ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের পর অগ্রণী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ ও ব্যবস্থাপনায় পরিবর্তন এনেছে সরকার। রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রবাসী আয় আহরণে শীর্ষে অবস্থান করছে অগ্রণী ব্যাংক। একই সঙ্গে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসছে ব্যাংকটির মাধ্যমে। দুই মাস ধরে অগ্রণী ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও সিইও হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মো. আনোয়ারুল ইসলাম। এর আগে তিনি একই ব্যাংকের উপব্যবস্থাপনা পরিচালক ছিলেন।
সম্প্রতি তিনি অগ্রণী ব্যাংক ও ব্যাংক খাতের বিভিন্ন বিষয়ে রূপালী বাংলাদেশের সঙ্গে কথা বলেছেন। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বিজনেস এডিটর রহিম শেখ।
রূপালী বাংলাদেশ : প্রায় দুই মাস হয়েছে আপনি অগ্রণী ব্যাংকের এমডি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ব্যাংকটি কেমন করছে?
মো. আনোয়ারুল ইসলাম : দেশের ব্যাংকিং খাতের প্রতিকূল এক পরিস্থিতিতে আমি অগ্রণী ব্যাংকে যোগদান করি। এরপর নানা প্রতিকূলতা উত্তরণে কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করি। এসব কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের ফলে বিভিন্ন সূচকের উন্নতিও হয়েছে। ভবিষ্যতে আরও উন্নতি হবে বলে আমি আশাবাদী।
রূপালী বাংলাদেশ : নতুন বছরে কী ধরনের পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছেন?
মো. আনোয়ারুল ইসলাম : মানুষের মধ্যে যাতে আস্থা ফিরে আসে সে লক্ষ্যে আমরা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছি। নতুন বছরে বেশ কিছু উদ্যোগ আমরা গ্রহণ করতে চাই, যাতে গ্রামের মানুষকে আরও বেশি পরিমাণে ব্যাংকিং খাতের সঙ্গে যুক্ত করা যায়। সে লক্ষ্যে নতুন বছরে গ্রামে ঋণ বিতরণ বাড়ানোর উদ্যোগ গ্রহণ করা হবে।
রূপালী বাংলাদেশ : ব্যাংক খাতে এখনো কিছুটা অস্থিরতা আছে। আছে ডলার সংকট। এই সংকট কীভাবে সামাল দিচ্ছেন?
মো. আনোয়ারুল ইসলাম : বাংলাদেশ ব্যাংকের পদক্ষেপের কারণে ডলারের দাম অনেকটা নিয়ন্ত্রণে এসেছে। ফলে এখন বৈদেশিক মুদ্রার ঘাটতিও অনেক কমে গেছে। ব্যাংক গ্রাহকদের চাহিদা ও গুরুত্ব বিবেচনায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে আমদানি দায় পরিশোধ করছে। গ্রাহকদের চাহিদা মেটাতে বৈদেশিক মুদ্রার জোগান নিশ্চিতে বিশেষ মনোযোগ দিয়েছি।
রূপালী বাংলাদেশ : বর্তমান পরিচালনা পর্ষদ কেমন সহযোগিতা করছে?
মো. আনোয়ারুল ইসলাম : খুব ভালো পর্ষদ পেয়েছি আমরা। বিশেষ করে বর্তমান চেয়ারম্যান ২০০৪ থেকে ২০১০ সালের মার্চ পর্যন্ত তিনি ব্যাংকটির এমডির দায়িত্বে ছিলেন। চেয়ারম্যান মহোদয়ের নেতৃত্বে আমরা নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছি।
রূপালী বাংলাদেশ : রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রবাসী আয় আহরণে শীর্ষে অবস্থান করছে অগ্রণী ব্যাংক। একই সঙ্গে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসছে ব্যাংকটির মাধ্যমে। রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়ানোর লক্ষ্যে কীভাবে কাজ করছে অগ্রণী ব্যাংক?
মো. আনোয়ারুল ইসলাম : কেন্দ্রীয় ব্যাংকের সকল নির্দেশনা মেনেই অগ্রণী ব্যাংক রেমিট্যান্স ডলার সংগ্রহ করছে। আমাদের ব্যাংকের প্রতি গ্রাহকের আস্থা উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে। এ ছাড়া, আমরা সেবার মান উন্নত করেছি, যা আমাদের রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সহায়তা করেছে। যার ফলে রাষ্ট্রমালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মধ্যে প্রবাসী আয় আহরণে শীর্ষে অবস্থান করছে অগ্রণী ব্যাংক। একই সঙ্গে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রেমিট্যান্স আসছে ব্যাংকটির মাধ্যমে।
রূপালী বাংলাদেশ : খেলাপি ঋণ কমানোর লক্ষ্যে কী ধরনের উদ্যোগ নিয়েছেন?
মো. আনোয়ারুল ইসলাম: খেলাপি ঋণ কমিয়ে আনার জন্য আমাদের উদ্যোগ আছে। সে লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমরা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ঋণ আদায়ে পদক্ষেপ নিয়েছি। নতুন করে যাতে কোনো ঋণ খেলাপি না হয়, সে জন্য পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা চলতি ডিসেম্বরের মধ্যেই খেলাপি ঋণ ৩০ শতাংশের আশপাশে আনার চেষ্টা করছি।
আপনার মতামত লিখুন :