ঢাকা রবিবার, ০৯ মার্চ, ২০২৫

নিয়োগ বাতিলের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ

রাবি প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ৭, ২০২৫, ০৯:০৩ এএম
ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডহক নিয়োগ পদ্ধতি সংস্কার এবং অভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে নিয়োগপ্রাপ্ত চারজনের নিয়োগ বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেছেন ক্রিয়াশীল ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন মার্কেটের আমতলা চত্বর থেকে মিছিলটি শুরু হয়। ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ শামসুজ্জোহা চত্বরের পাশে এসে একটি সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হন তাঁরা। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে নিয়োগপ্রাপ্ত চারজনের নিয়োগ বাতিল না হলে প্রশাসন ভবনে তালা দেওয়ার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।  

সমাবেশে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সভাপতি শাকিল হোসেন, রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ খান আমান, ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক মেহেদী হাসান মারুফ ও সদস্য সচিব আল শাহরিয়ার শুভ, সমাজতান্ত্রিক ছাত্র ফ্রন্টের আহ্বায়ক ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সাবেক সমন্বয়ক ফুয়াদ রাতুল ও ছাত্র গণমঞ্চের আহ্বায়ক নাসিম সরকার। সমাবেশটি সঞ্চালনা করেন বিপ্লবী ছাত্র মৈত্রীর সাংগঠনিক সম্পাদক খন্দকার আল শাহরিয়ার। 

মেহেদী হাসান মারুফ বলেন, ‘গণঅভ্যুত্থান পরবর্তী সময়ে আমরা যেভাবে দেশকে বিনির্মাণ করতে চেয়েছিলাম, তা করতে আমরা ব্যর্থ হয়েছি। আমরা ভেবেছিলাম ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের এ বিষয়ে সুচিন্তা রয়েছে। কিন্তু আমরা দেখলাম অভ্যুত্থান পরবর্তীতে সমন্বয়করা ক্রেডিট বাণিজ্য লিপ্ত হয়েছে। তাঁরা একটা অংশকে একপাশে রেখে আগানোর চেষ্টা করছে। এ ছাড়া একটি সংগঠন ও তাঁদের আশেপাশের কয়েকজন অভ্যুত্থানকে পকেটে ভরার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা এতদিন চুপ ছিলাম শুধু বিভাজনের রাজনীতি চাইনি বলে। আমাদের এই নিশ্চুপ থাকায় সমন্বয়কদের বিভাগগুলোর শিক্ষকেরা বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদ বাগিয়ে নিয়েছেন। আমরা আজ স্পস্ট জানিয়ে দিচ্ছি বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন নিয়োগ বাণিজ্য আর চলবে না। সেইসঙ্গে সম্প্রতি অ্যাডহক ভিত্তিতে নিয়োগপ্রাপ্তদের নিয়োগ বাতিল করতে হবে।’

আমানুল্লাহ খান আমান বলেন, ‘উপাচার্য বলেছেন, যারা অ্যাডহক নিয়োগের বিরুদ্ধে কথা বলবে তাঁরা আইন জানেন না, বোঝেন না। উপাচার্যকে বলতে চাই যাদের বিরুদ্ধে কথা বলছেন তারা আপনার ছাত্র এবং আপনার সঙ্গেই রাজপথের আন্দোলনকারী। আপনি আমাদের এ জ্ঞানকে ছোট করে দেখতে পারেন না। গণঅভ্যুত্থানের পরে যে অ্যাক্ট উপাচার্যকে ফ্যাসিস্ট বানাতে পারে, সেই অ্যাক্ট থাকার কোনো যৌক্তিকতা নেই।’

উপাচার্যের সমালোচনা করে আমানুল্লাহ আরও বলেন, ‘আপনি (উপাচার্য) একজন নির্বাহী প্রধান। আইসিটি সেন্টারে যে দুইটা নিয়োগ হয়েছে, তাঁদেরকে আপনি কখনো দেখেননি বলে জানিয়েছেন। যার সম্পর্কে আপনি অবগত নন, তাঁকে কীভাবে নিয়োগ দেন?’   

প্রশাসন ভবনে তালা দেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়ে আল শাহরিয়ার শুভ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাডহক নিয়োগের আইন, এটা একক ক্ষমতার কারণে উপাচার্যকে স্বেচ্ছাচারী বানায়। সম্প্রতি উপাচার্য এই আইনে চারটি নিয়োগ দিয়েছেন। এরমধ্যে দুইটি নিয়োগ নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এসব নিয়োগ বাতিল করা নাহলে প্রশাসন ভবনে আমরা তালা লাগাতে বাধ্য হব।’