ঢাকা বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৫

ছুটির দিনে বইমেলায় প্রাণের উচ্ছ্বাস

মেলায় অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ দর্শনার্থীসহ প্রকাশকদের

সেলিম আহমেদ
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৫, ০৮:৩১ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

শুক্রবার মানে বইমেলার অন্যরকম দিন। কারণ সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ওই দিন কর্মব্যস্ত নগরবাসী ঐতিহ্য আর বইয়ের উঠানে ভিড় করেন। শুধু বইপ্রেমী নয়; কবি, সাহিত্যিক, লেখক, প্রকাশক আর সংস্কৃতিপ্রেমীদেরও মিলনমেলা ঘটে বইমেলায়। গতকালই ছিল এমন চিত্র। সন্ধ্যায় বইমেলার দুই প্রাঙ্গণে ছিল না তিল ধারনের ঠাঁই। এত মানুষের উপস্থিতিতে প্রাণ পেয়েছিল বইমেলা। তবে মেলার সপ্তম দিনে এসে নানা অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন অনেকেই। 

এদিকে ছুটির দিন থাকায় গতকাল বেলা ১১টায় খুলে দেওয়া হয় মেলার দুয়ার। দুপুর ১টা পর্যন্ত শিশুদের জন্য ছিল ‘শিশু প্রহর’। নামটা হয়েছে ষোলোআনা সার্থক। দিনের শুরুতে মেলা সত্যিই অন্যরকম ছিল খুদে পাঠকদের কারণে। 

বিকেলে ঠিক উল্টো চিত্র। চারদিকে মানুষ আর মানুষ। বড় প্যাভিলিয়ন থেকে শুরু করে ছোট ছোট স্টল- সর্বত্রই তারা ঘুরে দেখেছেন। তবে যে পরিমাণে মানুষ হয়েছে, সেই পরিমাণ কেনাবেচা হয়নি বলে জানিয়েছেন প্রকাশকেরা। তবে মেলা নিয়ে আশাবাদী তারা। প্রকাশকেরা বলছেন, মেলায় উপস্থিতি আশানুরূপ হলেও কেনাকাটা খুবই কম। তবে সামনের দিনগুলোতে কেনাবেচা বাড়বে বলে প্রত্যাশা তাদের।

এদিকে সপ্তম দিনে এসেও মেলার অব্যবস্থাপনা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন দর্শনার্থীসহ প্রকাশকদের অনেকেই। গতকাল টিএসসি দিয়ে মেলায় প্রবেশে দেখা যায় দুই পাশে গহনা, খেলনাসহ সারি সারি নানা পণ্য নিয়ে বসেছেন ভ্রাম্যমাণ বিক্রেতারা। মেলার ভেতরেও বাদাম-চানাচুর বিক্রি করতে দেখা গেছে অনেককে। বেশ কয়েকজন ভিক্ষুককেও ভিক্ষা করতে দেখা গেছে মেলা প্রাঙ্গণে, যা মেলার ইতিহাসে কখনো দেখা যায়নি। এছাড়া মেলায় ধুলোর ওড়াউড়ির কারণে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন অনেকেই। 

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক প্রকাশক বলেন, ‘১০ বছর ধরে আমরা মেলায় স্টল দিই, কিন্তু কখনো এত অব্যবস্থাপনা দেখিনি। মেলার প্রবেশপথে কঠোরতা অবলম্বন করলে ভেতরে এই পরিবেশ তৈরি হতো না। এটা নিয়ে আরও কড়াকড়ি করা উচিত।’
উত্তরা থেকে আসা আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘মেলার ভেতরে প্রবেশ করে এটাকে বইমেলা মনে হচ্ছে না। মনে হচ্ছে কোনো ভ্রাম্যমাণ গতানুগতিক মেলা। মেলার ভেতরে হকার থাকবে কেন? এছাড়া মেলার অনেক স্টল দেখলাম এখনো খালি পড়ে আছে। আর ধুলোর ওড়াউড়িতে দম বন্ধ হয়ে আসছে।’

কথা প্রকাশের ব্যবস্থাপক মো. ইউনুছ বলেন, ‘মেলায় এখনো প্রত্যাশিত কেনাবেচা শুরু হয়নি। তবে মেলার শেষ দুই সপ্তাহে কেনাবেচা বাড়বে।’

আনন্দ-উচ্ছ্বাসে শিশুদের আবৃত্তি প্রতিযোগিতা : শিশুদের অংশগ্রহণে বইমেলায় সকাল থেকে মেতে ওঠে প্রাণের উচ্ছ্বাসে। মেলার প্রথম শিশু প্রহরে ছিল দুরন্ত শিশুদের অনন্ত উপস্থিতি। নির্ধারিত সময় সকাল ১০টা থেকে শুরু হয় শিশু-কিশোর আবৃত্তি প্রতিযোগিতা। শিশুদের বাঁধভাঙা উচ্ছ্বাসে উপস্থিতি ছিল উল্লেখযোগ্য। 

সরেজমিনে দেখা গেছে, মেলার সোহরাওয়ার্দী উদ্যান অংশে ছোটদের মজার মজার সব বইয়ের স্টল ও বিনোদন কেন্দ্র নিয়ে সাজানো হয়েছে শিশু চত্বর। শিশু চত্বরে প্রবেশ করলেই মনে হয় এ যেন কোনো শিশুরাজ্য, যেখানে শিশু-কিশোরদের রাজত্ব। এখানে রয়েছে শিশু-কিশোরদের সায়েন্স ফিকশন, ভূতের গল্প, কৌতুক, ছড়াসহ নানা ধরনের বই।