ঢাকা শুক্রবার, ১৪ মার্চ, ২০২৫

১৪ দফা দাবিতে জাবি স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের স্মারকলিপি

রিপন বারী, জাবি
প্রকাশিত: অক্টোবর ৭, ২০২৪, ০৪:৪৪ পিএম
ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

জাবি: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা প্রতিষ্ঠানের সামগ্রিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে দাবিদাওয়া  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে উপস্থাপন করার পরেও ব্যবস্থা গ্রহণ না করায়, পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য বরাবর ১৪ দফা দাবি সম্বলিত স্মারকলিপি জমা দিয়েছে। পাশাপাশি দাবি সমূহ বাস্তবায়ন না হওয়া অবধি সকল প্রকার ক্লাস এবং পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে।

শিক্ষার্থীরা গত ১৫ই সেপ্টেম্বর তাদের দাবি দাওয়া গুলো বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে জানায়। পরবর্তীতে দাবি পুরণ না হওয়ায় সোমবার (৭ অক্টোবর) শিক্ষার্থীরা পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের কার্যালয়ে জমা দেয় এবং ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে।  

স্মারক লিপিতে তারা উল্লেখ করেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজের সাধারণ শিক্ষার্থীরা আপনার নিকট আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক অধিকার আদায়ের নিমিত্তে দীর্ঘদিনের নানাবিধ সমস্যা আপনার নিকট তুলে ধরছি। আমরা আশা করছি আমাদের সর্বোচ্চ অভিভাবক হিসেবে আপনি অত্র প্রতিষ্ঠানের নিচে উল্লেখিত দীর্ঘ দিনের সমস্যা ও দাবী সমূহের যথার্থতা অনুধাবন করে সমস্যা সমূহ নিরসনকল্পে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। এখানে উল্লেখ্য যে, আমাদের দাবী সমূহ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ স্যারকে মৌখিকভাবে বার বার অবগত করেছি।

শিক্ষার্থীদের দাবীগুলো হলো- 
১. স্কুল শাখায় জায়গা সংকট সমাধানের জন্য একটি নতুন স্কুল ভবন নির্মাণ প্রয়োজন। এছাড়াও চারতলা কলেজ ভবনের পশ্চিম অংশের সিঁড়িটি পুনঃনির্মাণ করা আবশ্যক।

২. স্কুল ও কলেজ উভয় বিল্ডিং এ ওয়াশ রুম ও স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেটের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে এবং পরিচ্ছন্নতা কর্মীর সংখ্যা বৃদ্ধি করতে হবে এবং মেয়েদের টয়লেট ও ওয়াশ রুমের জন্য মহিলা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন কর্মী নিয়োগ দিতে হবে।

৩. আগামী ২/১ মাসের মধ্যে দ্রুততম সময়ে শূণ্য পদের বিপরীতে স্থায়ীভাবে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। খন্ডকালীন শিক্ষকদের সরাসরি আত্মীকরণ করে স্থায়ী ভাবে নিয়োগ দিয়ে খন্ডকালীন পদে যোগদানের তারিখ হতে সার্ভিস টাইম হিসেব করে তাঁদের প্রতি বৈষম্যমূলক আচরণ নিরসন করতে হবে।

৪. প্রতিষ্ঠানের মূল প্রবেশ গেইটের অসমাপ্ত কাজ ডিজাইন অনুযায়ী সমাপ্ত করতে হবে। এছাড়া স্কুল অংশের ভেঙ্গে যাওয়া দ্বিতীয় গেইটটি মেরামত বা পুণঃনির্মাণ করতে হবে।

৫. স্কুল ও কলেজ লাইব্রেরিতে দ্রুত লাইব্রেরিয়ান/ প্রয়োজনীয় জনবল নিয়োগ দিয়ে লাইব্রেরীর কার্যপরিধি বৃদ্ধি করে ছাত্রছাত্রীদের লাইব্রেরী ব্যবহারের সুযোগ সৃষ্টি করতে হবে।

৬. স্কুল ও কলেজ উভয় অংশে আলাদা আলদা কম্পিউটার ল্যাব স্থাপন করে ছাত্রছাত্রীর অনুপাতে কম্পিউটার সংখ্যা ও মাল্টিমিডিয়ার স্মার্ট বোর্ড স্থাপন করতে হবে। 

৭. খাবারের দোকনটিকে আধুনিক স্বাস্থ্যসম্মত উপযুক্ত পরিসর বিশিষ্ট ক্যান্টিনে রূপ দিতে হবে।

৮. স্কুল- কলেজে অভিভাবকদের বসার জন্য দ্রুততম সময়ে উপযুক্ত স্থানে একটি অভিভাবক শেড স্থাপন করতে হবে।

৯. সাইকেল রাখার জন্য প্রতিষ্ঠানে একটি সাইকেল স্ট্যান্ড ও শেড নির্মাণ করতে হবে।

১০. সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড ও খেলাধুলার কার্যক্রমে উপযুক্ত বাজেট দিতে হবে।

১১. স্কুল ও কলেজের উভয় ভবনের প্রতিটি তলায় সুপেয় পানির ব্যবস্থা করতে হবে। 

১২. ক্লাস চলাকালীন স্কুল ও কলেজের প্রতিটি ভবনের প্রবেশ ও বহিঃর্গমনের গেইট তদারকির জন্য গার্ডের সংখ্যা বাড়াতে হবে। 

১৩. বিশ্ববিদ্যালয়ের অংশ হিসেবে এই স্কুল ও কলেজ পরিচালনার নিমিত্তে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের বৈষম্যমূলক সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।

১৪. দাবী সমূহ দ্রত বাস্তবায়নের প্রয়োজনীয় দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।


জাবি স্কুল এন্ড কলেজের অধ্যক্ষ আবদুল জলিল ভূঞা বলেন, আমরা শীঘ্রই শিক্ষার্থীদের দাবি পূরণের চেষ্টা করবো।  চাইলেই একসাথে সব দাবি পূরণ করা সম্ভব না। তবে যেগুলা বেশি জরুরি, সেগুলো প্রশাসনের সাথে কথা বলে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে পূরণ করার চেষ্টা করবো৷

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রো-উপাচার্য (শিক্ষা) অধ্যাপক ড. এম মাহফুজুর রহমান বলেন, শিক্ষার্থীরা স্মারকলিপি দেয়ার পর কিছুদিন অপেক্ষা করা প্রয়োজন ছিলো। এত দ্রুত চাইলেই তো সব পূরণ করা সম্ভব নয়৷ আমাদের বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ আন্তরিক। আমরা চাই শিক্ষার্থীদের সব সমস্যা দূর হোক।