আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নারীদের অধিকার ও নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ এবং ধর্ষক ও নিপীড়নকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করা হয়েছে। আজ শনিবার (৮ মার্চ) বিকেল ৪টায় কর্মসূচিটি পালনে করে রাবি শাখা ছাত্র অধিকার পরিষদ।
কর্মসূচিতে `স্টপ অ্যাবিউস এগ্যাইনস্ট উইম্যান`, `নারীদের আর্তনাদ নয়, ন্যায়বিচারের আওয়াজ শুনতে হবে`, `এ রেপিস্ট ইস এ ক্রিমিনাল, নট এ ম্যান`, `ধর্ষনের বিচার নেই, সমাজ কি বোঝা? নাকি অন্ধ?`, `অধিকার সমতাও ক্ষমতায়ন, নারী ও ক্ষমতার উন্নয়ন` প্রভৃতি প্লাকার্ড প্রদর্শন করেন।
কর্মসূচিতে বাংলা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জেবা রাহাত তন্দ্রা বলেন, আমরা নতুন বাংলাদেশের কথা বলছি। কিন্তু এ দেশে নারী নির্যাতনকারীকে ধর্পোশাকধারী কিছু মানুষ গলায় মালা ও কোরআন শরীফ দিয়ে বরন করে নেয়। তাদের অপরাধের তুলনায় কোনো বিচার হয় না। এ ছাড়াও নারীদের ধর্মীয় বিভিন্ন নিয়ম-নীতির ফাকফোকর দিয়ে কক্ষে আটকানোর চেষ্টা চলে প্রতিনিয়ত। আমাদের এসবের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। বিচারের জন্য দাবি তুলতে হবে। অন্যথায় আমাদের আরও নির্যাতিত হতে হবে।
উর্দু বিভাগের শিক্ষার্থী আফরিনা আফরিন বলেন, ১৮৫৭ সালে নারীরা অধিকার আদায়ের জন্য রাজপথে নামলে তৎকালীন রাষ্ট্র তাদের ওপর নির্যাতন চালায়। এ নির্যাতন ক্রমবর্ধমানভাবে নারীর ওপর চলেছে। পরে ৮ মার্চকে নারি দিবস হিসেবে ঘোষণা হয়। এত কিছুর পরেও সমাজে নারীদের অবস্থানের উন্নতি হয়নি। এখনও নারীদের এমন ভাবে বেড়ে উঠতে হচ্ছে যেন নারীর চিন্তা ও বুদ্ধি লবনের কৌটায় সীমাবদ্ধ থাকে। ফলে, নারীরা আত্মপ্রত্যয়ী হতে পারছে না। আমি বিশ্বাস করি সমাজে কেউ নারী হয়ে কেউ জন্ম নেয় না। সমাজের আচরণ তাকে নারী হতে বাধ্য করে। এত কিছুর পরেও আশাবাদী সময় বদলেছে এবং এ অবস্থার উন্নতি হবে।
এ সময় ছাত্র অধিকার পরিষদের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান মারুফ বলেন, আজ আন্তজার্তিক নারী দিবস। আমরা আজ আলোচনার টেবিলে বসতে পারতাম, বলতে পারতাম নারীরা কী কী করেছে। কিন্তু আজ আমরা কী দেখতে পাচ্ছি? চব্বিশে নারী-পুরুষের একটা সম্মিলিত গণঅভ্যুত্থান গেলো। আর অভ্যত্থান পরবর্তী সময়ে কীভাবে সেই নারীদের ওপর দমন পীড়ন চলছে। বাসা, বাড়ি, গাড়িতে কীভাবে ধর্ষন করা হচ্ছে। কিন্তু দুঃখের বিষয় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আপনারা এখনও ধর্ষকদের গ্রেফতার করতে পারেননি। আমরা অন্তবর্তী সরকারকে বলে দিতে চাই আমাদের টাকায় বসে আপনাদের এসির বাতাস খাওয়ার জন্য আপনাদের নিয়োগ দেওয়া হয়নি। আপনারা যদি দায়িত্ব পালনে অপারগতা প্রকাশ করেন তাহলে সকলের কাছে ক্ষমা চেয়ে পদত্যাগ করে নেন।
মানববন্ধন কর্মসূচিতে ছাত্র অধিকার পরিষদের রাবি শাখার সদস্য সচিব আল শাহরিয়ার শুভর সঞ্চালনায় আরও বক্তব্য রাখেন রাকসু আন্দোলন মঞ্চের সদস্য সচিব আমানুল্লাহ খান আমান প্রমুখ।