কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক কাজী এম আনিছুল ইসলামের বিরুদ্ধে প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ উঠেছে। এ বিষয়ে তদন্তের জন্য পাঁচ সদস্যের একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে।
তদন্ত চলাকালীন আনিছুল ইসলামকে কোনো ধরনের একাডেমিক কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করতে বা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করতে নিষেধ করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হায়দার আলী গতকাল বুধবার রাতে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক জাকির ছায়াদুল্লাহ এবং সদস্যসচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক নুরুল করিম চৌধুরী। জাকির ছায়াদুল্লাহ জানিয়েছেন, তিনি ইতোমধ্যে চিঠি পেয়েছেন এবং পুরো বিষয়টি বিস্তারিত জানার পর তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবেন। আগামী সপ্তাহে কমিটির একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে এবং দ্রুততম সময়ের মধ্যে তদন্ত শেষ করার চেষ্টা করা হবে।
উপাচার্য হায়দার আলী জানান, তদন্ত চলাকালীন আনিছুল ইসলামকে সব ধরনের একাডেমিক কাজ থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাঁকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানো হতে পারে। তদন্ত কমিটিকে যত দ্রুত সম্ভব প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, সহ-উপাচার্য, কোষাধ্যক্ষ, প্রক্টর, পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক দপ্তর ও কয়েকজন সাংবাদিকের কাছে একটি বেনামি ই-মেইল পাঠানো হয়। এতে অভিযোগ করা হয় যে, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের ১৫তম ব্যাচের সেমিস্টার পরীক্ষার প্রতিটি কোর্সের প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে। ই-মেইলে দাবি করা হয়, বিভাগের শিক্ষক কাজী আনিছ একজন নারী শিক্ষার্থীকে এসব প্রশ্নপত্র সরবরাহ করেছেন। এ-সংক্রান্ত কিছু পরীক্ষার প্রশ্ন ও উত্তরসহ পিডিএফ ফাইলও ই-মেইলের সঙ্গে সংযুক্ত ছিল।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৃতীয় বর্ষের দ্বিতীয় সেমিস্টার ফাইনাল পরীক্ষা শুরু হয়। ৩ ও ৬ মার্চ দুটি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় এবং ১৩ মার্চ সর্বশেষ পরীক্ষার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে ওই ই-মেইল পাওয়ার পর ১৩ মার্চের পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে আনিছুল ইসলাম গতকাল সন্ধ্যায় জানান, এসব অভিযোগ সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন ও বানোয়াট। তিনি শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সময় প্রশ্ন সম্পর্কে ধারণা দেন এবং নোট সরবরাহ করেন। এটি কাজে লাগিয়ে কেউ তাঁর বিরুদ্ধে বেনামি ই-মেইলের মাধ্যমে অভিযোগ করেছে।
গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান মাহমুদুল হাসান জানান, উদ্ভূত পরিস্থিতির কারণে পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছে এবং বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা হচ্ছে। তদন্ত শেষ হলে প্রকৃত সত্য উদঘাটিত হবে।
আপনার মতামত লিখুন :