ঈদ ঘিরে রেমিট্যান্সে জোয়ার অর্থনীতির গতি সঞ্চার করবে

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: মার্চ ২২, ২০২৫, ০৯:২৯ এএম

ঈদ ঘিরে রেমিট্যান্সে জোয়ার অর্থনীতির গতি সঞ্চার করবে

প্রতীকি ছবি

পবিত্র রমজান মাস পার করে কদিন পরই ঈদ। ঈদ সামনে রেখে পরিবার-পরিজনের কেনাকাটা ও অন্যান্য বাড়তি খরচ মেটাতে বেশি বেশি অর্থ পাঠাচ্ছেন প্রবাসীরা। এতে দেশে রেমিট্যান্সপ্রবাহ বৃদ্ধিতে নতুন রেকর্ড হতে যাচ্ছে। এ কারণে অর্থনীতির প্রধান সূচকগুলোর মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থায় থাকা প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্সে উল্লম্ফন দেখা দিয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর অর্থ পাচার কমেছে। একই সঙ্গে কমেছে হুন্ডি কারবারিদের দৌরাত্ম্যও। অন্যদিকে খোলাবাজারের মতোই ব্যাংকে রেমিট্যান্সের ডলারের দাম পাওয়া যাচ্ছে। এসব কারণে প্রবাসীরা বৈধপথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আগ্রহ দেখাচ্ছেন।

ঈদের আগে বৈধপথে অতীতের যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি পরিমাণ রেমিট্যান্স বা প্রবাস আয় পাঠাতে শুরু করেছেন প্রবাসীরা। ফলে চলতি রমজান মাসে প্রবাস আয়ে নতুন রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে। এ মাসের প্রথম ১৯ দিনেই ব্যাংকিং চ্যানেল তথা বৈধপথে দেশে ২২৫ কোটি মার্কিন ডলারের প্রবাস আয় এসেছে। এর মধ্যে ১৯ মার্চ এক দিনেই এসেছে ১৩ কোটি ডলার। শুক্রবারের সময়ের আলোতে বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ পরিসংখ্যানে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

বর্তমান ধারা অব্যাহত থাকলে চলতি মাসের শেষে প্রবাস আয় ৩০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে যাবে বলে ব্যাংকাররা আশা করছেন। প্রবাস আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় ব্যাংকগুলোতে ডলারের যে সংকট চলছিল, তা অনেকটা কেটে গেছে। ডলারের দাম নিয়ে যে অস্থিরতা ছিল, সেটিও কমে এসেছে।

সাধারণত দুই ঈদের আগে প্রবাস আয় বছরের অন্য যেকোনো মাসের চেয়ে বেশি আসে। এখনো রেমিট্যান্স আসছে। ফলে ঈদ ঘিরে প্রবাসীরা কত কোটি ডলার পাঠালেন তার পুরো চিত্র পেতে আরও কিছুটা সময় লাগবে। তবে গত মাসের তুলনায় চলতি মাসে প্রবাস আয় আসার গড়হার বেশি। মূলত গত বছরের আগস্টে দেশে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর ধারাবাহিকভাবে বাড়তে শুরু করে প্রবাস আয়ের গতি। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার দা‌য়িত্ব নেওয়ার পর টানা সাত মাস দুই বিলিয়নের বেশি রেমিট্যান্স এসে‌ছে বাংলাদেশে। দেশে গত বছরের আগস্টে রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর থেকে টানা সাত মাস ধরে প্রতি মাসে ২০০ কোটি ডলারের বেশি পাঠিয়েছেন প্রবাসীরা।

প্রবাস আয় হলো দেশে ডলার জোগানের একমাত্র দায়বিহীন উৎস। কারণ এই আয়ের বিপরীতে কোনো বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয় না, অথবা কোনো দায়ও পরিশোধ করতে হয় না। রপ্তানি আয়ের বিপরীতে দেশে ডলার এলেও তার জন্য কাঁচামাল ও যন্ত্রপাতি আমদানি করতে আবার বিদেশি মুদ্রা খরচ করতে হয়। অন্যদিকে বিদেশি ঋণ পরিশোধ করতেও ডলারের প্রয়োজন হয়। ফলে প্রবাস আয় বাড়লে দেশে ডলারের মজুদ দ্রুত বৃদ্ধি পায়।

ডলারের মূল্যবৃদ্ধির কারণেও প্রবাস আয়ের প্রবাহ বেড়েছে। আমরা মনে করি, ব্যাংকিং চ্যানেলে প্রবাস আয় বাড়াতে হলে অর্থ পাচার ও হুন্ডি রোধে এর বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে।

আরবি/এসবি

Link copied!