ঢাকা মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর, ২০২৪

টি-ব্যাগের চা কীভাবে ক্ষতির কারণ হতে পারে

এসএ সোনিয়া

প্রকাশিত: জুন ২৯, ২০২৪, ০৭:৩৭ এএম

টি-ব্যাগের চা কীভাবে ক্ষতির কারণ হতে পারে

ছবি: সংগৃহীত

প্রথম দিকে চীন, জাপানে চা ছিল মূলত ঔষধ। মানুষ কেবল স্বাস্থ্য সুরক্ষার জন্যই তা পান করত।  চীনের সিচুয়ান প্রদেশের লোকেরা সর্বপ্রথম চা সেদ্ধ করে ঘন লিকার করে খেতে শেখে। ১৬১০ সালে পর্তুগিজদের হাত ধরে ইউরোপে ঢুকে পড়ে চা।

১৬৫০ সালে চীন বাণিজ্যিকভাবে চায়ের উৎপাদন শুরু করে। পরে ১৭০০ সালে ব্রিটেনে জনপ্রিয়তা পায় চা। তাদের মাধ্যমেই ভারতীয় উপমহাদেশে চায়ের আগমন।
উনিশ শতকে টি ব্যাগের আগমন চায়ের জনপ্রিয়তা বাড়িয়ে দেয়। ফলে আরও সহজ হয়ে গেলো চা পান। তবে টি ব্যাগরে আবিষ্কারক নিয়ে খানিকটা বিতর্ক আছে।

প্রতিটি জিনিসের যত সুবিধা তত অসুবিধাও থাকে। আমাদের আশপাশে যা কিছু আছে তা দেখলেই এ কথাটি অনুমান করা যায়। তেমনি টি ব্যাগের উপকারিতার পাশাপাশি অসংখ্য ক্ষতিকর দিকও রয়েছে। আসুন টি ব্যাগের সমস্যা কি তা নিয়ে কথা বলি-

১. পেটে মরিচা ঢুকে

অনেক টি ব্যাগ কোম্পানি তাদের টিব্যাগ প্রস্তুতিতে স্টেপলার পিন ইউজ করে যা সাধারণত ঝং ধরে যায়। ও গরম পানির সাথে গলে পেটে যায়। যা খুবিই ক্ষতিকর এরফলে সম্প্রতি ভারতে এধরণের টিব্যাগকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

২. প্লাস্টিক খাওয়াঃ
টি ব্যাগের উপরের ব্যাগের কাগজটি মূলত একটি পলিথিন জাতীয় প্লাস্টিকের। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই প্লাস্টিকের অনেক ছোট কণা চা এর মধ্যে মিশে যায় যা পরবর্তীতে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে।

২০২১ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকগিল বিশ্ববিদ্যালয়ের রাসায়ন বিভাগের অধ্যাপক টুফেঙ্কজি ও তার সহকারী গবেষকরা পরীক্ষা করে দেখেন, একটি টি-ব্যাগ থেকেই চায়ের সঙ্গে মেশে এক হাজার একশ কোটি (১১ বিলিয়ন) মাইক্রোপ্লাস্টিক এবং তিনশ কোটি ন্যানোপ্লাস্টিক কণা। একই বছর ‘এনভায়রনমেন্টাল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনোলজি’ নামের মার্কিন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনে এই তথ্য সামনে এসেছে।

৩. ক্যানসারের ঝুঁকি বাড়ায় :
কয়েকটি গবেষণায় দেখা গেছে, টি-ব্যাগে এপিক্লোরোহাইড্রিন নামের কারসিনোজেন বা ক্যানসার তৈরি করা উপাদান থাকে। পানিতে টি-ব্যাগ ছাড়ার পর এই উপাদান সক্রিয় হয়ে উঠে। অবশ্য টি-ব্যাগের একাধিক কাপ চা পান করলে তেমন ক্ষতি হয় না। তবে নিয়মিত টি-ব্যাগ দিয়ে চা পান করলে শরীরের জন্য তা বড় ধরনের ক্ষতি করতে পারে। আরো ভয়ের বিষয় হলো, অনেক টি-ব্যাগ নাইলন বা প্লাস্টিক দিয়ে তৈরি করা, যা ক্যানসার সৃষ্টির জন্য দায়ী।

৪. মাটি ও পোকাও থাকে
অনেক ক্ষেত্রে টি-ব্যাগের ভেতরে মাটি ও ছোট পোকার অস্তিত্ব পাওয়া গেছে। তাই যেহেতু আপনি জানেন না টি-ব্যাগের ভেতর কি আছে, তাই তা এড়িয়ে চলা ভালো।

৫. ওজন কমাতে ব্যর্থ হয় টি-ব্যাগ
গ্রিন টি ওজন কমায়, এটা অনেকটা পরীক্ষিত। তবে গ্রিন টি-ব্যাগের চা পান করে আশানুরূপ ফল পাওয়া যায় না। কারণ টি-ব্যাগে গ্রিন টি প্রক্রিয়াজাত করার কারণে এটি তার অ্যান্টি অক্সিডেন্ট, নিউট্রেশন হারায়। তাই গ্রিন টি-ব্যাগ ব্যবহার করে চা পান করে আপনি কোনো ভালো ফলই পাবেন না। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা তাই গ্রিন টি-ব্যাগ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন। শুধু গ্রিন টি-ব্যাগই না, অন্য সব টি-ব্যাগও যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা।

৬. টি-ব্যাগে চায়ের ভিন্নতা থাকে না
খোলা চা পাতা সাধারণত চার ধরনের হয়- ব্ল্যাক, হোয়াইট, গ্রিন ও ওলোং। কিন্তু টি-ব্যাগে এ ধরনের ভিন্নতা পাওয়া যায় না।

৭. টি-ব্যাগের চা তেতো :
ব্ল্যাক বা গ্রিন চায়ে নির্দিষ্ট গন্ধ থাকে, কিন্তু টি-ব্যাগে ডাস্ট ও অন্য কেমিক্যাল থাকে বলে তা চায়ের স্বাদ তেতো করে দেয়।

Link copied!