ঢাকা: এস আলম গ্রুপের সংশ্লিষ্ট সাতটি ব্যাংকসহ ৯টি ব্যাংকের চেক, পে-অর্ডার গ্রহণে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেবা নিতে কোনো প্রতিষ্ঠান এসব ব্যাংকের চেক বা পে-অর্ডার প্রদান করলে সেগুলো গ্রহণ না করতে বলা হয়েছে। এতে বন্দর থেকে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে পড়বে।
গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান অর্থ ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবদুস শাকুর স্বাক্ষরিত এক আদেশে এ নির্দেশনা দেওয়া হয় বলে চট্টগ্রাম বন্দরের সংশ্লিষ্ট একটি তথ্য এ নিশ্চিত করেছে।
আদেশে বলা হয়েছে, সাম্প্রতিক সময়ে ৯টি ব্যাংকের সঙ্গে চট্টগ্রাম বন্দরের লেনদেন স্বাভাবিক নিয়মে চলছে না। এসব ব্যাংক থেকে পূর্বের মেয়াদি আমানতসহ বিভিন্ন আমানত উত্তোলন করতে পারছে না বন্দর। ফলে এসব ব্যাংকে নতুন করে সব ধরনের লেনদেনে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়েছে।
ব্যাংকগুলো হলো- গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক পিএলসি, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ পিএলসি, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংক পিএলসি, পদ্মা ব্যাংক পিএলসি, ন্যাশনাল ব্যাংক পিএলসি ও আইসিবি ইসলামী ব্যাংক পিএলসি।
জানা গেছে, ৯ ব্যাংকের গ্রাহকরা গত দুই সপ্তাহ ধরে অনলাইনে শুল্ক কর পরিশোধ করতে পারছিলেন না। সেই সঙ্গে এসব ব্যাংকের পে অর্ডারও ফিরিয়ে দেয় অনেক শিপিং এজেন্ট। এমনকি অন্য ব্যাংকে ফান্ড (তহবিল) স্থানান্তর করতেও অসুবিধায় পরেছেন আমদানিকারকরা। তাই বন্দর থেকে পণ্য ডেলিভারি নিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে। পণ্য ডেলিভারি নিতে বিলম্ব হওয়ায় বন্দরে কনটেইনার জট বাড়ছে। শিপিং লাইনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, এসব ব্যাংকের পে অর্ডার ক্যাশ হবে কি না তা নিয়ে শঙ্কা দেখা দেওয়ায় এমন পরিস্থিতি তৈরি হয়। এখন সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা পাওয়ায় অর্ডার নেওয়া পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেল।
সাধারণত পে-অর্ডার এবং রিয়েল টাইম গ্রস সেটেলমেন্টের (আরটিজিএস) মাধ্যমে অনলাইনে নিজস্ব ব্যাংক হিসাব থেকে শুল্ক কর পরিশোধ করেন আমদানিকারকরা। শিপিং বিল, পোর্ট ডেমারেজসহ বিভিন্ন চার্জ ও ট্যারিফ পরিশোধ করা হয় পে অর্ডারের মাধ্যমে। কিন্তু আর্থিক ঝুঁকিতে থাকা এস আলমের সাত ব্যাংকসহ ৯টি ব্যাংকের গ্রাহকরা অনলাইনে শুল্ক কর পরিশোধে সমস্যায় পড়েছেন। ফলে বন্দর থেকে পণ্য খালাস প্রক্রিয়া আরও জটিল হয়ে পড়েছে।
১৬ আগস্ট বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রজ্ঞাপনে জানানো হয়, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ, ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংক, বাংলাদেশ কমার্স ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক, বাংলাদেশ সোস্যাল ইসলামী ব্যাংক ও গ্লোবাল ইসলামী ব্যাংকের ঋণ বিতরণ কার্যক্রম সীমিত এবং এসব ব্যাংক থেকে ঋণপত্র (এলসি) খোলা নিষিদ্ধ করে বাংলাদেশ ব্যাংক। এর আগে ন্যাশনাল ব্যাংকের ক্ষেত্রেও একই সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিল।
আপনার মতামত লিখুন :