ঢাকা শনিবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২৪

রম্য গল্প: উচ্চবংশীয় বেকার

মির্জা হাসান মাহমুদ

প্রকাশিত: অক্টোবর ১৩, ২০২৪, ০২:৪১ পিএম

রম্য গল্প: উচ্চবংশীয় বেকার

ফাইল ছবি

শফিক একজন উচ্চবংশীয় বেকার। সে প্রতিদিন ড্রইংরুমের আরামদায়ক সোফায় বসে চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে ভাবে, “আজও কোনো চাকরির ইন্টারভিউয়ের ডাক এলো না। এত বড় বংশের ছেলে হয়ে তো আর যেকোনো কাজ করতে পারি না! আমার একটা সম্মানজনক চাকরি দরকার।“ তার বন্ধুরা সবাই উচ্চপদস্থ চাকরিতে ব্যস্ত, আর তার দিন কাটে শুয়ে শুয়ে চাকরির কথা ভাবতে ভাবতে। একদিন তার মা এসে বললেন, “বাবা, তুমি এমন এক বংশের সন্তান, যার পূর্বপুরুষরা রাজ্য শাসন করতেন। তারা দেশের জন্য যুদ্ধে নেমেছেন, রাজসভায় বিচার করেছেন। আর তুমি কি না, চা খেতে খেতে দিন পার করছো! তুমি কি এভাবেই তোমার জীবন চালাতে চাও?” শফিক এক মুহূর্ত ভেবে মায়ের দিকে তাকিয়ে বলে, “মা, সময় বদলে গেছে। এখন আর রাজত্ব মানে যুদ্ধ করা বা রাজসভায় বসা নয়। এখন রাজত্ব করতে লাগে কম্পিউটার, ইন্টারনেট, আর সোশ্যাল মিডিয়া। আমি এই ডিজিটাল যুগের রাজা!” মা হেসে দিয়ে বললেন, “ তোমার এই এই ডিজিটাল রাজ্য চালানোর জন্য দ্রুত কোনো কাজ খুঁজে নাও; নইলে ভবিষ্যতে এই বংশের সব সম্পত্তি বিক্রি করে দিতে হবে। তোমার পূর্বপুরুষদের মান-মর্যাদা রক্ষা করতে হলে, তোমাকে কিছু করতেই হবে।“ শফিক চিন্তিত মুখে বলে, “মা, তুমি ঠিকই বলছো। আমি কাল থেকেই কাজ খুঁজতে শুরু করবো। তবে মনে রেখো, রাজারা কখনোই কোনো কাজে তাড়াহুড়ো করে না! তাদের কাজের একটা গাম্ভীর্য থাকে।“ এই বলে সে আবার সোফায় শুয়ে পড়ে, আর মোবাইলে গেম খেলতে শুরু করে। তার মা মাথা নেড়ে বললেন, “ হয়তো তুমিই বংশের শেষ রাজা। দেখে মনে হচ্ছে, গেম খেলেই রাজত্ব শেষ করবে!” শফিক হাসিমুখে উত্তর দিল, “মা, রাজারা সবসময়ই জানে তাদের কী করতে হবে। সময় আসলে ঠিকই কাজ শুরু করবো। আপাতত, এই নতুন গেমটা একটু উপভোগ করি! তুমিও চাইলে বসতে পারো।” মা  শফিকের দিকে করুণ চোখে তাকিয়ে হতাশ হয়ে চলে গেলেন। সোফায় শুয়ে গেম খেলে আর চা খেতে খেতে শফিক তার ডিজিটাল রাজত্ব চালিয়ে যেতে থাকল।  

আরবি/ আরএফ

Link copied!