ঢাকা শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর, ২০২৪

ঢাবি ও জাবিতে গণপিটুনির শিকার সাবেক ২ ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু

নিজস্ব প্রতিবেদক

প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১৯, ২০২৪, ০৩:৪৭ পিএম

ঢাবি ও জাবিতে গণপিটুনির শিকার সাবেক ২ ছাত্রলীগ নেতার মৃত্যু

ছবি, রূপালী বাংলাদেশ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন তোফাজ্জল। তিনি ছাত্রলীগের বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ছিলেন।  জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) গত ১৫ জুলাই সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী সাবেক ছাত্রলীগের নেতা শামীম গণি মোল্লাকে পিটিয়ে হত্যা করেছে একদল শিক্ষার্থী।

সাভারের গণস্বাস্থ্য সমাজভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বুধবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাতে তার মৃত্যু হয়। হাসপাতালে কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. সেলিমুজ্জামান সুজন এ তথ্য নিশ্চিত করেন।

ঢাবির ফজলুল হক মুসলিম হলে চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জল প্রেম ঘটিত ব্যাপারে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মানসিক ভারসাম্যহীন ছিলেন বলে জানাগেছে। বৃহস্পতিবার, বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী আরিফুজ্জামান তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়ে এ তথ্য জানান।

আরিফুজ্জামান লেখেন, তোফাজ্জল আমার জন্মস্থান বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার সন্তান। তোফাজ্জল পাথরঘাটা উপজেলার কাঠালতলী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি। এই ছেলেটি বেশ স্বজ্জন, পরোপকারী ও নেতৃত্বগুণ সম্পন্ন ছাত্রনেতা ছিল।

ব্যক্তিগত জীবনে প্রেমে মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় প্রথমে কিছুটা মানসিক ভারসাম্য হারায়। এরপর খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে তোফাজ্জলের মা, বাবা ও একমাত্র বড় ভাই মারা যান। তোফাজ্জল পরিবার ও অভিভাবক হারিয়ে পুরোপুরি মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ফেলেন।

ইমরান গণপিটুনিতে নিহত হয়েছেন তোফাজ্জল ইসুতে হতাশা প্রকাশ করে লেখেন, আহা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়!

বুধবার রাত আনুমানিক ৮ টায় তাকে আটক করে হলের শিক্ষার্থীরা। পরে রাত ২টার দিকে তার মৃত্যুর খবর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে।

একটি ভিডিও চিত্রে দেখা যায় এফএইচ হলের শাখা ছাত্রলীগের সাবেক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপসম্পাদক জালাল আহমেদসহ হলের ৮-১০ জন শিক্ষার্থী তোফাজ্জলকে মারধর করছেন।
এ ঘটনায় সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম জুড়ে সমালোচনার ঝড় উঠেছে।

এদিকে, চোর সন্দেহে গণপিটুনির এ বিষয়ে তদন্তের জন্য সাত সদস্যের একটি কমিটি গঠন করেছে হল প্রশাসন। বিষয়টি তদন্তের জন্য হলের আবাসিক শিক্ষক অধ্যাপক ড. আলমগীর কবীরকে আহ্বায়ক করে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সাধারণ শিক্ষার্থীদের উপর হামলাকারী সাবেক ছাত্রলীগের নেতা শামীম গণি মোল্লা বিষয়ে, ডা. সেলিমুজ্জামান বলেন, তাকে রাত সোয়া নয়টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আমরা পরীক্ষা করে জানতে পারি, উনি মারা গেছেন। মূলত উনি আগেই মারা গিয়েছিলেন। কী কারণে তাঁর মৃত্যু হয়েছে, তা ময়নাতদন্ত করে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

আশুলিয়া থানা-পুলিশের পরিদর্শক (তদন্ত) মো. কামাল হোসেনও শামীমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, 

বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রান্তিক গেট সংলগ্ন একটি দোকানে অবস্থান করছিলেন শামীম মোল্লা। তার অবস্থানের খবর পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী সেখানে গিয়ে তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়। পরে খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টরিয়াল টিম উপস্থিত হয়। এক পর্যায়ে নিরাপত্তা কর্মীদের সহায়তায় তাকে নিরাপত্তা শাখায় নিয়ে আসা হয়। সেখানেও উত্তেজিত শিক্ষার্থীরা তাকে পুনরায় গণধোলাই দেয়।

 

আরবি/এস

Link copied!