ঢাকা রবিবার, ২৪ নভেম্বর, ২০২৪

সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে জাবিতে মশাল মিছিল

জাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: অক্টোবর ৯, ২০২৪, ০৮:৫৩ পিএম

সীমান্ত হত্যা বন্ধ ও নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে জাবিতে মশাল মিছিল

ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

জাবি: বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে হত্যা বন্ধ ও নদীর পানির ন্যায্য হিস্যার দাবিতে মশাল মিছিল করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার (০৯ অক্টোবর) সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় কলা ও মানবিকী অনুষদের সামনে থেকে মিছিলটি শুরু হয়। পরে সেটি শহীদ মিনার সংলগ্ন রাস্তা প্রদক্ষিণ করে শুরুর স্থানেই একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।

এসময় শিক্ষার্থীদের ‘সীমান্তে হত্যা কেন, জবাব চাই দিতে হবে’, ‘ভারতীয় আগ্রাসন, রুখে দিবে জনগণ’, ‘সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন, রুখে দিবে জনগণ’, ‘নদীর পানি ট্রানজিট গ্যাস, জবাব দিবে বাংলাদেশ’, ‘ভারতীয় প্রকল্প, চলবেনা চলবেনা’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায়।

সংক্ষিপ্ত সমাবেশে উদ্ভিদ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী জাহিদুল ইসলাম ইমন বলেন, বাংলাদেশের জন্ম থেকে এ পর্যন্ত সীমান্তে ভারত যত মানুষ হত্যা করেছে, পৃথিবীর ইতিহাসে যুদ্ধ ছাড়া আর কোথাও এতো মানুষ হত্যার শিকার হয়নি। আমরা স্বাধীনতার পর থেকেই এর প্রতিবাদ করে আসছি। যুগে যুগে এদেশে শাসক পাল্টেছে কিন্তু ভারতীয় শোষণ পাল্টেনি। আমরা সরকারকে বলতে চাই ভারতীয় আগ্রাসন বন্ধে উদ্যোগ না নিলে আমরা ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাও করবো।

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী সিফাত উল্লাহ বলেন, ভারত সবসময় বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের অধিকার নিয়ে সোচ্চার দেখায়। কিন্তু পরক্ষণেই আমরা দেখি দুইজনকে সীমান্তে হত্যা করেছে যারা হিন্দু ধর্মাবলম্বী। এর দ্বারা বুঝা যায় ভারত শুধু রাজনৈতিক স্বার্থে সংখ্যালঘুদের অধিকারের কথা বলে। তারা এদেশের সংখ্যালঘুদের সাথে নাই, তারা তাদের দেশের সংখ্যালঘুদের সাথেও নাই। তারা শুধুমাত্র দিল্লির স্বার্থেই এদেশের সংখ্যালঘুদের ব্যাবহার করে

গণিত বিভাগের শিক্ষার্থী আব্দুল হাই স্বপন বলেন, আমরা চাই সীমান্তে আর লাশ না পড়ুক। সীমান্তে যদি আর লাশ পড়ে তাহলে আমরা ভারতীয় হাইকমিশন ঘেরাও করব। উত্তরবঙ্গে প্রতিবছর যে বন্যা হয়, সেটা ভারতের সাথে থাকা অভিন্ন নদীরগুলোর পানির নায্য হিস্যা না থাকায়। দুই দেশের মধ্যে থাকা ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানির নায্য হিস্যা আমাদের বুঝিয়ে দিতে হবে। আর যেন সীমান্তে কোন হত্যা না হয়। অন্তবর্তী সরকার এর একটি স্থায়ী সমাধান করুক।

দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থী রিজন বলেন, আমরা কোন  আধিপত্যমূলক সম্পর্ক চাই না। আমরা চাই বন্ধুপূর্ণ সম্পর্ক। সীমান্তে যদি আর একটি লাশ পড়ে, আমরা চুপ করে বসে থাকব না।

সরকার ও রাজনীতি বিভাগের শিক্ষার্থী জিয়া উদ্দিন আয়ান বলেন, ফ্যাস্টিস্ট সরকারের সময়ে ভারতীয় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী সাতশ বাংলাদেশীকে সীমান্তে হত্যা করেছে। পৃথিবীর আর কোথাও এমন নজির নেই। নিরস্ত্র মানুষকে যেন আর সীমান্তে হত্যার শিকার না হতে হয়, আমরা তার সুষ্ঠু সমাধান চাই।

সমাপনী বক্তব্যে মার্কেটিং বিভাগের শিক্ষার্থী ইমরান শাহরিয়ার বলেন, ১৯৭১ সালের পরবর্তী সময় থেকে ভারতকে বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র হিসেবে মনে করে আসছি। কিন্তু তারা এর বিনিময়ে সীমান্তে লাশ, বন্যা ও খরা উপহার দিয়েছে। ভারত সরকারকে বলতে চাই, আপনারা আন্তর্জাতিক নদী আইন লঙ্ঘন করছেন। সীমান্তে যদি আর একবার গুলি চলে আমরা বসে থাকব না। নদীর পানির নায্য হিস্যা বুঝিয়ে দিন। সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসন চালাবেন না। আমরা যে আপনাদের বন্ধু মনে করছি, সে বন্ধুত্বের পরিচয় দিন।

আরবি/এস

Link copied!