বাংলাদেশের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধি কমে যাওয়ার পূর্বাভাস দিয়েছে বিশ্বব্যাংক। বিশ্বব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৪.১ শতাংশ হতে পারে। গত জুনে সংস্থাটি ৫.৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছিল।
শুক্রবার প্রকাশিত বিশ্বব্যাংকের ‘গ্লোবাল ইকোনমিক প্রসপেক্টাস’ প্রতিবেদন অনুযায়ী, বাংলাদেশের প্রবৃদ্ধির পূর্বাভাস কমানোর কারণ হিসেবে দেশের রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং অর্থনৈতিক কার্যক্রমের ক্ষতির কথা বলা হয়েছে। এতে বিনিয়োগকারীদের আস্থা হ্রাস পেয়েছে এবং নীতিগত অনিশ্চয়তা বাড়েছে।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলাদেশের অর্থনীতির গতি দুর্বল হয়ে যাওয়ার পেছনে জ্বালানি সংকট, সরবরাহ সম্পর্কিত সীমাবদ্ধতা এবং আমদানিতে বিধিনিষেধও দায়ী। এছাড়া মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির কারণে মানুষের ক্রয়ক্ষমতা কমে গেছে, যার ফলে সেবা খাতের প্রবৃদ্ধি কমেছে।
দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ দেশেই মূল্যস্ফীতি কমলেও বাংলাদেশে তা এখনও উচ্চ পর্যায়ে রয়েছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে মুদ্রানীতি আরও সংকোচন করা হয়েছে। তবে চলতি বছর বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে বেশি হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
গত বছর দক্ষিণ এশিয়ার বেশ কিছু দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বৃদ্ধি পেলেও বাংলাদেশ ও মালদ্বীপে তা কমেছে।
বিশ্বব্যাংকের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপসহ বাংলাদেশের প্রধান বাণিজ্যিক অংশীদারদের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা কমলে তা বাংলাদেশের রপ্তানিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশ যুক্তরাষ্ট্রে সবচেয়ে বেশি রপ্তানি করে এবং দেশের মোট পণ্য রপ্তানির প্রায় অর্ধেকই ইউরোপে হয়ে থাকে।
গত মাসে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকার জিডিপি প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা কমিয়ে ৫.২৫ শতাংশে নামানোর পরিকল্পনা নেয়। ২ ডিসেম্বর, অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদের সভাপতিত্বে ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত আর্থিক, মুদ্রা ও বিনিময় হার-সংক্রান্ত সমন্বয় কাউন্সিলের বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
আপনার মতামত লিখুন :