ঢাকা সোমবার, ০৭ অক্টোবর, ২০২৪
অভ্যুত্থান

স্মৃতিচারণ ও ভবিষ্যৎ ভাবনা শিরোনামে জাবিতে আলোচনা সভা

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৬, ২০২৪, ০৮:০৬ পিএম

স্মৃতিচারণ ও ভবিষ্যৎ ভাবনা শিরোনামে জাবিতে আলোচনা সভা

ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

জাবি: ২০২৪ সালের গণঅভ্যুত্থানে সাভার-আশুলিয়া এলাকায় শহীদদের পরিবার ও আহত শিক্ষার্থীদের নিয়ে আলোচনা সভার আয়োজন করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সরকার ও রাজনীতি বিভাগ। রোববার (৬ অক্টোবর) বিকাল তিনটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদের গ্যালারি কক্ষে এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।

‘জুলাই গণঅভ্যুত্থান: স্মৃতিচারণ ও ভবিষ্যৎ ভাবনা’ শীর্ষক এই আলোচনা সভায় শহীদ পরিবার ও আন্দোলনে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের স্মৃতিচারণায় এক আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয়।

সভায় গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী ফয়সাল বলেন, ‘দীর্ঘ ১৫ বছর আমাদের উপর এক ভয়াবহ ফ্যাসিবাদ চেপে বসেছিল। জাহাঙ্গীরনগর ছিল এখানকার আন্দোলনের প্রাণকেন্দ্র। ১৫ জুলাই যখন জাবিতে হামলা হয়, তখন গণ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আমরা এসে যুক্ত হই। শিক্ষকরা আমাদের সামনের দিক থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। আমরা চাই পেশিভিত্তিক রাজনীতির পরিবর্তে বুদ্ধিবৃত্তিক রাজনীতির চর্চা হোক।’

জাবির সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘সারা বাংলাদেশে যখন আন্দোলন থেমে গিয়েছিল, জাবিতে এবং প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আন্দোলন চলমান ছিল। শুধু ছাত্ররাই ছিল এমন নয়, শিক্ষকরা আমাদের পাশে ছিলেন। ১৫ জুলাই সন্ধ্যায় ও রাতে আমাদের উপর দুই বার হামলা হয়। ছাত্রলীগের হামলায় গুরুতর আহত হন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। ৫ আগস্টের চূড়ান্ত দিনে শিক্ষকরা ছিলেন সামনের সারিতে। এ আন্দোলনে সবচেয়ে বেশি অংশগ্রহণ করেছে নিম্নবিত্তরা।’

গণ বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেক শিক্ষার্থী আফসানা মিমি বলেন, ‘দেশের প্রতিটি নাগরিক যাতে তার মৌলিক অধিকার যথাযথভাবে পায়। বিগত ১৬ বছরের ফ্যাসিবাদী সাম্রাজ্যে দেশের প্রতিটি সেক্টর দুর্নীতিগ্রস্ত হয়েছে। আগামীর বাংলাদেশ বিনির্মাণে এগুলোর সংস্কার দ্রুত প্রয়োজন। দেশের কোন নাগরিক যাতে খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা, চিকিৎসা সেবায় বৈষম্যের শিকার না হয়।  শিক্ষাব্যবস্থার আমূল পরিবর্তন জরুরি। সব নাগরিকের বাকস্বাধীনতা নিশ্চিত করতে হবে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জামাল উদ্দিন রুনু বলেন, ‘ছাত্র আন্দোলন চূড়ান্ত পর্যায়ে যাওয়ার দিন আমি প্রক্টরকে অনুরোধ করি প্রশাসন যেন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলা না করে। শিক্ষার্থীরা বিপদে পড়ে আমার সাথে যোগাযোগ করেছে, আমরা শিক্ষকরা সাধ্যমতো তাদের পাশে দাঁড়িয়েছি। ১৫ জুলাই রাতে হামলার পর ফেরারি আসামীর মতো ঘুরে বেড়িয়েছি। এখন বৈষম্যহীন নতুন বাংলাদেশ গড়ে উঠুক এটাই প্রত্যাশা।’

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক কামরুল আহসান বলেন, ‘আমরা সকলে পরিবর্তন চেয়েছি, তাই পরিবর্তন আনতে পেরেছি। আমাদের সম্মিলিত চাওয়া একটি গণ অভ্যুত্থানে রূপ নিয়েছে। এ অভ্যুত্থান ব্যর্থতায় ম্লান হবে, যদি আমাদের চাওয়া—পাওয়া অনুযায়ী দেশকে গড়তে না পারি। আমাদের উচিত কোনোভাবেই বিভাজিত না হয়ে রাষ্ট্র সংস্কারে একতাবদ্ধভাবে মনোনিবেশ করা।’


এসময় উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক সোহেল আহমেদ, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক আবদুর রবসহ বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।

 

আরবি/এস

Link copied!