ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

রাবি প্রতিনিধি

প্রকাশিত: মার্চ ৯, ২০২৫, ০৮:৫০ এএম

ধর্ষকদের শাস্তির দাবিতে রাবিতে বিক্ষোভ সমাবেশ

ছবি: রূপালী বাংলাদেশ

দেশব্যাপী চলমান ধর্ষণ প্রতিরোধ এবং ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তি কার্যকর করে জনসাধারণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে শিক্ষার্থীরা।

শনিবার (৮ মার্চ) সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জোহা চত্বর থেকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মেয়েদের হলগুলোর সামনে গেলে তারাও মিছিলে যোগ দেন।

বিক্ষোভ মিছিলটি রাত সাড়ে ৮টার দিকে জোহা চত্বরে এসে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশ শেষে আবার মিছিলটি পশ্চিম পাড়ায় মেয়েদের হল এলাকায় শেষ হয়।

এ সময় শিক্ষার্থীরা, ‘আমার বোন ধর্ষিত কেন, ইন্টেরিম জবাব চাই’, ‘আনার সেনার বাংলায় ধর্ষকদের ঠাঁই নাই’, ‘আমার বোনের কান্না, আর না আর না’, ‘ফাঁসি ফাঁসি ফাঁসি চাই, ধর্ষকের ফাঁসি চাই’, ‘ধর্ষকের দুই গালে জুতা মারো তালে তালে’, ‘একশান একশান ডাইরেক্ট একশান’ প্রভৃতি স্লোগান দেন।

সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মারের সঞ্চালনায় বক্তব্য দেন আরেক সমন্বয়ক মেহেদী সজীব, হিসাববিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা বিভাগের শিক্ষার্থী সাদিয়া আফরিন প্রমুখ।

সমাবেশে সাদিয়া আফরিন বলেন, ‘আমরা প্রত্যেকদিন ক্যাম্পাসের রিকশাওয়াল, শিক্ষকসহ বিভিন্ন লোকের দ্বারা বিভিন্নভাবে যৌননিপীড়নের স্বীকার হই। তারা আমাদের শরীর নিয়ে উল্টপাল্টা মন্তব্য করে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে প্রশ্ন যদি ক্যাম্পাসেই নিরাপদ না থাকতে পারি তাহলে রাস্তায় কিভাবে নিরাপদ থাকবো। কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্টের তনু থেকে শুরু করে আছিয়া পর্যন্ত কোনো ধর্ষণের বিচার আমরা পাইনি। আইন উপদেষ্টাকে বলতে চাই, আপনি যদি ধর্ষকদের উপযুক্ত বিচার করতে না পারেন তাহলে ধর্ষককে জনগণের হাতে তুলে দেন। আমার মায়েরা-বোনেরা ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করবে। অন্তর্বর্তী সরকারকে বলবো আপনারা ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করতে না পারলে পদত্যাগ করুন। ক্ষমতা জনগণের হাতে ছেড়ে দিন জনগণ ধর্ষকের শাস্তি নিশ্চিত করবে।’

সমন্বয়ক সালাহউদ্দিন আম্মার বলেন, ‘এই স্বাধীন দেশে মনের পশুত্ব লালনকারী ধর্ষকদের প্রকাশ্যে ফাঁসিতে ঝুলানোর দাবি জানাই। বিভিন্ন নেতারা বলছেন তারা নিরাপত্তা পাচ্ছেন না। আপনারা আগে জনগণের নিরাপত্তা দিতে শিখুন। এখন দেশের সবচেয়ে বড় প্রয়োজন আমাদের বোনদের নিরাপত্তা।’

তিনি আরও বলেন, ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন শিক্ষার্থী ধর্ষক আছে, বিভিন্ন শিক্ষক ধর্ষক আছে। ইনকোর্স দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে, ভালো মার্ক দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে দিনের পর দিন নারী শিক্ষার্থীদের উত্যক্ত করে যাচ্ছে। বোনদেরকে বলছি সর্বপ্রথম প্রতিবাদটা আপনাদের মধ্যে থেকেই উঠে আসুক। কোন শিক্ষক টিচ করেছে, কোন শিক্ষক নগ্ন ম্যাসেজ পাঠিয়েছে তার বিচার রাবির মাটিতে ত্রিশ হাজার শিক্ষার্থী মিলে করবে। আমরা সর্বপ্রথম এই রাবিকে ধর্ষকমুক্ত করবো ইনশাআল্লাহ।’

মেহেদী সজীব বলেন, ‘দেশকে অস্থিতিশীল করার জন্য পরিকল্পিতভাবে নির্যাতন চালানো হচ্ছে। এই নির্যাতনের হাত থেকে আমার ছোটবোন আছিয়া রেহাই পায়নি। নতুন বাংলাদেশে অন্তর্বর্তী সরকারকে বলতে চাই যদি আপনারা এই দেশের জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন, আমার বোনদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারেন, তাহলে এদেশ শাসন করার অধিকার আপনারা হারিয়ে ফেলেছেন। বিগত জুলাই অভ্যুত্থানে যদি এই মেয়েরা অংশগ্রহণ না করতো তাহলে কখনো স্বৈরাচার হাসিনা সরকারকে বিতাড়িত করা সম্ভব হতো নয়। আপনারা যদি এদেশের শাসন কার্যক্রম পরিচালনা করতে চান তাহলে অতিদ্রুত ধর্ষকদের শাস্তি নিশ্চিত করুন। এদেশে ধর্ষকদের জন্য যে বিধান রয়েছে তা কার্যকর করুন।

প্রসঙ্গত, বিগত কয়েকদিনে দেশের বিভিন্ন স্থানে লাগাতার ধর্ষণের ঘটনা দেশব্যাপী ব্যাপক সমালোচনা সৃষ্টি করেছে।

আরবি/এসআর

Link copied!