ঢাকা মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪

জাবিতে গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের কমিটি ঘোষণা

নিউজ ডেস্ক

প্রকাশিত: অক্টোবর ২১, ২০২৪, ০৬:০৪ পিএম

জাবিতে গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলনের কমিটি ঘোষণা

ছবি : রূপালী বাংলাদেশ

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গণঅভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন নামে একটি কমিটি আত্মপ্রকাশ করেছে। কমিটিতে জাবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পদত্যাগকৃত সমন্বয়ক ও সহ-সমন্বয়কসহ বিভিন্ন সংগঠনের সদস্য রয়েছেন।

সোমবার (২১ অক্টোবর) বিকেল সাড়ে তিনটায় ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্রের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কমিটি ঘোষণা করা হয়।

ইমরান শাহরিয়ারের সঞ্চালনায় শুরুতেই তারা জুলাই গণঅভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণ করে তাদের বক্তব্য শুরু করেন।

বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, একটি রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা আমাদের কাঙ্খিত দ্বিতীয় স্বাধীনতা অর্জন করেছি। ৫-ই আগষ্ট গণ অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে পুরো জাতির বুকে জাগ্রত হয়েছিল একটি নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন, যে নতুন বাংলাদেশে কোন ফ্যাসিবাদী শক্তি থাকবেনা, যে বাংলাদেশে বৈষম্য ও নিপীড়ন থাকবেনা, যে বাংলাদেশে ন্যায় বিচারের নিশ্চয়তা থাকবে, যে বাংলাদেশে সাধারণ মানুষের জীবন ও জীবীকার নিরাপত্তা থাকবে এবং যে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলো হবে নিরাপদ ও উচ্চ শিক্ষার জন্য যথপোযুক্ত।

এ স্বপ্নকে সামনে রেখেই আপামর জনতা নব গঠিত অন্তর্বর্তীকালিন সরকারকে সমর্থন দেয়। কিন্তু বর্তমানে দেখতে পাচ্ছি, যে চেতনাকে লালন করে মানুষ এ সরকারকে সমর্থন দিয়েছিল, সে চেতনা এ সরকার লালন করতে পারছেনা। আমরা মনে করি, এ সংকট সরকারের আভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয় অংশীজন কর্তৃক সৃষ্ট। সরকারের অভ্যন্তরে ফ্যাসিবাদে দোসর ও সরকারের বাইরে ফ্যাসিবাদপন্থী শক্তি সরকারকে এই গণ অভ্যুত্থানের চেতনাকে সমুন্নত করতে বাধা প্রদান করছে। একই সাথে আমরা এ-ও মনে করি যে, বিভিন্ন বিষয়ে সরকারের নিজেরও সদিচ্ছার অভাব ও গাফলতি এ সংকটটিকে আরো বৃদ্ধি করেছে।

ফ্যাসিবাদী শক্তি পুনর্বাসিত হচ্ছে, নতুন বাংলাদেশে জন-মানুষের জীবন ও জীবীকার নিরাপত্তা দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে, যে সংস্কারগুলো আমরা আশা করছিলাম সেসব সাংবিধানিক-প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কারগুলোতে দীর্ঘসূত্রিতা দেখা দিচ্ছে, এমনকি রক্তার্জিত এই গণ অভ্যুত্থান ব্যর্থ হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে।

একই সংকট এই গণ অভ্যুত্থানের অন্যতম দুর্গ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও আমরা পরিলক্ষন করছি। আমরা দেখতে পাচ্ছি, গণ অভ্যুত্থানের পর এ বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীরা যে পরিবর্তন দেখতে চেয়েছিল তা হচ্ছেনা। যে সকল দাবি ও সংস্কার গুলোতে শিক্ষার্থীদের ঐক্যমত্য তৈরি হয়েছে, সেগুলোতেও প্রশাসনের সদিচ্ছার অভাব পরিলক্ষিত হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়েও ফ্যাসিবাদ উৎখাত ও গণ অভ্যুত্থানের চেতনা প্রতিষ্ঠা করার কাজে গাফলিত রয়েছে।

এ পরিস্থতিতে গণ অভ্যুত্থানকে এবং এর চেতনাকে রক্ষা ও প্রতিষ্ঠা করার জরুরিয়ত সৃষ্টি হয়েছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে পাচ্ছি বিভিন্ন মত ও পথের শিক্ষার্থীরা আলাদা আলাদাভাবে একই লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে। আমরা মনে করি, বৃহত্তর পরিবর্তনের জন্য স্বাতন্ত্র বজায় রেখে সম্মিলিত প্রচেষ্টা জরুরী। তারই অংশ হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের সোচ্চার ও সচেতন শিক্ষার্থীরা মিলে আমরা এই ‍‍`জুলাই অভ্যত্থান‍‍`-কে ও এর চেতনাকে রক্ষা ও প্রতিষ্ঠার জন্য ‍‍`সম্মিলিত গণ অভ্যুত্থান রক্ষা আন্দোলন‍‍` নামে একত্রিত হয়েছি। আমরা আমাদের সর্বশক্তি দিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে সহযোগিতা করব, এবং একই সাথে তার লাগামও টেনে ধরব। আমরা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণগত পরিবর্তনের জন্য প্রয়োজনে আবার রক্ত ঝরাবো এবং এ পরিবর্তনের বাধাদানকারী সকল শক্তিকে প্রতিহত করব।

আমাদের এই নতুন প্রচেষ্টাটিকে সংগঠিত করতে দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা হলেন-

১। আহবায়ক- আব্দুর রশিদ জিতু, ৪৭তম আবর্তন

২। সদস্য সচিব- ফাহমিদা ফাইজা, ৪৮তম আবর্তন

৩। মুখপাত্র- ইমরান শাহরিয়ার, ৪৬তম আবর্তন

৪। যুগ্ম আহবায়ক- রুদ্র মোহাম্মদ সফিউল্লাহ, ৪৭তম আবর্তন

 সকলকে জাতীয় ও ক্যাম্পাস পুনর্গঠনের এই কাজে যুক্ত হওয়ার উদাত্ত আহবান।

সংবাদ সম্মেলন শেষে তারা জানান, আমরা অন্তবর্তী সরকারকে সমর্থন করবো এবং পাশাপাশি তাদের গঠনমূলক সমালোচনা করে তাদের লাগাম টেনে ধরবো। আমাদের লক্ষ্য ক্যাম্পাসে গুণগত পরিবর্তনের জন্য কাজ করে যাওয়া।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!