ঢাকা বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ ১০ ব্যাংক

শাহীনুর ইসলাম শানু

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪, ০১:২৩ এএম

নিরাপত্তা সঞ্চিতি রাখতে ব্যর্থ ১০ ব্যাংক

ছবি: সংগৃহীত

*১০ ব্যাংকের ঘাটতি ৩১ হাজার ৫৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা
*সবচেয়ে বেশি ঘাটতির মুখে ন্যাশনাল ব্যাংক

চলতি বছরের জুন প্রান্তিক শেষে প্রভিশন ঘাটতিতে (নিরাপত্তা সঞ্চিতি) রয়েছে ১০টি ব্যাংক। চার রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকসহ ব্যাংকগুলোর ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৩১ হাজার ৫৪৮ কোটি ৯৩ লাখ টাকা। এর মাধ্যমে ব্যাংকগুলোর ভঙ্গুর আর্থিক অবস্থার প্রতিচ্ছবি উঠে এসেছে।

ব্যাংকগুলোর মধ্যে রয়েছে রাষ্ট্রমালিকানাধীন অগ্রণী ব্যাংক, বেসিক ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক ও বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক। বেসরকারি খাতের মধ্যে রয়েছে ন্যাশনাল ব্যাংক, ঢাকা ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক, সাউথইস্ট ব্যাংক এবং আইএফআইসি ব্যাংক।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্যমতে, বেসরকারি খাতের নানা সমস্যায় জর্জরিত ন্যাশনাল ব্যাংক সবচেয়ে বেশি প্রভিশন ঘাটতির মুখে পড়েছে। ব্যাংকটির প্রভিশন বা নিরাপত্তা সঞ্চিতি ঘাটতির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৪ হাজার ৭০৩ কোটি ৯৬ লাখ টাকা।

বাংলাদেশ ব্যাংকের নিয়ম মতে, ব্যাংকগুলোকে পরিচালন মুনাফার শূন্য দশমিক ৫ থেকে ৫ শতাংশ সাধারণ ক্যাটাগরির ঋণের বিপরীতে নিরাপত্তা সঞ্চিতি হিসেবে রাখতে হয়। আর নিম্নমানের খেলাপিঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ২০ শতাংশ। কোনো সন্দেহজনক খেলাপিঋণের বিপরীতে রাখতে হয় ৫০ শতাংশ। তবে মন্দ বা লোকসান ক্যাটাগরির খেলাপিঋণের বিপরীতে ১০০ শতাংশ নিরাপত্তা সঞ্চিতি আলাদা রাখতে হবে।

নিরাপত্তা সঞ্চিতি বা প্রভিশন ঘাটতি ব্যাংকিং খাতের জন্য একটি অশনিসংকেত। এটি ব্যাংকগুলোর দুর্বল আর্থিক অবস্থার চিত্র তুলে ধরে, যা মূলত একটি ব্যাংকের উচ্চ খেলাপিঋণের ফল। জুন পর্যন্ত ব্যাংকিং খাতের সার্বিক প্রভিশন ঘাটতি ছিল ২৪ হাজার ৮১০ কোটি ৪৯ লাখ টাকা, যা ১০টি ব্যাংকের চেয়ে কম।

খাতসংশ্লিষ্টরা এ বিষয়ে বলেন, ব্যাংকের বর্তমান যে অবস্থা তাতে প্রভিশন ঘাটতি হবে। দিন দিন খেলাপিঋণ বাড়ছে। সম্প্রতি খেলাপিঋণ ২ লাখ কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে। বিশেষ করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোয় বেশি, তাই প্রভিশন ঘাটতি বাড়বে। শতভাগ প্রভিশন রাখা দরকার এখানে। প্রভিশন বাড়তে থাকলে ব্যাংক দুর্বল হয়ে পড়বে। প্রভিশন কমাতে হলে আগে খেলাপিঋণ কমাতে হবে। পাশাপাশি ঋণ দেওয়ার ক্ষেত্রে যাচাই-বাছাই করে দিতে হবে, যাতে টাকা আবার ফেরত আসে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের সর্বশেষ প্রতিবেদন বলছে, জুন শেষে ব্যাংকিং খাতে খেলাপিঋণের পরিমাণ ২ লাখ ১১ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা, যা ব্যাংকিং খাতের মোট ঋণের ১২ দশমিক ৫৬ শতাংশ। মার্চ পর্যন্ত ব্যাংক খাতে খেলাপিঋণের পরিমাণ ছিল ১ লাখ ৮২ হাজার কোটি টাকা। সে হিসাবে তিন মাসে খেলাপিঋণের পরিমাণ বেড়েছে ২৯ হাজার কোটি টাকার বেশি। এ সময়ে ঋণ বিতরণ বেড়েছে ৪২ হাজার ৫৪১ কোটি টাকা।

আরবি/জেডআর

Link copied!