ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী নিরুদ্দেশ হয়েছেন। সেই সাথে পরিবারের সদস্যদেরও নিরাপদ জায়গায় পাঠিয়ে দিয়েছেন বলে অভিযোগ ব্যাংক সংশ্লিষ্টদের। মোকাম্মেলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ধরনের আর্থিক অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। দেশের একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের অনুসন্ধান প্রতিবেদনে সে তথ্যও মিলেছে।
প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, রাজধানীর বনানীর ৮ নম্বর রোডের জি-ব্লকের একটি বহুতল ভবনের ডি-ফোর ফ্ল্যাটে থাকতেন ইউনিয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী। তার স্ত্রী নাজনীন আকতার দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বিমানবন্দরের উদ্দেশে বাসা ছাড়েন গত সোমবার দুপুরেই। এরপর গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বাসা থেকে একা বের হয়ে যান আলোচিত এই ব্যাংকার। সেই থেকে আর ফেরেননি এই পরিবারের কেউই।
ভবনের ব্যবস্থাপক মাসুম বিল্লাহ বলেন, ‘সাধারণত স্যার এখানে যায়, ওইখানে যায়, হাঁটতে যায়। তবে সেদিন যে গেছে এরপর তিনি আর আসেননি। উনার পরিবারও এক দিন আগে গাড়িতে করে গেছে, তারপর আর আসেনি।’
বনানীর ভবনটিতে এখনো আছে মোকাম্মেল হকের ব্যবহৃত দুটি গাড়ি। এর মধ্যে মিতসুবিশি আউটল্যান্ডারটি পরিবারের সদস্যরা এবং টয়োটা প্রাডো গাড়িটি ব্যবহার করতেন তিনি নিজেই। দুই গাড়িচালকও কিছু জানেন না মালিক সম্পর্কে।
ভবনের ব্যবস্থাপক মাসুম বিল্লাহ জানান, গাড়িচালকরা এখনও ভবনটিতে আসা যাওয়া করেন। কিন্তু তারা এ বিষয়ে কিছু জানেন না।
ইউনিয়ন ব্যাংকের কর্মকর্তারা বলছেন, মঙ্গলবার দুপুরে ব্যাংকে গিয়েছিলেন মোকাম্মেল হক চৌধুরী। এরপর বুধবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের সঙ্গে ইউনিয়ন ব্যাংক পর্ষদের পূর্বনির্ধারিত সভা থাকলেও তাতে যোগ দেননি তিনি। দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনের আগে ইউনিয়ন ব্যাংকের একটি রহস্যময় হিসাবের লেনদেনের সঙ্গে তাঁর সংশ্লিষ্টতার অভিযোগ রয়েছে।
এরইমধ্যে এ বি এম মোকাম্মেল হক চৌধুরী ও তার স্ত্রী নাজনীন আকতারের ব্যাংক হিসাবে লেনদেন স্থগিত করা হয়েছে। সেই সঙ্গে তাদের মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাবও স্থগিত করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর ভেঙে দেওয়া হয় আলোচিত এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকা ইউনিয়ন ব্যাংকের পর্ষদ। গত বুধবার রাতে ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের সভা ডেকে উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক (ডিএমডি) শফিউদ্দিন আহমেদকে এমডির চলতি দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
মোকাম্মেলের সবশেষ অবস্থা সম্পর্কে জানতে ব্যাংকটির চেয়ারম্যান মো. ফরিদউদ্দীন আহমদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
আপনার মতামত লিখুন :