ঢাকা রবিবার, ০৫ জানুয়ারি, ২০২৫

সবজির বাজারে স্বস্তি, চাল-মুরগিতে আগুন

রূপালী ডেস্ক

প্রকাশিত: জানুয়ারি ৩, ২০২৫, ০১:২৬ পিএম

সবজির বাজারে স্বস্তি, চাল-মুরগিতে আগুন

ছবি: সংগৃহীত

কিছুদিন পূর্বেই গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে বন্যা, রাজনৈতিক অস্তিরতা, আমদানি ঘাটতি- সবমিলিয়ে বাজারে যেন ভয়াবহ পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছিল। কোন সবজিই পাওয়া যাচ্ছিল না দুই অঙ্কের দামে। তবে যত দিন গড়াচ্ছে ততই সবকিছু স্বাভাবিক হচ্ছে। আর এতে করে জনমনেও ফিরছে স্বস্তি।

সেই ধারাবাহিকতায় এবার শীতের ভরা মৌসুমে সবজির বাজারে প্রত্যাশার চেয়ে অধিক স্বস্তির দেখা মিলছে। পূর্বে যে সবজি ১০০ টাকা বা তার অধিক দামে কিনতে হচ্ছিল, সেই সবজিই এখন পাওয়া যাচ্ছে ৫০ টাকার নিচে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজার, মহাখালী কাঁচাবাজার ও নাখালপাড়া সমিতি বাজারসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে দেখা গেছে, দু-তিনটি ছাড়া প্রায় সব সবজি কেজিপ্রতি ৬০ টাকার কমে মিলছে। বিশেষ করে প্রতি কেজি মুলা ও শালগম ১৫ থেকে ২০, শিম ২০ থেকে ৪০, গাজর ৫০ থেকে ৫৫, চিচিঙ্গা ৩৫ থেকে ৪০, উচ্ছে ৩০ থেকে ৫০ এবং বেগুন ৪০ থেকে ৫০ টাকায় কেনা যাচ্ছে। তবে প্রতি কেজি টমেটো মানভেদে ৫০ থেকে ৭০, বরবটি ৫০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া বড় আকারের প্রতিটি ফুল ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা দরে। লাউয়ের পিস কেনা যাচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকায়।

এছাড়া স্বস্তির খবর রয়েছে আলুর বাজারেও। ইতোমধ্যে নতুন আলুতে ভরে গেছে বাজার। যার কারণে দর কমে প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা দরে। তবে পুরোনো আলুর কেজি কিনতে খরচ হবে ৫০ টাকা বা তার চেয়ে কিছুটা বেশি।

এদিকে অনেকটাই কমেছে পেঁয়াজের দামও। প্রতি কেজি দেশি নতুন পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫৫ ও পুরোনো পেঁয়াজ ৭৫ থেকে ৮০ টাকা দরে কেনা যাচ্ছে। তবে কিছুটা বেড়ে দেশি রসুনের কেজি ২৩০ থেকে ২৩৫ এবং আমদানি রসুন ২২০ থেকে ২২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

তবে সবজির বাজারের এই স্বস্তি যেন চাল ও মুরগির বাজারের অস্থিরতার কারণে ফিকে হয়ে আসছে। কারণ গত দুই সপ্তাহে কোনো কোনো চাল কেজিতেই বেড়েছে ১০ টাকা। খুচরা ও পাইকারি ব্যবসায়ীদের দাবি, ধানের দাম বাড়ার ছুতা তুলে চালের দর বাড়াচ্ছেন মিলাররা। এভাবে অযাচিত দাম বাড়ার কারণে বিপাকে সাধারণ ক্রেতারা। ফলে সস্তায় শীতকালীন সবজি কিনে তৃপ্তির ঢেকুর তুললেও ক্রেতার সাশ্রয়ের সেই টাকা খেয়ে ফেলছে চালের বাজার।

সবচেয়ে বেশি দাম বেড়েছে মিনিকেট ও নাজিরশাইলের। খুচরা ব্যবসায়ীরা প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি করছেন ৭৮ থেকে ৮০ টাকায়। আর নাজিরশাইল বিক্রি করছেন ৮০ থেকে ৮৬ টাকায়। ১৫ দিন আগেও মিনিকেট চাল ৬৮ থেকে ৭৫ টাকায় এবং নাজিরশাইল ৭০ থেকে ৭৮ টাকায় বিক্রি হয়েছে। সেই হিসাবে দুই জাতের চালের কেজিতে বেড়েছে যথাক্রমে ৫ থেকে ১০ এবং ৮ থেকে ১০ টাকা।

বিআর-২৮ জাতের চালের কেজি দুই সপ্তাহ আগে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। ২ থেকে ৫ টাকা দর বেড়ে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায়। এ ছাড়া এ সময় মোটা চাল (গুটি স্বর্ণা) কেজিতে বেড়েছে ৫ টাকার মতো। ১৫ দিন আগে ৫০ থেকে ৫৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া মোটা চাল কিনতে এখন ক্রেতাকে গুনতে হচ্ছে ৫৫ থেকে ৫৬ টাকা। বাজারে ভারত থেকে আমদানি করা চালের সরবরাহও দেখা গেছে। মিনিকেট জাতের এ চালের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭৬ থেকে ৭৮ টাকায়।

অন্যদিকে সবজির দর কমে যাওয়ায় কমেছে ডিমের দামও। প্রতি ডজন ফার্মের ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। তবে মুরগির দর আগের মতোই চড়া। প্রতি কেজি ব্রয়লার ১৯০ থেকে ২০০ এবং সোনালি জাতের মুরগি ৩৩০ থেকে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এ ছাড়া গরুর মাংসের কেজি কেনা যাচ্ছে ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। আর অপরিবর্তিত দেখা গেছে মাছের বাজার।

আরবি/এফআই

Link copied!