রূপালী প্রতিবেদক

প্রকাশিত: ৪ জুলাই, ২০২৪, ০৪:৫৪ পিএম

অনলাইন সংস্করণ

তিস্তা প্রকল্পের জন্য প্রস্তুত চীন: রাষ্ট্রদূত

ঢাকাস্থ চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন। ছবি : সংগৃহীত

তিস্তা মহাপরিকল্পনা প্রকল্পে ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করতে চায় চীন। তাদের কোনও আপত্তি নেই বলে জানিয়েছেন ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন।

বৃহস্পতিবার (৪ জুলাই) কূটনীতিক সাংবাদিকদের সংগঠন ডি ক্যাব আয়োজিত আলোচনা সভায় এসব কথা বলেন তিনি।

এ সময় তিস্তা প্রকল্প নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে কোনো উত্তেজনা থাকার কথা অস্বীকার করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ।

বাংলাদেশে নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত ইয়াও ওয়েন বলেছেন, তিস্তা বাংলাদেশের নদী এবং এখানে যে প্রকল্পই নেওয়া হোক না কেন সে বিষয়ে বাংলাদেশ সিদ্ধান্ত নেবে। তিনি বলেন, 'তিস্তা নদী বাংলাদেশের ভূখণ্ডে। তাই এটি আপনার নদী। তিস্তা নদী নিয়ে যে প্রকল্পই হোক না কেন, সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার সত্যিকার অর্থে বাংলাদেশের। সেই সিদ্ধান্তকে আমাদের সবার সম্মান করতে হবে।'

আগামী সপ্তাহে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরকে সামনে রেখে ডিপ্লোম্যাটিক করেসপন্ডেন্টস অ্যাসোসিয়েশন বাংলাদেশ এ আলোচনার আয়োজন করে।

এক প্রশ্নের জবাবে রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে চীন তিস্তা নদী ব্যবস্থাপনা প্রকল্পের প্রস্তাব দিয়েছে এবং তারা এ বিষয়ে বাংলাদেশের প্রতিক্রিয়ার অপেক্ষায় রয়েছে।

ভারত ও চীন যৌথভাবে তিস্তা প্রকল্পে কাজ করতে পারবে কি না, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, 'চীন প্রস্তুত কিন্তু বাংলাদেশকেই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।' তিনি প্রকল্পটি নিয়ে ভারত ও চীনের মধ্যে কোনো উত্তেজনা থাকার কথা অস্বীকার করেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার চীন সফরে সম্ভাব্য চুক্তির বিষয়ে তিনি বলেন, এ বিষয়ে এখনই বলা তার পক্ষে সম্ভব নয়।তবে অবকাঠামো, বাণিজ্য, আর্থিক খাত, ডিজিটাল অর্থনীতি, শিক্ষা, মিডিয়া সহযোগিতা এবং বাংলাদেশের দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়ন নিয়ে দুদেশের মধ্যে আলোচনা হবে বলে জানান তিনি।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আসন্ন চীন সফর প্রসঙ্গে ইয়াও ওয়েন বলেন, প্রধানমন্ত্রীর চীন সফরে এদেশের অবকাঠামো উন্নয়ন, বিনিয়োগ বৃদ্ধি, বাণিজ্য সম্প্রসারণ, কৃষি সহযোগিতা, ফ্রি ট্রেড অ্যাগ্রিমেন্ট, ডিজিটাল ইকোনোমি, শিক্ষা, গণমাধ্যমের সঙ্গে সহযোগিতা নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়াও দুই দেশের জনগণের মধ্যে সংযোগ বৃদ্ধির বিষয়ে আলোচনা হবে। আবার রোহিঙ্গা সংকটও আলোচনায় বিশেষ গুরুত্ব পাবে।

ইতোমধ্যে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের পথ উন্মুক্ত করতে চীন কাজ করছে জানিয়ে রাষ্ট্রদূত বলেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি অত্যন্ত জটিল হয়ে পড়েছে। কিন্তু যত জটিলই হোক, আমরা চেষ্টা করে যাব যুদ্ধবিরতি আনার। যুদ্ধবিরতি না হলে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন কঠিন। আমরা আরাকান আর্মির সঙ্গেও কথা বলেছি এ বিষয়ে। আরাকান আর্মিসহ সব আঞ্চলিক সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে আমাদের যোগাযোগ রয়েছে।

তবে সহসাই রোহিঙ্গা সংকটের সমাধান সম্ভব নয়, এমনটা ইঙ্গিত দিয়ে তিনি বলেছেন, মিয়ানমারের অভ্যন্তরীণ সংঘাতের কারণে রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে তৃতীয়পক্ষীয় আলোচনা সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। তবে এটিকে আমরা বন্ধ বলতে চাই না। এটাও নিশ্চিত নই যে, কবে প্রত্যাবাসন শুরু হবে। আমরা চেষ্টা করছি যাতে, গৃহযুদ্ধ থামে এবং রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের দ্বার উন্মুক্ত হয়।

ইয়াও ওয়েন আরও বলেন, বাংলাদেশকে উদীয়মান অর্থনীতির দেশ হিসেবে দেখে চীন। এ ধারাবাহিকতায় উন্নয়ন চলতে থাকলে আগামী ৫ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় হবে ৪ হাজার ডলার। আন্তর্জাতিক বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশ ও চীনের দৃষ্টিভঙ্গি একই। ফলে আমাদের সম্পর্কের একটি কমন জায়গা রয়েছে।

মন্তব্য করুন