রবিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৫

ফেসবুক


ইউটিউব


টিকটক

Rupali Bangladesh

ইনস্টাগ্রাম

Rupali Bangladesh

এক্স

Rupali Bangladesh


লিংকডইন

Rupali Bangladesh

পিন্টারেস্ট

Rupali Bangladesh

গুগল নিউজ

Rupali Bangladesh


হোয়াটস অ্যাপ

Rupali Bangladesh

টেলিগ্রাম

Rupali Bangladesh

মেসেঞ্জার গ্রুপ

Rupali Bangladesh


রহিম শেখ

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৫, ০১:০১ পিএম

জমানো টাকার অর্ধেকের বেশি কোটিপতিদের

রহিম শেখ

প্রকাশিত: এপ্রিল ৪, ২০২৫, ০১:০১ পিএম

জমানো টাকার অর্ধেকের বেশি কোটিপতিদের

ফাইল ছবি

দেশের ব্যাংক-বহির্ভূত আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যত টাকা জমা আছে, তার অর্ধেকের বেশি কোটিপতিদের। গত ডিসেম্বর শেষে দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় মোট আমানতের পরিমাণ ছিল ৪৮ হাজার ২৫ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৫৫ শতাংশের বেশি বা ২৬ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা কোটিপতিদের আমানত। 

এসব আমানতকারী আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় ১ কোটি থেকে শুরু করে ৩০০ কোটি টাকার বেশি আমানত রেখেছেন। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে ৩০০ কোটি টাকার বেশি আমানত হিসাব রয়েছে একটি। এই হিসাবেই রয়েছে ৪১৯ কোটি টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে সবচেয়ে বেশি আমানত রয়েছে ঢাকা বিভাগে।

 ঢাকা বিভাগে আমানতের পরিমাণ ৪৪ হাজার ৪৩৫ কোটি টাকা। সবচেয়ে কম আমানত বরিশাল বিভাগের, ৭৮৫ কোটি টাকা। আর্থিক প্রতিষ্ঠানে বর্তমানে হিসাবসংখ্যা ৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৭৫ ছাড়িয়েছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর শেষ আর্থিক অবস্থা নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের করা এক প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য পাওয়া গেছে। 

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশে সরকারি, বেসরকারি ও বিশেষায়িত মিলিয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান রয়েছে ৪০টি। এর মধ্যে সরকারি মালিকানাধীন তিনটি, বেসরকারি মালিকানাধীন ৩২টি ও বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠান পাঁচটি। এই ৪০টি আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গত ডিসেম্বর শেষে গ্রাহক বা আমানতকারীর হিসাব ছিল ৪ লাখ ১৩ হাজার ৮৭৫টি। 

এসব হিসাবের মধ্যে কোটি টাকার বেশি আমানত জমা আছে এমন হিসাবের সংখ্যা ৫ হাজার ২৯৭। আর ৫ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ১ কোটি টাকার কম আমানত রেখেছেন এমন আমানতকারীর হিসাব রয়েছে ৪ লাখ ৮ হাজার ৫৭৮টি।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যত আমানত ছিল, তার প্রায় ৫৫ শতাংশই রয়েছে মাত্র সোয়া ১ শতাংশ আমানতকারীর হিসাবে। 

আর পৌনে ৯৯ শতাংশ আমানতকারীর হিসাবে ছিল মোট আমানতের সাড়ে ৪৪ শতাংশ, অর্থাৎ আর্থিক প্রতিষ্ঠানের ৪ লাখ ৮ হাজার ৫৭৮ জন আমানতকারী মিলে জমা রেখেছেন ২১ হাজার ৬১৯ কোটি টাকা। তার বিপরীতে মাত্র ৫ হাজার ২৯৭ জন আমানতকারী জমা রেখেছেন ২৬ হাজার ৪০৬ কোটি টাকা।

অর্থনীতিবিদেরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে দেশে বৈষম্য প্রকট আকার ধারণ করেছে। একশ্রেণির মানুষ রাজনৈতিক ক্ষমতা ব্যবহার করে অর্থবিত্তের মালিক হয়ে উঠছেন। তার বিপরীতে উচ্চ মূল্যস্ফীতিসহ জীবনযাত্রার খরচ বেড়ে যাওয়ায় মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্তসহ বিপুল জনগোষ্ঠীর সঞ্চয়ে টান পড়ছে। দেশে বৈষম্য এখন যে পর্যায়ে পৌঁছেছে, সেটিকে চরম উদ্বেগজনক বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদেরা। তাই বৈষম্য কমাতে ধনীদের ওপর কর বাড়ানোর প্রস্তাব করে আসছেন তারা।

এ বিষয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফল পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মাননীয় ফেলো মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, গত কয়েক দশকে দেশের আর্থসামাজিক অনেক সূচকে ভালো প্রবৃদ্ধি হয়েছে। মানুষের জীবনমানের উন্নতির পাশাপাশি আয়ও বেড়েছে। তবে সম্পদ বণ্টনের ক্ষেত্রে বড় ধরনের অন্যায্যতা রয়েছে। 

ফলে ধনী-গরিবের বৈষম্য প্রকট হচ্ছে। আয়বৈষম্য যে ক্রমেই বাড়ছে, তার প্রতিফলন আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমানো আমানতের পরিসংখ্যানেও উঠে এসেছে। একদিকে সীমিত ও মধ্যম আয়ের মানুষের আয় কমছে, অন্যদিকে ব্যবসায়ীসহ প্রভাবশালীদের অর্থবিত্ত বাড়ছেই। অন্তর্ভুক্তিমূলক যে সমাজের প্রত্যাশা আমরা করছি, এই প্রবণতা তার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, দেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানে যেসব আমানত রয়েছে, তার প্রায় এক-পঞ্চমাংশই রয়েছে ১ থেকে ৫ কোটি টাকার হিসাবধারীদের মধ্যে। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোয় এ রকম আমানত হিসাবের সংখ্যা ৪ হাজার ১১৮। এসব হিসাবে গত ডিসেম্বর শেষে জমা অর্থের পরিমাণ ছিল ৮ হাজার ৫২৫ কোটি টাকা, যা আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট আমানতের ১৭ দশমিক ৭৫ শতাংশ। 

আর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ অর্থ রয়েছে ৫ থেকে ১০ কোটি টাকার আমানতকারীর হিসাবে। গত ডিসেম্বর শেষে এ ধরনের আমানত হিসাব ছিল ৬৬৯টি। এসব হিসাবে জমা মোট আমানতের পরিমাণ ছিল প্রায় ৪ হাজার ৯২৪ কোটি টাকা, যা আর্থিক প্রতিষ্ঠানের মোট আমানতের ১০ দশমিক ২৫ শতাংশ। অর্থাৎ, আর্থিক প্রতিষ্ঠানে গত বছর শেষে যত আমানত ছিল, তার ৩০ শতাংশই রয়েছে ১ থেকে ১০ কোটি টাকা জমা রেখেছেন এমন আমানত হিসাবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০২৪ সালের ডিসেম্বর শেষে আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতে আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৪৮ হাজার ২৫ কোটি টাকা। গত সেপ্টেম্বরে এ খাতে আমানতের পরিমাণ ছিল ৪৭ হাজার ৮৩৮ কোটি টাকা। ফলে তিন মাসের ব্যবধানে এ খাতে আমানত বেড়েছে প্রায় ১৯১ কোটি ৮৩ লাখ টাকা। আগের প্রান্তিকে এ খাতে আমানত কমেছিল প্রায় ৬৮ কোটি টাকা। 

প্রতিবেদনে আরও দেখা যায়, আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর মোট আমানতের বেশির ভাগই ঢাকা বিভাগে। এর পরিমাণ প্রায় ৯২ দশমিক ৫৩ শতাংশ। এরপর চট্টগ্রাম বিভাগে ৪ দশমিক ৬২ শতাংশ, রাজশাহীতে শূন্য দশমিক ৯৬ শতাংশ, খুলনায় শূন্য দশমিক ৭৯ শতাংশ, সিলেটে শূন্য দশমিক ৫৬ শতাংশ, ময়মনসিংহে শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ, রংপুরে শূন্য দশমিক ১৯ শতাংশ এবং বরিশালে শূন্য দশমিক ১৬ শতাংশ রয়েছে।

 

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!