সহকারী মেডিকেল অফিসার, অন্য জন ফার্মাসিস্ট।

দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনায় বেহাল দশা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র চলে দায়িত্বরতদের মেজাজ-মর্জির ওপর ভিত্তি করে। দিনের অধিকাংশ সময়ই খুঁজে পাওয়া যায় না চিকিৎসক ও স্টাফদের। তিন বছরে দুই দিন রোগী দেখতে এসেছেন এম বি বি এস ডাক্তার কাক্সিক্ষত সেবা না পেয়ে বাধ্য হয়ে বাইরের ক্লিনিকে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হয় রোগীদের।

সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, স্বাস্থ্য কেন্দ্রে ঢুকার পথে চাটলাই শুকাতে দেওয়া হয়েছে। দরজা, জানালা ও ওয়াশরুম গুলো ভাঙ্গাচোরা অবস্থায় পরে আছে, নেই গেট, ভেঙে ঝুলে আছে সাইন বোর্ড, আশেপাশের জায়গা গুলোতে ময়লা স্তূপ করে রাখা হয়েছে। স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ভিতরে ময়লা আবর্জনার ছড়াছড়ি। উপ-সহকারী অফিসারের দায়িত্ব পালন করেছেন ফার্মাসিস, তিনি রোগী দেখে প্রেসক্রিপশন লিখেছেন ও ঔষধ দিচ্ছেন। এলাকার মানুষ বলছে স্বাস্থ্য কেন্দ্র যেনো ছাগল দিয়ে হালচাষের অবস্থায় পরিনত হয়েছে।

সাবেক ইউপি সদস্য জবাইদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন ভুক্তভোগী জানান, এটি স্বাস্থ্য কেন্দ্র না ব্যবসা কেন্দ্র বাহিরে থেকে কিছু বুঝার উপায় নেই। এলাকার অনেক মানুষ এখানে আসে স্বাস্থ্য সেবা নিতে কিন্তু উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার মাহিনুর
আক্তার রোগীদের সাথে খারাপ আচরণ করে। কখনো অফিসে আসে ১০ টায় আবার ১ টায় চলে যায়‌। আবার কখনো তাকে অফিসে দেখা যায় না। ফার্মাসিস্ট মদন মোহনকে ওষুধ দেওয়াসহ চিকিৎসার সব কাজ করতে হয়। স্বাস্থ্য সেবার মান যদি এমন হয় তাহলে তো এটি থাকার
থেকে না থাকাই ভালো। এলাকাবাসীর দাবি এখানে প্রতিদিন এমবিবিএস ডা.আসুক এবং প্রাপ্য সেবা টুকু দিক।

নেকমরদ ইউনিয়ন উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার মাহিনুরের কাছে তার বিরুদ্ধে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি আপনাদের সাথে এ বিষয়ে কেনো কথা বলবো না। যদি কিছু বলতে হয় আমার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাকে বলবো’।

উপজেলা পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আব্দুস সামাদ বলেন, ‘অব্যবস্থাপনার বিষয়টি সত্যি তবে সেটির কাজ করার জন্য ৩৯ লক্ষ টাকার বরাদ্দ হয়েছে। উপ-সহকারী মেডিকেল অফিসার মাহিনুরের বিরুদ্ধে অনেকেই আমাকে অভিযোগ করেছে তদন্ত সাপেক্ষে এর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ওখানে ডা. প্রয়োজন তবে উপজেলায় ডা. সংকটের কারণে আপাতত ডা. দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না’।

মন্তব্য করুন