ঢাকা রবিবার, ০৬ অক্টোবর, ২০২৪

চাঁদপুরে গুরুত্বপূর্ণ জমজমিয়া খাল অবৈধভাবে দখল করে বালু ব্যবসা

চাঁদপুর প্রতিনিধি

প্রকাশিত: জুলাই ৮, ২০২৪, ০৬:২৭ এএম

চাঁদপুরে গুরুত্বপূর্ণ জমজমিয়া খাল অবৈধভাবে দখল করে বালু ব্যবসা

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ ডাকাতিয়া নদী থেকে শুরু হওয়া মতলব দক্ষিণ পর্যন্ত দীর্ঘ প্রায় ২০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যরে অতি গুরুত্বপূর্ণ সরকারি জমজমিয়া খালটি অবৈধভাবে দখল অব্যাহত রয়েছে। বিশেষ করে মতলব দক্ষিণ উপজেলার নারায়নপুর বাজারের উত্তর অংশে খাল দখল করে বালু ব্যবসা করছেন কয়েকজন ব্যবসায়ী। যার ফলে খালটি সরু হয়ে পরিবেশের বিপর্যয় সৃষ্টি হচ্ছে। আবার এসব ব্যবসায়ীদের নিষিদ্ধ ট্রাক্টর চলতে গিয়ে সড়কে লেগে থাকে যানজট। এসব কারণে ওই অঞ্চলের মানুষ প্রতিনিয়ত দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন।

সরেজমিন নারায়নপুর বাজার অংশে গিয়ে দেখা গেছে, ব্রিজের পূর্ব ও পশ্চিম পাশে একাধিক বালুর ব্যবসা। খালের অংশ দখল করে বালুর স্তুপ করে রাখা হয়েছে। ধনাগোদা নদী হয়ে এই খালে প্রবেশ করে বালুবাহি বাল্কহেড। একই সাথে ব্যবসায়ীদের অনেক মালামাল খালটি থাকার কারণে খুব সহজে পরিবহনের সুযোগ হয়েছে।

এই খালটি সাধারণ ব্যবসায়ীদের জন্য আর্শিবাদ হলেও এক শ্রেণির অসাধু ব্যবসায়ীরা এখন ড্রেজার মেশিন সংযোগ ও দখল করে খালটির অস্তিত্ব বিলীন করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। তারা বিভিন্নভাবে রাজনৈতিক দলের নাম ভাঙ্গিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করতে ব্যস্ত। তাদের এসব ব্যবসার জন্য পরিবেশ বিপর্যয় এবং খালটি সরু হওয়ার কারণে বন্যার সময় দেখা দিবে বড় ধরণের সমস্যা। পরিবেশ অধিদপ্তরও বিষয়টি সম্প্রতি দৃষ্টিতে এনেছেন।

গুরুত্বপূর্ণ জমজিময়া খালটির পুরনো ঐতিহ্য ফিরিয়ে আনতে ইতোমধ্যে ৬৪ জেলা খাল খনন প্রকল্পের আওতায় পরিকল্পনাতে প্রস্তাব রাখা হয়েছে। সরকারি বরাদ্দ পাওয়াগেলে এটির খনন কাজ করবে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড। মতলব দক্ষিণ উপজেলার দায়িত্বরত মেঘনা ধনাগোদা সেচ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী জয়ন্তু পাল বলেন, এই খালটি ডিসি খাল। তবে ৬৪ জেলা খাল খননের প্রস্তাবনার তালিকায় জমজমিয়া খালটিও রয়েছে। 

খালের দুই পাশ দখল করে বালু, ইটসহ নির্মাণ সামগ্রীর ব্যবসা করেন মোতালেব খান, ফজলুল করিম সেলিম, নাছির উদ্দিন মিয়াজী, মজিবুর রহমানসহ আরো কয়েকজন। এদের মধ্যে মোতালেব খান বলেন, আমরা খাল দখল করিনি। খালের মধ্যে আমাদের আরও ৪০ফুট আছে। তবে দক্ষিণ পাশে দখল থাকতে পারে। তবে আমাদের দীর্ঘদিনের দাবী সরকারিভাবে আমাদের অংশটুকু বুঝিয়ে দিতে।

বক্তব্যের জন্য মজিবুর রহমান ও নাছির উদ্দিন মিয়াজীকে খুঁজে তাদের প্রতিষ্ঠানে পাওয়া যায়নি। তবে ফজলুল করিম সেলিম বলেন, আমরা সরকারি কোন খাল কিংবা সম্পত্তি দখল করিনি। তবে তিনি বালু ব্যবসার কথা স্বীকার করেছেন। 

পরিবশে অধিদপ্তর চাঁদপুর জেলা কার্যালয়ের উপপরিচালক মো. মিজানুর রহমান বলেন, পরিবেশের বিপর্যয় হয় এমন যে কোন বিষয়ে আমরা কাজ করছি। সরকারি খাল দখল হলে আমরা অবশ্যই সেখানে যাব। এ ক্ষেত্রে উপজেলা প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করলে আমরা সর্বাত্মক সহযোগিতা করবো। 

মতলব দক্ষিণ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফাতিমা সুলতানা বলেন, এই অঞ্চলের লোকদের জন্য খালটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এটি কোনভাবেই দখল হতে দেয়া যাবে না। সরকারি এই খালটির পানি প্রবাহ ঠিক রাখতে এবং অবৈধভাবে কোন দখল থাকলে তা আমরা দেখে ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।

Link copied!