দেশব্যাপী চলমান ধর্ষণ ও শ্লীলতাহানির প্রতিবাদ ও ধর্ষকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) অন্তত ১৫টি বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করেছেন। শনিবার দিবাগত রাত থেকে তারা এই ঘোষণা দেন।
বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সূত্রে জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের এগ্রনোমী অ্যান্ড এগ্রিকালচারাল এক্সটেনশন, ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ, উদ্ভিদবিজ্ঞান, হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য ব্যবস্থাপনা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা, ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি, ফারসি ভাষা ও সাহিত্য, নৃবিজ্ঞান, ব্যাংকিং অ্যান্ড ইনসুরেন্স, আরবি, ইসলামিক স্টাডিজ, ইংরেজি, বাংলাসহ বিভিন্ন বিভাগের একাধিক সেশনের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দেন।
এ বিষয়ে ফারসি ভাষা ও সাহিত্য বিভাগের শিক্ষার্থী ওয়াজিদ শিশির অভি বলেন, আমরা মনে করি যে দেশে নিরাপত্তাহীনতার অভাবে যে অরাজকতা সৃষ্টি হয়েছে তার অবসান হওয়া উচিত। প্রত্যেকটা ধর্ষকের যেন সর্বোচ্চ শাস্তির আওতায় আনা হয় এবং প্রত্যকটা ক্যাম্পাস ও মহল্লায় যেন যৌননিপীড়ন বিরোধী সেল গঠন করা হয়। এসবের দ্রুত সুরাহার জন্য স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার কাছে দাবি জানাই। আর যতদিন না এসবের সুরাহা না হবে ততদিন পর্যন্ত আমরা ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করব।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থী সিদ্দিকুর রহমান খান বলেন, দেশে ধর্ষণ, নারীর প্রতি সহিংসতা, প্রকাশ্য দিবালোকে খুন, ডাকাতির মতো ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ধর্ষকের হাত থেকে বাদ যাচ্ছে না অবুঝ শিশু থেকে বৃদ্ধা কেউই।
সম্প্রতি মাগুরার আট বছরের এক শিশু বোনের বাড়িতে ধর্ষণ হয়েছে। শিশুটি জীবনের সাথে পাঞ্জা লড়ছে। এদিকে লক্ষীপুরের রামগতিতে ১৬ বছরের এক বোন ধর্ষণের বিচার তো পেলোই না বরং সমাজ তাকে সালিশ বসিয়ে অপমান করলো। ফলে সে বেছে নিলো আত্মহত্যার পথ। সব মিলিয়ে দেশে এক বিশৃঙ্খল অবস্থা বিরাজ করছে বলে মনে করছি এবং রাষ্ট্র এ অবস্থা দমনে বরাবরই ব্যর্থতার পরিচয় দিচ্ছে। তাই আমরা গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করে রাস্তায় এসে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছি।
তিনি আরও বলেন, এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। আপাতত আমরা একদিনের জন্য ক্লাস-পরীক্ষা বর্জন করেছি। তবে পরিস্থিতি উন্নতির আভাস না পেলে আরো কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবো।