বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখায় সুরক্ষিত ২৫ কর্মকর্তার লকার বা সেফ ডিপোজিটের কিছুই পায়নি দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। সাবেক ও বর্তমান এসব কর্মকর্তার নামে রেজিস্টারে কোনো লকার সুবিধা ছিল না। গতকাল রোববার বিকেল ৪টায় লকারের রেজিস্টার খাতা তল্লাশি শেষে বাংলাদেশ ব্যাংক ও দুদক এ তথ্য জানায়। এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে বাংলাদেশ ব্যাংকে পৌঁছায় দুদকের আট সদস্যের একটি দল। কেন্দ্রীয় ব্যাংক কর্মকর্তাদের লকার খুলতে দুদক পরিচালক সায়েমুজ্জামান এ দলের নেতৃত্ব দেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের বর্তমান ও সাবেক ২৫ কর্মকর্তার কোনো লকার সুবিধা নেই বলে জানান দুদক পরিচালক কাজী মোহাম্মদ সায়েমুজ্জামান। তিনি বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা বাংলাদেশ ব্যাংকের অভিযুক্ত কর্মকর্তাদের নামে লকার সুবিধা আছে কি না পরীক্ষা করতে এসেছিলাম।
ঢাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মেহেদি হাসানের উপস্থিতিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লকারের রেজিস্টার পরীক্ষা করে তাদের লকার সুবিধা পাওয়া যায়নি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদারসহ ২৫ কর্মকর্তার লকার সুবিধা আছে কি না সেটি দেখা হয়।
দুদকের এ কর্মকর্তা বলেন, দুদকের কাছে অনেক অভিযোগ রয়েছে। সেসব অভিযোগের ভিত্তিতে ভবিষ্যতে আদালতের নির্দেশক্রমে অন্য কর্মকর্তাদেরও সুবিধা আছে কি না সেটি দেখা হবে। কারো বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া গেলে বা প্রমাণ পাওয়া গেলে যত প্রভাবশালী হোক না কেন ছাড় দেওয়া হবে না।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র আরিফ হোসেন খান বলেন, আদালতের নির্দেশনাক্রমে দুদকের কর্মকর্তারা বাংলাদেশ ব্যাংকের লকারের রেজিস্ট্রার দেখেছিল। রেজিস্ট্রার যাচাই-বাছাই করে এই ২৫ কর্মকর্তার কোনো লকার সুবিধা পাননি। এ কারণে কোনো লকার আজ খোলা হয়নি। ভবিষ্যতে আদালতের নির্দেশনা অনুযায়ী অন্য কোনো ব্যক্তির লকার খোলার আদেশ পাওয়া গেলে খুলে দেখা হবে।
নিরাপত্তা বিভাগের এক কর্মকর্তা জানান, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে ৩১৩ জন কর্মকর্তার নামে লকার সুবিধা আছে। এর মধ্যে বেশিরভাগ লকার রয়েছে নারী কর্মকর্তাদের। রয়েছে বিভিন্ন ব্যাংকের ভোল্টের চাবি ও ব্যক্তিগত ডকুমেন্টস। ধারণা করা হচ্ছিল, এসব লকারে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ও বর্তমান মিলিয়ে ৩০০ উচ্চপদস্থ কর্মকর্তার অর্থসম্পদ ও অন্য মূল্যবান নথিপত্র সেফ ডিপোজিট আকারে রেখেছেন ২৫ কর্মকর্তা।
এসব লকারেই দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত অর্থসম্পদ বা সেগুলোর নথিপত্র রক্ষিত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তবে আদৌ তাদের নামে কোনো লকার সুবিধা নেই। গত ২৬ জানুয়ারি দুদক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর এসকে সুরের লকারে তল্লাশি করে প্রায় ৫ কোটি টাকার সম্পদের সন্ধান পাওয়া যায়। সে সম্পদ এখন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের জিম্মায় রাখা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :