সড়কে ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ

প্রায় দের কিলোমিটার কাঁচা সড়ক দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় সড়কে ধানের চারা লাগিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছে স্থানীয় গ্রামবাসী। দীর্ঘদিন বেহাল রাস্তা সংস্কার না করায় ক্ষোভে ধানের চারা লাগিয়ে অভিনব প্রতিবাদ জানিয়েছেন শরীয়তপুরের জাজিরার পুর্ব নাওডোবা ইউনিয়নের মোহর আলী হাজী কান্দির এলাকাবাসী।

শনিবার (৬ জুলাই ) বিকেলে উপজেলার পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের মোহর আলী হাজী কান্দির এলাকাবাসী এ অভিনব প্রতিবাদ জানান।

স্থানীয়রা জানান, রাস্তাটি প্রায় ১২ থেকে ১৫টি গ্রামের ৩০ হাজার লোকের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম। বর্ষার সময় রাস্তাটি কর্দমাক্ত হয়ে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ে। তবে এবছর পাশের শুক্কুর হাওলাদার কান্দি গ্রামে একটি কালভার্টের কাজের সরঞ্জামাদি ও মাটি মাহিন্দ্রা (ট্রাক্টর) গাড়ির মাধ্যমে বহন করায় রাস্তাটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বিষয়টি স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানালেও তারা কোনো উদ্যোগ নেননি। তাই রাস্তায় ধানের চারা লাগিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন তারা।

রাস্তা দিয়ে চলাচলকারী আব্দুর রহিম বলেন, রাস্তাটি ঠিক করার জন্য মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে বারবার জানানো হয়েছে। কিন্তু তারা বিষয়টি গুরুত্ব দিচ্ছেন না। সামান্য বৃষ্টি হলে রাস্তাটি চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। অথচ একটি কালভার্টের মাটি মাহিন্দ্রা গাড়ি (ট্রাক্টর) দিয়ে নিচ্ছেন। তাতে রাস্তাটি গর্ত হয়ে পানি জমে একাকার হয়ে যাচ্ছে সে দিকে তাদের কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই। সেজন্য আমরা এলাকাবাসী রাস্তায় ধানের চারা রোপণ করে প্রতিবাদ জানিয়েছি।

মোহর আলী হাজী কান্দির বাসিন্দ নাছিমা নামের এক গৃহিণী বলেন, এক মাসের বাচ্চা নিয়ে টিকা দেওয়ার জন্য বের হয়েছিলাম। বাচ্চাকে নিয়ে বাড়ির সামনের রাস্তায় আসার পরেই কাদায় পড়ে গিয়ে ব্যথা পেয়েছি দুজনেই। এখান দিয়ে যে মাহিন্দ গাড়ি গুলো চলে তাদের না চলার অনুরোধ জানাই। নয়তো আমরা পরবর্তীতে গাড়ির সামনে দাঁড়াবো।

পূর্ব নাওডোবা পাবলিক উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আশরিফা, সামিয়া ও সোহাগী আক্তার শোভার সাথে কথা হলে তারা বলেন, প্রতিদিন স্কুলে যাওয়া-আসা করতে কষ্ট হয়। জুতা খুলে হাতে নিয়ে এ রাস্তায় চলাচল করতে হয়। এতে কাদা লেগে জামা কাপড় নষ্ট হয়ে যায়। রাস্তাটি পাকা হলে আমাদের জন্য অনেক সুবিধা হতো বলেন তারা।

এবিষয়ে পূর্বনাওডোবা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আলতাফ খান বলেন, রাস্তাটি এমন বেহাল হয়েছে সে বিষয়ে আমকে কেউ কিছু বলেনি। তবে রাস্তাটির সামনেই একটি কালভার্টের  কাজ চলছে। সেখানে ট্রাক্টর দিয়ে মালামাল নেওয়ায় হয়তো রাস্তাটির বেহাল দশা হয়েছে। তবে রাস্তায় ধান লাগানোর বিষয়টি সম্পর্কে আমি জানি না।

এবিষয়ে জানতে চাইলে জাজিরা উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) সাদিয়া ইসলাম লুনা বলেন, এবিষয়ে স্থানীয় কেউ বা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা আমাকে জানায়নি। বিষয়টি খোজ নিয়ে দেখব।