ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪

ঢাবিতে নারীর অধিকার আদায়ে ১৩ দফা দাবি

সজিব আহমদ সায়ান (ঢাবি)

প্রকাশিত: অক্টোবর ২২, ২০২৪, ০৮:২৯ পিএম

ঢাবিতে নারীর অধিকার আদায়ে ১৩ দফা দাবি

ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

ঢাবি: নারীর উপর চলমান নিপীড়ন-নির্যাতন-ধর্ষণের বিরুদ্ধে এবং নারী নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ ও সকল নারী নির্যাতনের মামলার দ্রুত বিচারের দাবিসহ ১৩ দফা দাবিতে সমাবেশ ও মশাল মিছিলের আয়োজন করেছে একদল নারী শিক্ষার্থী। মঙ্গলবার (২২ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের সামনে এই সমাবেশের আয়োজন করা হয়। সমাবেশ শেষে মশাল মিছিল নিয়ে ভিসি চত্বর প্রদক্ষিণ করে রাজুতে এসে শেষ হয় সমাবেশটি।

সমাবেশে বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রীর ঢাবি শাখার সভাপতি নুজিয়া হাসিন রাশা বলেন, আমরা গণতান্ত্রের কথা ঠিকি বলি কিন্তু নারীকে বাদ দিয়ে কখনো গণতান্ত্র সম্ভব? আমারা দেখতে পাচ্ছি নারী সমন্বয়কদের নানা ভাবে বুলিং করা হয় কিন্তু কোন পুরুষ সমন্বয়ক তাদের পাশে দাড়াঁচ্ছে না।

তিনি বলেন, নারী ক্ষমতায় গেলেই নারী ক্ষমতায়ন হয় না। হাসিনার আমলেই তনু ধর্ষণ হয়েছিল। কিন্তু তার সময়ও তো কোন ধর্ষণের সুষ্ঠু বিচার হয়নি। কারণ এটার সাথে এই পুরুষতান্ত্রিক কাটামো জড়িত। ছাত্র জনতার গণ-অভ্যুত্থানের মধ্যে দিয়ে নতুন সরকার এসেছে। কিন্তু এখনো নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটছে। বনানীর রিক্সাচালকের মেয়ের ধর্ষণের কোন খবর মিডিয়াতে নেই। কেন সরকার এর চিকিৎসার ব্যয় বহন করছে না। এসবকিছু পুরুষতান্ত্রিক সমাজের জন্য। তিনি নারীদের অধিকার আদায়ের জন্য সকল নারীদের সংগঠিত হওয়ার আহ্বান জানান ।

হিল ট্রেকস উইমেন্স ফেডারেশনের সদস্য রুপসী চাকমা বলেন, শেখ হাসিনার পতনের পর পার্বত্য চট্টগ্রামে তিন জেলায় তিনটি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু অনেক ঘটনা যেগুলো আমাদের আগোচরে রয়েছে। একজন নারী হিসেবে আমি জানি, বর্তমানে একজন নারী রাস্তায় হাটতেও ইনসিকিউর ফিল করে।

তিনি বলেন, পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীকে হীন ভাবে দেখা হয়। সেখানে নারী সবসময় ভিক্টিম হয়। আমাদের সমাজের যে কাঠামো এই কাঠামো বলে, পুরুষ যা চায় তাই করতে পারবে। নাহলে একজন শিক্ষক কীভাবে ধর্ষণের সাহস পায়। নারীর অধিকার নিশ্চিত করলেই দেশে সুষ্ঠু পরিবেশ ফিরিয়ে আনা সম্ভব বলেন রুপসী চাকমা।

এসময় ১৩ দফা দাবি তুলে ধরেন আয়োজনের সঞ্চালক ইসরাত জাহান ইমু।

দাবিগুলো-
১. প্রত্যেকটি নারী-শিশু ধর্ষণ ও হত্যাকান্ডের সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার করতে হবে। 
২. ধর্ষণের ভিকটিমের চিকিৎসা খরচ রাষ্ট্রকে বহন করতে হবে। 
৩. ধর্ষণ ও হ্যারাসমেন্টের মামলার ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কঠোর হতে হবে।
৪. নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলা ১৮০ দিনের মধ্যেই নিষ্পত্তি করতে হবে।
৫. বিদ্যমান ১৮৭২ সালের সাক্ষ্য আইনে ১৫৫(৪) ধারা বাতিল করতে হবে। 
৬. সম্পত্তিতে সমানাধিকার দিতে হবে। 
৭. ইউনিফর্ম ফ্যামিলি কোড চালু এবং বাস্তবায়ন করতে হবে। 
৮. নারীকেও সন্তানের অভিভাবকত্ব আইন দিতে হবে।
৯. ২০০৯ সালের হাইকোর্ট নীতিমালা অনুযায়ী প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও কর্মস্থলে যৌন নিপীড়ন বিরোধী কমিটি এবং সেল তৈরি এবং শিক্ষার্থী প্রতিনিধি নিশ্চিত। 
১০. নারীকে গর্ভপাতের পূর্ণ স্বাধীনতা দিতে হবে। 
১১. প্রতিটি ভিন্ন ভিন্ন লৈঙ্গিক পরিচয়ের মানুষের রাষ্ট্রীয় পরিচয়পত্রে তার লৈঙ্গিক পরিচয়ের স্বীকৃতি দিতে হবে। 
১২. সকল প্রকার লৈঙ্গিক বৈষম্যকারী আইন বাতিল করতে হবে। 
১৩. নারী নিপীড়ন ও ধর্ষণের মামলায় দ্রুততম সময়ে রেসপন্স করার জন্য স্পেশাল ইউনিট গঠন করতে হবে এবং নিশ্চিত করতে হবে যেন ডিকটিরা কোন ধরনের হয়রানির শিকার না হয়।

আরবি/এস

Link copied!