একুশে বইমেলা

তরুণ-তরুণীদের সেলফির হিড়িক

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১২, ২০২৫, ০৯:৩৪ পিএম

তরুণ-তরুণীদের সেলফির হিড়িক

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০২৫। লেখক-পাঠকের মিলনমেলা, মাতৃভাষা বাংলার ইতিহাস-ঐতিহ্যে অংশ হিসেবে পরিচিত বইমেলা চলে পুরোটা ফেব্রুয়ারি মাসজুড়ে। ঐতিহ্যসমৃদ্ধ এ মেলায় নিজেদের পছন্দের বইসহ প্রিয় লেখকের বই সংগ্রহ করতে আসেন পাঠকরা। 

সরেজমিনে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের বিস্তীর্ণ প্রান্ত ঘুরে দেখা যায়, গতকাল বুধবার ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো। ছিল সেলফি তোলার হিড়িক, আর মেলার ভেতর ঘুরে বেড়ানোর দৃশ্য। বইমেলার সঙ্গেই কালী মন্দির খাবারের দোকানগুলোয় ছিল দীর্ঘ লাইন। তবে, বইয়ের স্টলগুলোয় তেমন ভিড় ছিল না। বুধবার ছিল মেলার ১২তম দিন।

এক তরুণী বলেন, ‘বইমেলায় এসে সেলফি না তুললে হবে না। আমি যে মেলাতে এসেছি, সেটা তো তার স্মৃতি, এ ছবি ফেসবুক, ইনস্ট্রাগ্রামসহ বিভিন্ন জায়গায় পোস্ট করব। মেলার উৎসবমুখর পরিবেশের সঙ্গে নিজেদের একাত্ম করার জন্য সেলফি তুললাম। 

মিরপুর বাঙলা কলেজের শিক্ষার্থী মো. ইমরান বলেন, ‘একসঙ্গে বইমেলায় এসেছি, বন্ধুদের সঙ্গে ফ্রেমে বন্দি করলাম।’ তাদের মতো এমন অনেককেই বইমেলায় সেলফি তুলতে দেখা যায়। হাতে নতুন বই না থাকলেও ক্যামেরায় বন্দি ঠিকই হচ্ছে। যে দলে তরুণদের সংখ্যাই বেশি। এদিকে দিন দিন মেলায় বাড়ছে ক্রেতা-দর্শনার্থী। আর এ ভিড়ের আসরে তরুণদের সংখ্যাটাই বেশি। তবে অন্য বয়সি দর্শনার্থীর সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। 

প্রকাশক ও বিক্রেতারা জানান, কিছু কিছু তরুণ-তরুণী মেলায় আসে বই কিনতে নয় বরং ফেসবুক, ইউটিউব সেলিব্রিটিদের সঙ্গে সেলফি তুলতে। যারা কোনো নিয়মিত লেখকও না। আপনারা দেখেছেন, গতবার এক লেখক যেমন ভাইরাল হয়েছিল তেমনিভাবে এবারও এক লেখকের সঙ্গে ছবি তুলতে মেলাতে রীতিমতো হিড়িক লেগেছিল। ত

বে তরুণ লেখকদের গতানুগতিক থ্রিলার, উপন্যাস, গল্প-কবিতার বই মূলধারার সাহিত্যকে তেমন একটা প্রভাবিত করতে পারেনি। মূলধারার সাহিত্য ঠিকই মধ্যবয়সি ও বিশ্ববিদ্যালয়-কলেজপড়ুয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে আদান-প্রদান চলছে।

প্রকাশকরা বলছেন, বইমেলায় দর্শনার্থীদের দেখে মনে হচ্ছে তাদের বেশির ভাগই এসেছেন মেলায় একটা কিছুটা সময় কাটাতে এবং তা কেবল বইকেন্দ্রিক নয়। তাদের হাত বেশি খোঁজে মোবাইল ফোনে ছবি তোলার স্থান। আর সুযোগ পেলেই উঠে যায় সেলফি বা গ্রুপ ফটো।

নতুন বই
বুধবার বইমেলার ১২তম দিনে মেলা শুরু হয় বিকেল ৩টায় এবং চলে রাত ৯টা পর্যন্ত। এদিন নতুন বই আসে ৮৯টি। এদিন বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হয় ‘স্লোগান: বাঙালি জাতীয়তাবাদের ধারাবাহিকতায় বাকশাল গঠন, বাংলা সাহিত্যের দায় ও ২৪-এর গণঅভ্যুত্থান’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন হাসান রোবায়েত। আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন মঈন জালাল চৌধুরী। সভাপতিত্ব করেন ফরহাদ মজহার। 

সভাপতির বক্তব্যে ফরহাদ মজহার বলেন, ‘আমাদের দেশে ফ্যাসিবাদী চিন্তাচেতনা গড়ে ওঠার পেছনে যে মাইলফলকগুলো রয়েছে, বিভিন্ন আন্দোলন-সংগ্রামে ব্যবহৃত স্লোগানগুলোর মধ্য দিয়ে সে মাইলফলক আমরা অনুধাবন করতে পারি।’

বৃহস্পতিবারের অনুষ্ঠান  
বৃহস্পতিবার অমর একুশে বইমেলার ১৩তম দিন মেলা শুরু হবে বিকেল ৩টায় এবং চলবে রাত ৯টা পর্যন্ত। বিকেল ৪টায় বইমেলার মূলমঞ্চে অনুষ্ঠিত হবে ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ২০২৪’ শীর্ষক আলোচনা অনুষ্ঠান। প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন সারোয়ার তুষার। আলোচনায় অংশগ্রহণ করবেন যোবায়ের আল মাহমুদ এবং নুসরাত সাবিনা চৌধুরী। সভাপতিত্ব করবেন মাহবুব মোর্শেদ।  
 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!