ঢাকা রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
নির্দেশনা অকার্যকর

ডিমের বাজারে আগুন, মুরগিতে ‍‍‘অস্বস্তি‍‍’

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ২১, ২০২৪, ০২:২০ পিএম

ডিমের বাজারে আগুন, মুরগিতে ‍‍‘অস্বস্তি‍‍’

ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণে গত ১৫ সেপ্টেম্বর ডিম ও মুরগির দর নির্ধারণ করে দিয়েছিল। কিন্তু সে নির্দেশনা অকার্যকর হিসাবে ইতোমধ্যে প্রতীয়মান হয়েছে। উৎপাদনকারী থেকে খুচরা ব্যবসায়ী কেউই মানছেন না বেঁধে দেওয়া দাম। তাতে আমিষজাতীয় খাদ্যপণ্য দুটি আগের বাড়তি দরেই কিনতে হচ্ছে ভোক্তাদের। দাম বাড়ার ব্যাপারে নানা যুক্তি দেখিয়ে এক পক্ষ দোষ দিচ্ছে আরেক পক্ষের ওপর।  

সরেজমিনে শান্তিনগর বাজার ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলে জানাযায়, দাম নির্ধারণের আগে সরকার স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেনি। উৎপাদন না বাড়িয়ে দাম নির্ধারণ করলে তা বাস্তবায়ন হবে না বলেও অভিযোগ তাদের। একইসাথে যে দামে ডিম-মুরগি বিক্রি করছে তার চেয়ে কম দামে বিক্রি করলে তারা এবং উৎপাদনকারীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন বলে মত তাদের।

অপরদিকে, সরকারের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আলোচনা মাধ্যমেই ডিম-মুরগির দর নির্ধারণ করা হয়েছে। বাজারে সংকট না থাকার পরও দাম বাড়ায় কারা, তা খতিয়ে দেখা দরকার।

রাজধানীর শান্তিনগর বড় বাজারে সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে অনেক বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ডিম। বাজারে দেখা যায়, ডিম বিক্রি হচ্ছে প্রতি ডজন ১৬৫ থেকে ১৭০ টাকায়, যা সরকারের বেঁধে দেওয়া দামের চেয়ে ২৩ থেকে ২৮ টাকা বেশি। ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ১৮০ থেকে ১৮৫ টাকা, যা নির্ধারণ করে দেওয়া দামের তুলনায় ৫ টাকা বেশি।

শনিবার (২১ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর নবাবগঞ্জ বাজার, ছাপড়া মোড় মিনি বাজার, মিরপুর ১১, ধানমণ্ডি ১৫ ও শান্তিনগরসহ কয়েকটি বাজারে ডিম ও মুরগি বাড়তি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে। একইসাথে সবজির দাম গত সপ্তাহের মতোই চড়া রয়েছে।

উল্লেখ্য, ১৫ সেপ্টেম্বর উৎপাদক, পাইকারি ও খুচরা পর্যায়ে ডিম, সোনালি ও ব্রয়লার মুরগির দাম নির্ধারণ করে দেয় সরকার। খুচরা পর্যায়ে প্রতি পিস ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয় ১১ টাকা ৮৭ পয়সা। সে হিসাবে প্রতি ডজনের দর দাঁড়ায় প্রায় ১৪৩ টাকা। সোনালি মুরগি প্রতি কেজি ২৬৯ টাকা ৬৪ পয়সা ও ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি ১৭৯ টাকা ৫৯ পয়সা নির্ধারণ করে দেওয়া হয়। বলা হয়, কৃষি বিপণন অধিদপ্তর, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর এবং পোলট্রি-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সংস্থা বা প্রতিষ্ঠানের নেতাদের সমন্বয়ে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের মতামতের ভিত্তিতে কৃষি বিপণন অধিদপ্তর এই মূল্য নির্ধারণ করেছে।

নবাবগঞ্জ বাজারে আসা ক্রেতা আব্দুর রহমান রূপালী বাংলাদেশকে জানান, ‘‘বিগত সরকার যেমন দাম বেধে দিতেন কিন্তু সরেজমিনে বাজার মনিটরিং করতেন না বর্তমান বিপ্লবী সরকারেরও তো দেখি একই হাল। আমরা সাধারণ মানুষ চাই বাজার সিন্ডিকেট ভেঙে ডিম, মুরগিসহ নিত্যপণ্যের দাম নাগালের ভিতর আনা হোক।

তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, “অনেক আশা করেছিলাম ড. ইউনূস সরকার ক্ষমতায় আসলে বাজারে দাম কোমবো, গরুর গোস্ত মাঝখানে দাম কোমলে খাইছিলাম ভাবছিলাম আবারো কমবো কিন্তু এখন কেন কমেনা বুঝতে পারছি না“

রাজধানীর শান্তিনগর বাজারে আসা এক ক্রেতা সোনিয়া আক্তার রূপালী বাংলাদেশকে বলেন, “গোস্ত তো আর কিনতে পারিনে, কিনে খাই একটু ডিম তাতেও আগুন! সুনলাম দাম কমছে, কিন্তু ওমা! দামতো দেখি আগের মতই, কোম-কোমতি নেই খালি বাড়তি, খামু কি ? কুমড়ার কেজি ৪০, ডিমের হালি ৫৫ টেকা। চাল কিনে খাই ৬০ টেকা জীবনডা কষ্টের ভাই।“

শান্তিনগর বাজার ঘুরে সবজির দাম:

শসার কেজি ৪০ টাকা, করলা ৬০-৭০ টাকা, লাউ ৪০-৫০ টাকা পিস, কাকরোল ৬০ টাকা, ঢেঁড়শ ৪০ টাকা, বেগুন লম্বা ৫০-৫৫ টাকা দেশি বেগুন ৬৫-৭৫ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, পটল ৪০-৫০ টাকা, শিম ১৫০ টাকা, টমেটো ৮০ টাকা, কচুরমুখী ৫০ টাকা, মুলা ৪০ টাকা, ঝিঙা ৬০ টাকা, বরবটি ৬০ টাকা, কচুরলতি ৬০ টাকা, গাজর ১৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে৷

বাজার ফের অস্থির ও নির্দেশনা অকার্যকর এ বিষয়ে রূপালী বাংলাদেশকে  জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আতিয়া সুলতানা বলেন  ‘ভোক্তা অধিকারের কাজ চলমান রয়েছে। আপানার জানেন, আমরা নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম সহনশীল রাখতে শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে বাজার মনিটরিং এর কাজ করে আসছে।
 

আরবি/এস

Link copied!