ঢাকা শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৫

বিশ্ব হরমোন দিবস উপলক্ষে গোলটেবিল বৈঠক

রূপালী ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১৯, ২০২৫, ১১:৩০ পিএম
ছবি: বিজ্ঞপ্তি

বাংলাদেশের সঠিক কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও ধারণা করা হয় মোট জনসংখ্যার প্রায় ৫০ শতাংশ মানুষ হরমোন জটিলতায় ভুগছেন। 

বয়স ও লিঙ্গ ভেদে ভিন্ন ভিন্ন উপসর্গ ও জটিলতা দেখা গেলেও সচেতনতার অভাবে চিকিৎসা সেবা পায়না।

শনিবার (১৯ এপ্রিল) রাজধানীর তেজগাঁয়ে বিশ্ব হরমোন দিবস উপলক্ষে ‘হরমোন রোগ সম্পর্কে জানুন, সচেতন হোন এবং প্রতিরোধে এগিয়ে আসুন সুচিকিৎসার জন্য হরমোন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ  নিন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা এসব কথা বলেন।

অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড্রোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশ (এসেডবি) ও দৈনিক সমকাল-এর যৌথ আয়োজনে রেনাটা পিএলসি’র সহযোগিতায় গোলটেবিল বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়।

বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অ্যাসোসিয়েশন অব ক্লিনিক্যাল অ্যান্ড্রোক্রাইনোলজি অ্যান্ড ডায়াবেটোলজিস্ট অব বাংলাদেশ (এসেডবি) এর সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. ফরিদ উদ্দিন।

এ সময় তিনি বলেন, অনেকেরই সুগার বেশি কিন্তু ডায়াবেটিস নয়, এরকম যদি ধরা হয় তবে দেখা যায় যে প্রায় ৭০ থেকে ৮২ শতাংশ মানুষই জানে না যে তার হরমোনের সমস্যা আছে। সচেতনতার অভাবে এমনটি ঘটছে। হরমোনের পরে থাইরয়েড সমস্যার পরিসংখ্যান যদি দেই তবে দেখা যায় ৪ থেকে ৫ কোটি লোকের থাইরয়েড সমস্যা রয়েছে। হরমোন ও থাইরয়েড সমস্যার কথা বললে প্রায় ৮ কোটি লোক সচেতনতার অভাবে নানা ধরণের রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।

বাংলাদেশের অনেক অভিভাবকই জানে না যে তাদের শিশুরা হরমোন সমস্যার কারণে মায়ের বুকের দুধ টেনে খেতে পায় না কিংবা অস্বাভাবিক দুর্বলতা অনুভব করছে বা মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল দেরিতে শুরু হচ্ছে। 

এসব রোগের মূল কারণই হচ্ছে তাদের শিশুরা কোনো না কোনোভাবে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

এ ধরনের সামাজিক সমস্যায় মানুষদের সচেতন করে তোলা জরুরি বলে মনে করেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ডা. জোবায়দা নাজনীন।

ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের কনসালটেন্ট এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট ডা.  মো. মাহমুদ হাসান তার বক্তব্যে বলেন বাংলাদেশে প্রায় ২৭ হাজার শিশু হরমোনজনিত টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত।

অন্যদিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. ইন্দ্রজিৎ প্রসাদ বলেন অতিরিক্ত স্টেরয়েড ব্যবহার করার কারণে রোগীর অকারণে হাড় শুকিয়ে যাওয়া, হাড় ক্ষয় হয়ে নরম হয়ে যাওয়া এবং রোগীর স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে।

সমকাল পত্রিকার ‘ডাক্তার বাড়ি’ পাতার বিভাগীয় সম্পাদক অধ্যাপক ডা. আব্দুল্লাহ শাহরিয়ার এর সূচনা বক্তব্যের মাধ্যমে গোলটেবিল বৈঠকটি শুরু হয়।

এছাড়া অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মেডিকেল কলেজের এন্ডোক্রাইনোলজি প্রাক্তন অধ্যাপক ডা. মো. রুহুল আমিন, স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ মিডফোর্ড হাসপাতালের এন্ডোক্রাইনোলজি ও মেটাবলিজম বিভাগের বিভাগীয় প্রধান অধ্যাপক ডা. এ কে এম আমিনূল ইসলাম, ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরোসায়েন্সেস ও হাসপাতালের সহকারি অধ্যাপক ডা. মো. আতিকুর রহমান, ইবনে সিনা দয়াগঞ্জের কনসালটেন্ট এন্ডোক্রাইনোলজিস্ট ডা. মো. মোবারক হোসেন, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. নুসরাত সুলতানা, বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজের এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান সহযোগী অধ্যাপক ডা. ইয়াসমিন আক্তার, বাংলাদেশ মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি গবেষক এন্ডোক্রাইনোলজি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক ডা. মাশফিকুল হাসান ও শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজের ডায়াবেটিস, থাইরয়েড ও হরমোন রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. মো সোহেল রানা ভূঁইয়া প্রমুখ।

গোলটেবিল বৈঠকে রেনাটা পিএলসি’র হেড অব মার্কেটিং হরমোন ও ডার্মা পোর্টফোলিও মো. খায়রুল ইসলাম উপস্থিত সবাইকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন।