রাজনৈতিক অস্থিরতার ধকল কাটিয়ে ওঠে ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হচ্ছে দেশের অর্থনীতি। চলতি অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থনীতিতে কিছু উন্নতির লক্ষণ দেখা গেছে। রপ্তানি, আমদানি, রেমিট্যান্স ও বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ধীরে ধীরে বাড়ছে।
তবে অর্থনীতিতে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও রয়ে গেছে। যেগুলোর বিষয়ে মনোযোগ দেওয়া দরকার। এর মধ্যে রয়েছে উচ্চ মূল্যস্ফীতি, বৈদেশিক চাহিদা হ্রাস, রাজস্ব আদায়ে ঘাটতি, ধীরগতির সরকারি ব্যয়, কর্মসংস্থানের সুযোগ কমে যাওয়া এবং বিনিয়োগ পরিবেশে স্থবিরতা। এ ছাড়াও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি পুনরুদ্ধারও জরুরি প্রয়োজন হয়ে উঠেছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এমসিসিআই) ঢাকার ত্রৈমাসিক পর্যালোচনা প্রতিবেদনে এসব কথা উঠে এসেছে। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে অর্থাৎ জুলাই-সেপ্টেম্বর সময়ের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি মূল্যায়ন এবং বিভিন্ন সূচকে দ্বিতীয় প্রান্তিকের প্রক্ষেপণ রয়েছে এতে। বৃহস্পতিবার (২৮ নভেম্বর) প্রতিবেদনটি প্রকাশ করা হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে দেখা গেছে অর্থনীতি ধীরে ধীরে পুনরুদ্ধার হচ্ছে। এই পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া শুরু হয় রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা কাটিয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে। গত জুলাই মাসের প্রথম সপ্তাহে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সময় থেকে এ অস্থিরতা শুরু হয়। এই আন্দোলনের ফলে সরকার পরিবর্তন ঘটে এবং দেশ একটি রূপান্তর সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশের অর্থনীতি ধীরে ধীরে রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং বৈশ্বিক সংঘাতপূর্ণ পরিস্থিতির কারণে সৃষ্ট চ্যালেঞ্জ কাটিয়ে উঠছে। যদিও গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সূচকগুলোতে রয়েছে মিশ্র প্রবণতা।
এমসিসিআইর প্রক্ষেপণে দেখা গেছে, আগামী তিন মাসে রপ্তানি ও আমদানি ধীরে ধীরে বাড়তে পারে। রেমিট্যান্স নভেম্বর ও ডিসেম্বরে বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থবছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভও ধীরে ধীরে বাড়তে পারে। তবে মূল্যস্ফীতি নভেম্বরেও দুই অঙ্কের ঘরে থাকতে পারে। ডিসেম্বরে অবশ্য সামান্য কমতে পারে মূল্যস্ফীতি।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সেপ্টেম্বর মাসে দেশে রেমিট্যান্স প্রবাহে পুনরুদ্ধার লক্ষ্য করা গেছে। গত ৩৯ মাসের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স এসেছে মাসটিতে। যেটি আশার সঞ্চার করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রেমিট্যান্স আয়ে এই ঊর্ধ্বগতি সাম্প্রতিক সময়ে বহুমুখী চাপে থাকা সামষ্টিক অর্থনীতির জন্য বহুল প্রতীক্ষিত স্বস্তি এনে দিয়েছে।
রপ্তানি প্রসঙ্গে প্রতিবেদনে বলা হয়, চলতি অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে রপ্তানি আয় আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ৭ দশমিক ৬২ শতাংশ বেড়ে ১১ দশমিক ৬৬ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। যদিও প্রবৃদ্ধির হার তুলনামূলকভাবে ধীর। কারণ ছাত্র আন্দোলন এবং পরে শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে শিল্পাঞ্চলে উৎপাদন ব্যাহত হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :