ঢাকা রবিবার, ১৯ জানুয়ারি, ২০২৫

সব পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও সবজিতে স্বস্তি

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৮, ২০২৫, ০৭:৪৬ পিএম

সব পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও সবজিতে স্বস্তি

ছবি: সংগৃহীত

গত কয়েক সপ্তাহ ধরে সবজির দাম তুলনামূলক কম। তবে এখনো সক্রিয় মধ্যস্বত্বভোগীরা। পাইকারি বাজার থেকে দেড় কিলোমিটার দূরত্বে হাতিরপুল খুচরা বাজার। এই দূরত্বে পরিবহন খরচও খুবই কম। তবুও দেড় কিলোমিটারের ব্যবধানে দাম বাড়ছে সবজি ভেদে এক থেকে দেড়গুণ।

কারওয়ান বাজারে প্রতি পিস ফুলকপি বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৩০ টাকা, সিম কেজি ১৫-২০ টাকা। বেগুন (লম্বা) ২৫ টাকা, বেগুন (গোল) ৪০ টাকা, করলা ৩০ টাকা, বরবটি ৪০ টাকা, মুলা ১৫ টাকা, লতি ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ২০ টাকা কেজি ও পটোল ৩০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। পেঁপে কেজি ২০ টাকা, গাজর ৩৫ টাকা, কাঁচা টমেটো ৩০ টাকা, দেশি পাকা টমেটো ৪০ টাকা, শালগম ২০ টাকা, শসা ৩০ টাকা ও গাজর  বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়। অথচ হাতিরপুল বাজারে সেই ফুলকপি প্রতি পিস ২৫-৩০ টাকা, লাউ প্রতি পিস ৬০ টাকা, সিম কেজি ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুন (লম্বা) ৪০ টাকা বেগুন (গোল) ৬০ টাকা, করলা ৪০-৫০ টাকা, বরবটি ৫০ টাকা, মুলা ২৫ টাকা, লতি ৬০ টাকা ও পটোল ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। মিষ্টিকুমড়া কেজি ৩৫ টাকা, পেঁপে কেজি ৩৫ টাকা, কাঁচা টমেটো ৪০ টাকা, দেশি পাকা টমেটো ৬০ টাকা, শালগম ৪০ টাকা, শসা ৫০ টাকা ও গাজর বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকায়।

সাপ্তাহিক ছুটির দিন বাজার করতে আসা বেসরকারি ব্যাংক কর্মকর্তা মো. আমীর হোসেন দুলু রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, আমি হাতিরপুল কাঁচাবাজার থেকে অনেক বছর ধরেই কেনাকাটা করি। বর্তমানে অন্যান্য সব পণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির মধ্যেও কম দামে সবজি কিনতে পারছি এটা স্বস্তির। তবে কারওয়ান বাজারে যে সবজি ২০ টাকায় বিক্রি হয়, এখান থেকে একই সবজি কিনতে হয়ে ৪০ টাকায়। হাতিরপুল কাঁচাবাজারে সবসময়ই অন্যান্য বাজার থেকে দাম বেশি থাকে। কেন বেশি থাকে সে উত্তর কারো জানা নেই।

হাতিরপুল বাজারের সবজি বিক্রেতা নুর উদ্দিন বলেন, এখানে দোকান ভাড়া বেশি। সঙ্গে আছে বিদ্যুৎ বিলসহ নানা খরচ। বউ, ছেলে-মেয়ে নিয়ে ভাড়া বাসায় থাকি। নতুন বছর শুরু না হতেই বাড়ি ভাড়া বেড়েছে। বেড়েছে সবকিছুর দামও। যে কারণে কারওয়ান বাজার কাছে হলেও আমাদের কিছুটা বেশি দামে বিক্রি না করলে পোষায় না।  

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাতিরপুল বাজার কমিটির একজন জানান, পাইকারি বাজার কাছে হলেও এখানে সিন্ডিকেটের বাইরে কোনো কিছুই হয় না। দাম নির্ধারণ থেকে শুরু করে, কে কীভাবে সবজি বিক্রি করবে সেসব ঠিক করে দেওয়া হয়। একইসঙ্গে সিন্ডিকেটও দলের বাইরে নয়। তাদের নির্দিষ্ট অর্থ প্রদান করতে হয়। কোনো দলের লোকজনকে অর্থ দিতে হয়Ñ এমন প্রশ্ন করলে, একপ্রকার পালিয়ে স্থান ত্যাগ করেন তিনি।  

বাড়ছে সব ধরনের চালের দাম: গতকাল শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ান বাজার, হাতিরপুল, লালবাগ, নবাবগঞ্জ ও পলাশী বাজার ঘুরে দেখা যায়, আবারও বাড়ছে সব ধরনের চালের দাম। বাড়তি দামে চাল কিনতে এসে বিপাকে সাধারণ মানুষ। গত দুই সপ্তাহ ধরে খুচরা বাজারে চালের দাম বাড়ছেই। এরই মধ্যে চালের দাম কেজিপ্রতি ৩ থেকে ৪ টাকা বেড়েছে।

নবাবগঞ্জ ও পলাশী বাজারের চাল ব্যবসায়ীরা দাবি করেন, সারাবিশ্বে চালের দাম বাড়ছে, পরিবহন ব্যয় বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে দেশে মজুত ঘাটতির কারণে দাম বাড়ছে চালের।

বাজার ঘুরে দেখা যায়, মোটা চালের কেজি ৬০ টাকা থেকে মানভেদে ৭০ টাকা। যা দুই সপ্তাহ আগেও ৫৪ থেকে ৬২ টাকার মধ্যে ছিল। চিকন চাল দুই সপ্তাহের ব্যবধানে ৭৬ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ৮০ থেকে ৮৫ টাকায়।

দেশের বাজারে কয়েক সপ্তাহের ব্যবধানে বাড়ছে চালের দাম। এর জন্য ‘মজুতদারি’কে দায়ী করে ইতোমধ্যে চাল আমদানির ঘোষণা দিয়েছে সরকার। খাদ্য মন্ত্রণালয় বলছে, বাজার স্থিতিশীল রাখতে নেওয়া হচ্ছে বিভিন্ন পদক্ষেপ। সরবরাহ চেইন এবং মজুত পরিস্থিতি আরও ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করার প্রয়োজন রয়েছে।

ক্রেতারা বলছেন, বর্তমানে শুধু সবজির দাম কিছুটা কম। তা ছাড়া নিত্যপ্রয়োজনীয় সব জিনিসের দাম বেশি। যা আমাদের দৈনন্দিন জীবনকে দুর্বিষহ করে তুলছে। গায়ে মাখার সাবান থেকে কাপড় পরিষ্কার করার গুঁড়া পাউডার সবকিছুর দাম বেড়েছে গেল কয়েক মাসে দুই থেকে তিনগুণ। যা দেখার কেউ নেই। আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের দুঃখ লাঘবে কোনো উদ্যোগ দেখছি না বর্তমান সরকারেরও।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!