ঢাকা শুক্রবার, ১৮ এপ্রিল, ২০২৫

দুর্বল ব্যাংককে তারল্য সহায়তায় আইএমএফের আপত্তি

রূপালী প্রতিবেদক
প্রকাশিত: এপ্রিল ১০, ২০২৫, ১০:২০ এএম
ছবি: সংগৃহীত

তারল্য সংকটে থাকা দুর্বল ব্যাংকগুলোকে বাঁচিয়ে রাখতে টাকা ছাপিয়ে তারল্য সহায়তা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ৯০ দিন মেয়াদের এ টাকা পরিশোধ করার কথা। 

কিন্তু এখনো তারা এক টাকাও শোধ করতে পারেনি। এমন পরিস্থিতিতে কিছু দুর্বল ব্যাংককে দেওয়া তারল্য সহায়তা নিয়ে আপত্তি জানিয়েছে ঢাকায় সফররত আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) প্রতিনিধিদল। 

তবে তারল্য সহায়তায় আপত্তি থাকলেও তাতে কোনো সমস্যা হবে না বলে মনে করেন দেশের অর্থনীতিবিদরা। তারা বলেন, যে পদ্ধতিতে তারল্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে, তাতে আইএমএফ থেকে অর্থ পেতে কোনো সমস্যা হবে না। 

আইএমএফ এটাকে গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি বলে মনে করে না। এ জন্য তারা আপত্তি জানিয়েছে। তবে আইএমএফ অনেক শর্ত দিয়েছে। যেগুলো তারা পর্যালোচনা করে দেখছে। 

বেশির ভাগ শর্তই পূরণ হয়েছে। দুয়েকটায় হয়তো আপত্তি আছে। এ জন্য কিস্তির টাকা পেতে কোনো সমস্যা হবে না। 

বৈঠক সূত্রে জানা যায়, ব্যাংক খাতের ওপর গ্রাহকের আস্থা ফেরাতে দুর্বল ব্যাংককে তারল্য সহায়তা দিয়ে বাঁচিয়ে রাখার কৌশল নিয়ে শুরু থেকেই উদ্বেগ প্রকাশ করে আসছে আইএমএফ। 

এ সময় আইএমএফ মিশন-পরবর্তী করণীয় নিয়ে রোডম্যাপ জানতে চায়। তখন কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, এ ব্যাংকগুলোর অবস্থার উন্নতি ঘটাতে সব ধরনের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংক জানায়, কয়েকটি ব্যাংককে গ্যারান্টির বদলে সরাসরি টাকা ছাপিয়ে সহায়তা করা হয়েছে। তারপরও যদি উন্নতি না হয় তবে অন্য ব্যাংকের সঙ্গে একীভূত করা হবে। সে পদক্ষেপেও দৃশ্যমান কোনো উন্নতি না ঘটলে ব্রিজ করে ব্যাংকগুলো পর্যায়ক্রমে বন্ধ করে দেওয়া হবে। 

বিশ্বব্যাংকের ঢাকা অফিসের সাবেক প্রধান অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, ‘প্রমিসরি নোটের মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক দুর্বল ব্যাংকগুলোকে তারল্য সহায়তা দিয়েছে। প্রমিসরি নোট হলো- একটা চিঠি। 

একটা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিপত্র। এটা তো কোনো বন্ড না। এটাকে গ্রহণযোগ্য কিছু মনে করে না আইএমএফ।’ তিনি বলেন, ‘এটা একটা টেকনিক্যাল মিশন। 

আর টেকনিক্যাল মিশনে কী ঘটেছে, তার মূল্যায়নটা দিয়ে যায়। আমার মনে হয় না, এটা দিয়ে ডিল ব্রেকার হবে। যে কিস্তি পুরোপুরি আটকে যাবে। এমন হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এটা নিয়ে আরও হয়তো কিছু আলোচনা হবে। 

তবে টাকা আটকে যাবে না।’ বৈঠকে উপস্থিত একাধিক কর্মকর্তা জানান, দুর্বল ব্যাংকগুলোর মধ্যে কয়েকটি ব্যাংক গ্রাহকের টাকা ফেরত দেওয়ার নাম করে কলমানিতে বিনিয়োগ করেছে বলে সুনির্দিষ্ট তথ্য রয়েছে। 

কেউ কেউ নিজেদের বেতন-ভাতার কাজেও তারল্য সহায়তার টাকা ব্যয় করেছে। এসব বিষয় নিয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিব্রতকর অবস্থায় পড়েছে। তবে আইএমএফকে বিষয়গুলো জানানো হয়নি।