রপ্তানি বাণিজ্যের আড়ালে মানিলন্ডারিংয়ের মাধ্যমে ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (প্রায় ১০০০ কোটি টাকা) বিদেশে পাচারের অভিযোগে বেক্সিমকো গ্রুপের কর্ণধার সালমান এফ রহমানসহ ২৮ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ১৭টি মামলা করেছে সিআইডি।
বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) সিআইডির অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান এ তথ্য জানান।
তিনি জানান..
মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন ও বিধি মোতাবেক পরিচালিত সিআইডির অনুসন্ধানে সালমান এফ রহমান (বেক্সিমকো গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান) এবং তার ভাই এ এস এফ রহমানের (বেক্সিমকো গ্রুপের চেয়ারম্যান) স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বেক্সিমকো গ্রুপের মালিকানাধীন মোট ১৭টি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। এসব প্রতিষ্ঠানের নামে ২০২১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে জনতা ব্যাংক পিএলসি লোকাল অফিস শাখা, দিলকুশা, মতিঝিল থেকে ৯৩টি এলসি/সেলস কন্ট্রাক্ট (বিক্রয় চুক্তি) গ্রহণপূর্বক এর বিপরীতে পণ্য রপ্তানি করে নির্ধারিত সময় অতিবাহিত হওয়ার পরেও রপ্তানিমূল্য প্রায় ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০০০ কোটি টাকা) বাংলাদেশে আনায়ন না করে বিদেশে পাচার করা হয়েছে।
সিআইডির আজাদ রহমান জানান, অনুসন্ধানে প্রাপ্ত রেকর্ডপত্র পর্যালোচনায় দেখা যায়, বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে প্রায় ৮৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ১০০০ কোটি টাকা) মূল্যমানের পণ্য সংযুক্ত আরব আমিরাতসহ বিভিন্ন দেশে রপ্তানি করে।
প্রতিষ্ঠান গুলো হলো..
১. অ্যাডভেঞ্চার গার্মেন্টস লিমিটেড
২. অ্যাপোলো অ্যাপারেলস লিমিটেড
৩. অটাম লুপ অ্যাপারেলস লিমিটেড,
৪. বেক্সটেক্স গার্মেন্টস লিমিটেড
৫. কসমোপলিটান অ্যাপারেলস লিমিটেড
৬. কোজি অ্যাপারেলস লিমিটেড
৭. এসেস ফ্যাশন লিমিটেড
৮. ইন্টারন্যাশনাল নিটওয়্যার অ্যান্ড অ্যাপারেলস লিমিটেড
৯. কাঁচপুর অ্যাপারেলস লিমিটেড
১০. মিডওয়েস্ট গার্মেন্টস লিমিটে
১১. পিয়ারলেস গার্মেন্টস লিমিটেড
১২. পিঙ্ক মেকার গার্মেন্টস লিমিটেড
১৩. প্ল্যাটিনাম গার্মেন্টস লিমিটেড
১৪. স্কাইনেট অ্যাপারেলস লিমিটেড
১৫. স্প্রিংফুল অ্যাপারেলস লিমিটেড
১৬. আরবান ফ্যাশনস লিমিটেড
১৭. উইন্টার স্প্রিন্ট গার্মেন্টস লিমিটেড
বাংলাদেশের বিদ্যমান আইন অনুযায়ী, পণ্য রপ্তানি করার পর রপ্তানিমূল্য ৪ মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন করার বাধ্যবাধকতা থাকা সত্ত্বেও যথাসময়ে রপ্তানি মূল্য বাংলাদেশে প্রত্যাবাসন না করে সালমান এফ রহমানসহ বেক্সিমকো গ্রুপের অন্যান্য স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কর্তৃক ওই অর্থ বিদেশে পাচার করার অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে।
সিআইডির এই কর্মকর্তা আরও জানান, বিদেশে রপ্তানি হওয়া পণ্যগুলোর মধ্যে বেশিরভাগ পণ্যই বেক্সিমকো গ্রুপের মালিক সালমান এফ রহমানের পুত্র আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমান এবং এ এস এফ রহমানের পুত্র আহমেদ শাহরিয়ার রহমানের যৌথ মালিকানাধীন RR Global Trading (FZE) এর শারজাহ, সংযুক্ত আরব আমিরাত এবং সৌদি আরবের ঠিকানায় রপ্তানি করা হয়েছে।
এছাড়া জার্মানি, নেদারল্যান্ড, যুক্তরাজ্য, তুরস্ক, শ্রীলঙ্কাসহ বিভিন্ন দেশেও পণ্য রপ্তানির মাধ্যমে রপ্তানি মুল্য বাংলাদেশে আনয়ন না করে আসামিরা পারস্পরিক যোগসাজশে বিদেশে পাচার করেছেন বলে প্রাথমিক তদন্তে জানতে পেরেছে সিআইডি।
আপনার মতামত লিখুন :