সোমবার, ১৪ এপ্রিল, ২০২৫

‘আমার ধারণা আড়াই থেকে ৩ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে’

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: এপ্রিল ১২, ২০২৫, ০৯:০০ এএম

‘আমার ধারণা আড়াই থেকে ৩ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে’

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর ছবি: সংগৃহীত

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর বলেছেন, ‘পাচার হওয়া অর্থ ফিরিয়ে আনার উদ্যোগ একেবারেই নতুন। এটি দেশের আইনে নয়, বিদেশের আইনের সঙ্গে সংযোগ করে করতে হবে। কোথায় কী আছে, সে তথ্য আগে আনতে হবে। এস্টেট (সম্পদ) ফ্রিজ করার পর আদালতের মাধ্যমে বাকি প্রক্রিয়া হবে।’

তিনি শুক্রবার ( ১১ এপ্রিল)  বিকালে মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ কার্যক্রম এবং সমসাময়িক ব্যাংকিং নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব মন্তব্য করেন।

এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে গভর্নর বলেন, ‘প্রথমে এস্টেটগুলো (সম্পত্তি) ফ্রিজ করার চেষ্টা করব। আমরা বিভিন্ন দেশের সঙ্গে কথা বলছি, চিঠি দিচ্ছি। ল ফার্মগুলোর সঙ্গে কথা বলছি, শিগগিরই তাঁদের হায়ার করা হবে। এস্টেট ট্রেসিং ফার্মের সঙ্গে কথা বলছি। আগামী ছয় মাসের মধ্যে এস্টেট ফ্রিজ করা হবে। এটিই হবে প্রাথমিক সফলতা।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সব মিলিয়ে আমার ধারণা আড়াই থেকে ৩ লাখ কোটি টাকা পাচার হয়েছে। এর মধ্যে চট্টগ্রামের একটি বড় শিল্পগ্রুপ ও তাঁর পরিবারও আছে। বেক্সিমকোর পাচার হওয়ার অর্থ ৫০ হাজার কোটি টাকার মতো। এগুলো শুধু বড় গ্রুপ। ছোটগুলোকে আপাতত দেখছি না। ভবিষ্যতে এমন কোনো কিছু যেন না হয়, তা আমরা ঠিক করতে আসছি। এর জন্য আমরা প্রয়োজনীয় রেগুলেটরি সংশোধন করতে চাই।’

সমঝোতার ভিত্তিতেও পাচারকৃত টাকা ফেরানোর চেষ্টা চলছে জানিয়ে গভর্নর বলেন, ‘সব বিষয় আদালতের মাধ্যমে নয়, আউট অব কোর্ট সেটেলমেন্ট বলে একটা কথা আছে। তার আগে সব তথ্য নিতে হবে। যখন সব তথ্য থাকবে তখন তারা নেগোসিয়েশনে আসবে। নেগোসিয়েশনে গেলে নির্ভুল তথ্য নিয়েই যাওয়া লাগবে। না হলে তো আমরা ঠকে যাব।’ 

অতীতে মুদ্রাস্ফীতির প্রকৃত চিত্র পুরোপুরি প্রতিফলিত হতো না উল্লেখ করে আহসান এইচ মনসুর বলেন, খাদ্যপণ্যের মুদ্রাস্ফীতি ৯-১০ শতাংশ হিসেবে প্রকাশ করা হতো, অথচ বাস্তব পরিস্থিতিতে তা ১৩-১৪ শতাংশে পৌঁছেছিল। তবে গত মাসে এই হার কিছুটা কমে ৮-৯ শতাংশে নেমে এসেছে। সামগ্রিকভাবে মুদ্রাস্ফীতির প্রবণতা এখন স্বস্তিদায়ক। আশা করছি, আগামী বছরে এই হার ৫ শতাংশ বা তার নিচে নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের চট্টগ্রাম কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রামের উপপরিচালক মো. জোবাইর হোসেন। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক মো. জামাল উদ্দিন, বাংলাদেশ ফাইন্যান্স ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের পরিচালক মো. আনিসুর রহমান, বাংলাদেশ ব্যাংক চট্টগ্রাম অফিসের পরিচালক মো. সালাহ উদ্দীন, মো. আরিফুজ্জামান, মো. আশিকুর রহমান এবং স্বরূপ কুমার চৌধুরী প্রমুখ।

আরবি/শিতি

Link copied!