ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

হাত বদলে চাঁদাবাজি, কেজিতে বাড়াচ্ছে ১২০ টাকা

এফ এ শাহেদ

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ৭, ২০২৪, ০৪:৫৩ পিএম

হাত বদলে চাঁদাবাজি, কেজিতে বাড়াচ্ছে ১২০ টাকা

ছবি রুপালী বাংলাদেশ

স্বৈরাচারী শাসকের পতনের মধ্যে দিয়ে নতুন বাংলাদেমের স্বপ্ন দেখেছিল ছাত্র সমাজ এবং সাধারণ মানুষ। সে স্বপ্ন কি পুরণ হচ্ছে? অসাধু সিন্ডিকেট এবং ব্যবসায়ীদের কারসাজিতে বাড়তি দাম ছিল এবং আছে। চাল, আলু, পেঁয়াজ, কাঁচামরিচ, ডিম, মাছ থেকে শুরু করে সকল নিত্যপণ্যের দামই চড়া। শুধু সাইনবোর্ড অথবা হাত বদলে চলছে আগের মতই কার্যক্ষেত্রে আগের থেকে বেশি চাঁদাবাজি। রাজশাহী এবং যশোর থেকে কাঁচামাল ঢাকাতে ঢুকেই দাম বাড়ছে কেজিতে ১২০ থেকে ১৪০ টাকা। নিত্যপণ্যের চড়া দামে ক্ষিপ্ত জনসাধারণ । প্রশ্ন তুলছে স্বাধীন প্রশাসনের ভুমিকা নিয়ে। 
 
রূপালী বাংলাদেশের প্রাথমিক তদন্তে ওঠে এসেছে নানান তথ্য। রাজধানীর কাওরান বাজার থেকে নারয়ণগঞ্জ কাঁচা বাজার হাত বদলে চলছে চাঁদাবাজি। আগের মতই চাপা ভয়ে মুখে কুলুপ এটে আছেন সাধারণ ব্যবসায়ী এবং ভুক্তভোগীরা।

গত ৫ আগস্ট হাসিনা সরকার পতনের ৭ দিন পর ছাত্রদের সরব উপস্থিতিতে রাজধানীর কারওয়ান বাজার ঘুরে দেখা যায়, ৩০ থেকে ৫০ টাকার মধ্যেই বেশির ভাগ সবজি বিক্রি হতে। সেসময় বিক্রেতারা জানিয়েছেন, আরও কমবে সবজির দর। তবে সময় যত গড়িয়েছে দাম কমেনি উল্টো বেড়েছে । সরব হয়েছে সিন্ডিকেট পুরতনদের স্থান দখল করেছে নতুন করে অন্য রাজনীনৈতিক ব্যানারে।

কেজিতে বাড়াচ্ছে ১২০ টাকা
চাল প্রধান এই খাদ্যপণ্যটির চড়া দাম নিয়ে বিপাকে নিম্ন ও নিম্ন মধ্যবিত্ত মানুষ। নতুন সরকার অন্যান্য নিত্যপণ্যের দাম কমাতে যেমন উদ্যোগ নিচ্ছে, চালের ক্ষেত্রেও তেমনটা প্রয়োজন বলে মনে করেন, সাধারণ মানুষ। তারা বাজারে গিয়ে চালের সাথে নিত্যেপণ্য কিনতে রিতীমত হিমশিম খাচ্ছেন।

এদিকে প্রান্তিক কৃষক তার পণ্যের সঠিক দাম থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। অন্যদিকে, চড়া দামে নিত্যপণ্যে কিনতে দম বের হবার জোগাড় সাধারণ মানুষের।

শনিবার (৭ সেপ্টেম্বর) রূপালী বাংলাদেশের প্রতিনিধি কামরুজ্জামান বাদশা সরেজমিনে রাজশাহীর পাইকারী বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের তালিকা দেন। অন্যদিকে যশোরের প্রতিনিধি সালাউদ্দিন সাগর সরেজমিনে সেখানকার বাজার ঘুরে তালিকা দেন। রাজশাহী ও যশোরের পাইকারী বাজারের সাথে রাজধানীর খুচরা বাজারের মূল্যতালিকার হেরফের অনেক।

► বাজারদর

সবজির নাম ও পরিমাণ 

                      রাজশাহী(পাইকারী)                          

যশোর (পাইকারী)                   

        ঢাকা (খুচরা)                          

মিষ্টি কুমড়া(কেজি)

২০-২৫

 ১৫-১৮  

    ৪৫-৫০

শসা(কেজি) 

  ৩০-৪০ 

----- 

৮০-১০০

পটল(কেজি)

  ২৫ 

৩০

  ৪৫-৫০

লাউ (পিস) 

২০

২০-২৫

৪০-৬০ 

বেগুন (দেশি)

৫৫-৬০

৬০-৬৫

১০০-১১০

আমড়া (কেজি)

১৮-২০

২০

৫০-৫৫

পেঁপে (কেজি)

১৫

১৫

৩০

কাঁচা মরিচ (কেজি)

১২০

১১৫

২৪০-২৮০

টমেটো (কেজি)

৭০-৮০

৮০-৮৫

 ১৪০-১৫০

সরেজমিনে, পুরান ঢাকার নবাবগঞ্জসহ কয়েকটি বাজার ঘুরে নিত্যপণ্যের দাম জানাযায়।

বাজার ঘুরে দেখাযায়, দাম বেড়েছে চাল, ডিম ও সবজির দাম। দফায় দফায় বাজার মনিটরিং হলেও বাজারে কোনো প্রভাব পড়ছে না। মোটা চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৫ থেকে ৬০ টাকা এবং চিকন চাল ৭০ থেকে ৭৫ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে।  দেশি ডাল বিক্রি হচ্ছে সর্বনিু মূল্য কেজিপ্রতি ১৩০ টাকায়। মোট ডাল বিক্রি হচ্ছে কেজি প্রতি ১০০ টাকায়।

জেলা থেকে রাজধানীতে ঢুকলেই দামের যে হেরফের সে বিষয়ে ছাপড়া মসজিদ কাচাবাজারে বাজার করতে আসা বঙ্কিম চন্দ্র নামের একজন শিক্ষার্থী বলেন, আমরা ছাত্ররা যারা ঢাকাতে মেচে থেকে চাকরির জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করি। তারা বেশিরভাগই নিজেদের খরচ নিজেরা বহন করি। আমাদের পরিবারের মানুষে সরাসরি কৃষি উৎপাদনের সাথে জড়িত । তারা রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে যে ফসব ফলান সে পণ্যের সঠিক দাম তারা পান না। এদিকে আমরা ঢাকাতে থেকে কয়েকগুন বেশি দামে নিত্যপণ্যে কিনে খায়। অনেক সময় অতিরিক্ত দামের কারণে প্রয়োজনীয় পণ্যে কিনতে হিমশিম খেতে হয়। 

বঙ্কিম চন্দ্র বলেন, সরকার পরিবর্তনের সাথেসাথে যে পরিবর্তনের স্বপ্ন দেখেছিলাম তার সাথে বাস্তবতার দুরত্ব অনেক। প্রশাসন এখন স্বাধীন তা হলেও কেন বাজার মনিটরিং হচ্ছে না । কেন এমন দাম বাড়ছে সে প্রশ্নের উত্তর কোথাই খুজব বুঝতে পারছি না। আমরা পরিবর্তন বলতে সকলের ন্যায্যতা নিয়ে বাচার অধিকার নিশ্চিতকে বুঝি।

অন্য একজন ক্রেতা বলেন, আবারও দাম বাড়তে শুরু করেছে। যদিও এটাকে পণ্যে সংকটের ফলে স্বাভাবিক বৃদ্ধি বলে দাবি করছেন খুচরা ব্যবসায়ীরা। তবে বাজারে কোন পণ্যের যোগান কম দেখা যায় না কখনো।

নিত্যপণ্যের দাম কেন নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হচ্ছে না এ বিষয় জানতে জাতীয় ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের ওয়েব সাইটে দেওয়া নাম্বারে কল করা হলে সেটি বন্ধ পাওয়া যায়।

 

আরবি/এস

Link copied!