"অপ্রচলিত সবজিতেই সাশ্রয়ী খাদ্য-পুষ্টি নিরাপত্তার সম্ভাবনা"

বাকৃবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১০, ২০২৫, ০৬:১৩ পিএম

ছবি- রূপালী বাংলাদেশ

বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটে (বিনা) অপ্রচলিত ক্ষুদ্র ও দেশীয় ফসলের সম্ভাবনা নিয়ে এক গবেষণা অভিজ্ঞতা বিনিময় সেমিনারে বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির বলেন, আমার গবেষণা জীবনে প্রায় এক ডজন বিভিন্ন প্রকারের ফসল নিয়ে কাজ করেছি। দেশের মানুষের জন্য কিছু করার ইচ্ছা থেকেই আমার গবেষণাগুলো করা হয়েছে। খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তার বিকল্প ও সস্তা মাধ্যমে হিসেবে অপ্রচলিত সবজির উন্নয়নে কাজ করছি। 

সোমবার (১০ ফেব্রুয়ারি) বিকেল ৩ টায় বিনার সেমিনার রুমে অনুষ্ঠিত ওই সেমিনারে এমন কথা বলেন তিনি।

এ সময়ে তার গবেষণার বিভিন্ন প্রকারের দিক নিয়ে আলোচনা করেন অধ্যাপক। 

তিনি রঙিন চাল, সজিনা পাতা, কাসাভা, অড়হর, চুকুর ইত্যাদি ফসল নিয়ে তার গবেষণার অভিজ্ঞতা ও জনস্বাস্থ্য এর ব্যবহারবিধি উপস্থিত সকলের সামনে তুলে ধরেন।

তিনি বলেন, আমার পদ্ধতি হলো বাড়ির আশেপাশে, জমির আইলে, পতিত জায়গায় অপ্রচলিত কিন্তু পুষ্টিগুণ সম্পন্ন সবজিগুলোর চাষাবাদ করা। আমার এই পদ্ধতিতে কৃষক সর্বনিম্ন খরচে সর্বোচ্চ লাভবান হবে এবং দেশের মানুষও সুলভ মূল্যে খাদ্যে পুষ্টিগুণ ও নিরাপত্তা পাওয়া যাবে। এছাড়া এসব খাদ্য উপাদান দেশের পশুখাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টির ঘাটতি পূরণে ভূমিকা রাখবে।

ভবিষ্যতে অধ্যাপক ছোলায়মান সকল গবেষণা পুস্তক আকারে প্রকাশ কথাও জানান তিনি।

এসময় তরুণ গবেষকদের গবেষণাও এগিয়ে এছাড়া আহ্বান জানান তিনি। তারাই গবেষণাকে এগিয়ে নেবে ও সমৃদ্ধ করবে বলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

তিনি বিনার প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, দেশের মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে অপ্রচলিত ও অবহেলিত হলেও পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ উদ্ভিদ গ্রহণের বিকল্প নেই। এসব উদ্ভাবন সাধারণ মানুষ ও কৃষকের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে, যাতে কৃষি উন্নয়নের সুফল সবাই পায়।

এসময় সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিনার মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিনার মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ও গবেষণা সমন্বয়ক ড. মোঃ হোসেন আলী। অনুষ্ঠানের সভাপতিত্ব করেন বিনার প্রশিক্ষণ ও পরিকল্পনা পরিচালক ড. শরিফুল হক ভূঞা।

অনুষ্ঠানে মূল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের (বাকৃবি) ফসল উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ছোলায়মান আলী ফকির। তিনি খাদ্য, পশুখাদ্য ও কৃষি-শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে দেশীয় ফসলের গুরুত্ব তুলে ধরেন এবং বেশ কিছু অপ্রচলিত উদ্ভিদের বহুবিধ ব্যবহার নিয়ে প্রবন্ধ উপস্থাপনা করেন। বিশেষ করে রঙিন চাল, রোজেল, কাসাভা, সজিনা পাতার বহুবিধ ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করা হয়।

এসময় বিনার মহাপরিচালক ড. মো. আবুল কালাম আজাদ বলেন, অধ্যাপক ছোলায়মান আলী ফকির  স্যারকে কিভাবে ইউটিলাইজ করা যায় সে বিষয়ে আমরা কাজ করবো। প্রয়োজনে স্যারের সাথে আমরা সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) স্বাক্ষর করবো। তবে আমি বিনার বিজ্ঞানীদের বলবো জলজ আগাছা নিয়ে গবেষণা করা উচিত। কেননা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে সমুদ্র উপকূলবর্তী নিম্মাঞ্চল গুলো ডুবে যাবার সম্ভাবনা বিজ্ঞানীরা ধারণা করছেন, তখন ওই জলজ আগাছা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আমি আশা করি।

উল্লেখ্য, সেমিনারে গবেষক, বিজ্ঞানী ও কৃষি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।

রূপালী বাংলাদেশ

Link copied!